Published : 08 Dec 2022, 08:03 PM
মানবাকৃতির রোবট নির্মাণের প্রযুক্তি ও সক্ষমতা দুটোই আছে; কিন্তু সে প্রযুক্তি ব্যবহারের সঠিক ক্ষেত্র খুঁজে পাচ্ছে না জাপানের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট সনি।
মঙ্গলবারেই কোম্পানিটি বলেছে, ব্যবহারের সঠিক জায়গা চিহ্নিত করতে পারলে দ্রুত এ ধরনের রোবটের বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার সক্ষমতা আছে তাদের।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সনির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা হিরোআকি কিতানো বলেছেন, “প্রযুক্তির হিসেব করলে, ব্যবহার উপযোগী প্রতিশ্রুতিশীল ক্ষেত্রটি স্পষ্ট হলে দ্রুত নির্মাণের জন্য এই কোম্পানিসহ পৃথিবীর বেশ কয়েকটি কোম্পানির কাছে যথেষ্ট প্রযুক্তি জমা আছে।”
“আমরা তখনই (উৎপাদন খাতে) বিনিয়োগে যাবো যখন মনে হবে এমন বিনিয়োগের প্রয়োজন আছে। মানবাকৃতির রোবটে সম্ভাবনা দেখছি। কিন্তু অন্য ধরনের রোবটকেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে করি আমরা।”
দুই দশক আগেই ‘আইবো’ নামের রোবট কুকুর বানিয়েছিল সনি। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে দেড় লাখ ‘আইবো’ বিক্রি করেছিল কোম্পানিটি। ২০১৮ সালে আইবোর একটি নতুন সংষ্করণ উন্মোচন করেছে সনি; উন্মোচনের পর প্রথম ছয় মাসেই ২০ হাজার নতুন আইবো বিক্রি হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই মানবাকৃতি রোবট প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে হন্ডা মোটর কর্পোরেশন এবং হিউন্দাই মোটর কর্পোরেশনের মতো কোম্পানিগুলো।
সেপ্টেম্বর মাসে নিজস্ব মানবাকৃতির রোবট ‘অপটিমাস’-এর প্রোটোটাইপ দেখিয়েছেন ইলন মাস্ক। বিশ্বব্যাপী কয়েক লাখ অপটিমাস ছড়িয়ে দিতে চান টেসলা প্রধান। উৎপাদন কারখানায়ও ব্যাপক হারে রোবট ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন তিনি।
অন্যদিকে কিতানোর মতে, অডিও-ভিজুয়াল প্রযুক্তি খাতে সক্ষমতা ও অভিজ্ঞতার উপর ভর করে হালের আলোচিত মেটাভার্স ভাবনানির্ভর প্রযুক্তি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য সঠিক অবস্থানেই আছে সনি।
বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতে মেটাভার্স এখনও একটি তুলনামূলক নতুন ভাবনা। ভবিষ্যতে এই ভার্চুয়াল জগতেই মানুষ দিনের বেশি সময় দেবেন বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন এর সমর্থকরা। রয়টার্স লিখেছে, মেটাভার্স ভাবনা হিসেবে নবীন হলেও শিল্পখাতে আলোচনার জন্ম দিচ্ছে এটি।
আর এই উদীয়মান প্রযুক্তি নিয়ে কিতানোর মত, “মেটাভার্সের কথা বলতে গেলে, বিষয়টা তো এমন নয় যে, আপনি একটা ভেনু বানালেই সেখানে মানুষ আসতে শুরু করবে। মেটাভার্স টিকে থাকবে না বিলুপ্ত হবে, সেটা নির্ভর করে কনটেন্টের ওপর।”
মঙ্গলবারেই সংবাদকর্মীদের কিতানো বলেছেন, ব্যবসা প্রসারণের খাত হিসেবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এবং ডিজিটাল ভার্চুয়াল স্পেসকে কারিগরি অগ্রগতির কেন্দ্রে রেখে গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি ও সক্ষমতা বাড়াবে সনি।
“একই সুতোয় গাঁথা সেন্সর, এআই এবং ভার্চুয়াল স্পেস আমাদের প্রযুক্তির কেন্দ্রে আছে এবং আমাদের সবচেয়ে বড় সক্ষমতাও হবে এটি,” সংবাদকর্মীদের বলেছেন কিতানো।
ইতোমধ্যেই স্মার্টফোন বাজারে সনির তৈরি ক্যামেরা সেন্সরের বহুল প্রচলন আছে। আর সাম্প্রতিক বছরগুলোর গাড়ি নির্মাতারা স্বচালনা প্রযুক্তি এবং যানবাহনের দুর্ঘটনা কমানোর প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকতে থাকায় এ খাতেও সনি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তি সরবরাহকারী হয়ে উঠছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।