Published : 02 Jun 2025, 03:15 PM
মেটার বেশিরভাগ পণ্য ও ফিচারে ক্ষতির ঝুঁকি যাচাইয়ের কাজ মানুষের বদলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়েই করতে চায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্টটি।
আমেরিকান সংবাদমাধ্যম এনপিআর প্রতিবেদনে লিখেছে, নিজেদের পণ্যের সম্ভাব্য ক্ষতি মূল্যায়নের দায়িত্ব মানুষের বদলে এআইয়ের ওপর দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে মেটা। যাতে এ প্রক্রিয়ার জন্য সময় কমিয়ে আনা যায়।
মেটার অভ্যন্তরীণ নথিতে উঠে এসেছে, ঝুঁকি মূল্যায়নের কাজ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত এআইয়ের ওপর বর্তাতে চায় তারা। শিশু ও টিনএজারদের জন্য ঝুঁকি ও সহিংস কনটেন্ট বিশেষ করে ভুল তথ্য ছড়ানোসহ ‘ইনটিগ্রিটি’ সম্পর্কিত নানা বিষয়েও এআই ব্যবহারের চিন্তা করছে মেটা।
এনপিআর’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বর্তমান ও সাবেক কিছু মেটা কর্মী সতর্ক করে বলেছেন, এ পদ্ধতিতে এআই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকি চিনে উঠতে ব্যর্থ হতে পারে, যেগুলো মানুষ সহজেই ধরতে পারত।
ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো মেটার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের নতুন ফিচার ও আপডেটগুলো আগে মানুষের মাধ্যমে পর্যালোচিত হত এবং তারপরই সেগুলো সবাইকে ব্যবহার করতে দিত কোম্পানিটি।
তবে এনপিআর-এর প্রতিবেদন অনুসারে, গত দুই মাসে এই কাজে এআই ব্যবহারে আরও জোর দিয়েছে মেটা। এখন যে কোনও নতুন ফিচার চালুর আগে মেটার টিমকে একটি ফর্ম পূরণ করে এআইকে দিতে হচ্ছে। এআই তাতে দ্রুত জানিয়ে দেয়, ফিচারটিতে কী কী সমস্যা বা ঝুঁকি থাকতে পারে। এরপর সেইসব ঝুঁকি ঠিক করতে যা যা দরকার তা সংশ্লিষ্ট টিমকে পূরণ করতে হয়। আর তারপরই সেই ফিচার বা পণ্য বাজারে আনে মেটা।
মেটার এক সাবেক নির্বাহী এনপিআর-কে বলেছেন, মানুষের মাধ্যমে পর্যালোচনা কমানোর মানে হচ্ছে আরও বেশি ঝুঁকি তৈরি হওয়া। কারণ, এক্ষেত্রে কোনো পণ্যে পরিবর্তন আনার ফলে যেসব সমস্যা হতে পারে সেগুলো ঠেকানো শুরুতেই কঠিন হয়ে পড়বে।
তবে এক বিবৃতিতে মেটা বলেছে, এখনও জটিল ও নতুন বিভিন্ন সমস্যার জন্য মানুষের অভিজ্ঞতার ওপর ভরসা করবে তারা। কেবল কম ঝুঁকির বিভিন্ন সিদ্ধান্তই এআইয়ের মাধ্যমে নেবে কোম্পানিটি।
মেটার সর্বশেষ ত্রৈমাসিক ‘ইনটিগ্রিটি রিপোর্ট’ প্রকাশের কয়েকদিন পরই এমন খবর এল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেট। এ বছরের শুরুতে কনটেন্ট মডারেশন ও ফ্যাক্ট-চেকিং নীতিতে পরিবর্তন আনার পর এটিই মেটার প্রথম কোনো নতুন সিদ্ধান্তের খবর।
প্রতিবেদনে অনুসারে, মেটার নতুন নীতির পর কনটেন্ট সরানোর পরিমাণ কমেছে, যেটা স্বাভাবিক। তবে এর পাশাপাশি কিছুটা বেড়েছে অনলাইন বুলিয়িং, হয়রানি আর সহিংস ছবি ও ভিডিওর সংখ্যা।