Published : 10 Jun 2025, 11:40 AM
এক দশকের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত হ্যান্ডহেল্ড গেইম কনসোল উন্মোচন করল মার্কিন সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটের এক্সবক্স।
‘আরওজি এক্সবক্স অ্যালি’ নামের কনসোলটি গেইমারদেরকে চলাফেরার সময়েও তাদের ‘গেইম পাস’ সাবস্ক্রিপশনের গেইম লাইব্রেরি ব্যবহার করতে দেবে, অর্থাৎ সদস্যরা শুরুতেই শত শত গেইমে প্রবেশাধিকার পাবেন বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
এজন্য আসুস-এর সঙ্গে পার্টনারশিপ তৈরি করেছে মাইক্রোসফট। ২০২৩ সাল থেকে হ্যান্ডহেল্ড গেইমিং ডিভাইস তৈরি করে আসছে আসুস। ২০২৫ সালের শেষ দিকে বাজারে আসবে কনসোলটি। তবে এর দাম এখনও জানা যায়নি।
মাইক্রোসফট হ্যান্ডহেল্ড গেইম কনসোল তৈরি করতে পারে– এই নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। এ সময়ের মধ্যে একাধিকবার কনসোল আনার চেষ্টা করলেও নানা কারণে সেগুলো বাতিলও করেছে কোম্পানিটি।
নিনটেনডো’র পরবর্তী প্রজন্মের গেইমিং কনসোল ‘সুইচ ২’ বাজারে আসার কেবল তিনদিন পরই মাইক্রোসফটের এ কনসোল উন্মোচনের ঘোষণা এল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি।
আগের সংস্করণের মতোই ‘সুইচ ২’ একটি হাইব্রিড গেইমিং ডিভাইস, অর্থাৎ এর মাধ্যমে চলতে ফিরতেও গেইম খেলা যায়। আবার চাইলে টিভির সঙ্গে যুক্ত করেও খেলতে পারবেন গেইমাররা।
সুইচ-এর সাফল্য সম্ভবত ‘ভালভ’ কোম্পানিকে অনুপ্রাণিত করেছে ‘স্টিম ডেক’-এর নকশা তৈরি করতে, যা হাতে নেওয়া যায় এমন এক কম্পিউটার বা পিসি।
ডিভাইসটি দিয়ে ‘স্টিম’ নামের গেইম ডিস্ট্রিবিউশন সার্ভিস থেকে কেনা প্রায় সব গেইম খেলতে পারেন গেইমাররা। তবে মনে রাখতে হবে, সব গেইম এই ডিভাইসে ঠিকমতো কাজ করবে না।
বিবিসি লিখেছে, এর মানে মাইক্রোসফটকে ‘কিছুটা দেরিতে মাঠে নামা খেলোয়াড়’ বলে সমালোচনা করা যেতে পারে। কারণ, এরইমধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীরা এ ক্ষেত্রে বাজারে রয়েছে। তবে কোম্পানিটির নিজস্ব ‘গেইম পাস’ সেবা ডিভাইসে সরাসরি চলবে, যার বর্তমানে তিন কোটি ৪০ লাখ গ্রাহক আছে। এতে ব্যবহারকারীদের অনেক উদ্বেগ বা সমস্যা দূর হতে পারে।
দুটি সংস্করণ
‘আরওজি এক্সবক্স অ্যালি’ ও ‘আরওজি এক্সবক্স অ্যালি এক্স’ নামের দুটি সংস্করণে বাজারে আসবে মাইক্রোসফটের নতুন হ্যান্ডহেল্ড গেইম কনসোল।
এক্সবক্স-এর গেইমিং ডিভাইস বিভাগের প্রধান রোআনে সোনেস বলেছেন, “আপনি ঘরে থাকুন বা বাইরে, আপনার প্রিয় গেইম চলতে চলতেই খেলতে পারবেন।
“দুটি সংস্করণের হ্যান্ডহেল্ড কনসোলেই সরাসরি ডিভাইসে, ক্লাউডের মাধ্যমে বা অন্য কোনো রুমে থাকা তাদের এক্সবক্স কনসোলের সঙ্গে দূর থেকেই গেইম খেলতে পারবেন গেইমাররা।”
দুটি সংস্করণের কনসোলেই রয়েছে ৭ ইঞ্চির স্ক্রিন, যার রেজুলিউশন ১০৮০পি। কনসোলের মূল সংস্করণে ১৬ জিবি মেমরি ও ৫১২ জিবি স্টোরেজ থাকবে। আর ‘এক্স’ সংস্করণে রয়েছে ২৪ জিবি মেমরি ও দ্বিগুণ স্টোরেজ। এ সংস্করণে রয়েছে বড় ব্যাটারি এবং শক্তিশালী প্রসেসর।
মাইক্রোসফট চাইছে তাদের নতুন গেইমিং কনসোল দুটিতে এমন কিছু সুবিধা থাকুক, যা অন্য গেইমিং কোম্পানি দিতে পারবে না। এখানে কোম্পানিটির নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করছে তারা, যার কারণে এগুলো আরও ভালো কাজ ও মাইক্রোসফটের অন্যান্য সেবা যেমন ‘গেইম পাস’-এর সঙ্গে ভালো সমন্বয় করবে।
রোআনে সোনেস বলেছেন, “এসব কনসোল উইন্ডোজে চলার কারণে আপনি এমন গেইম খেলতে পারবেন, যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। তাই আপনি পিসি গেইমিংয়ের পুরো স্বাধীনতা ও বহুমুখিতা উপভোগ করতে পারবেন।”
গেইমাররা এক্সবক্স অ্যাপ ছেড়ে ডিভাইস থেকে সরাসরি অন্য গেইমিং প্ল্যাটফর্ম যেমন ‘স্টিম’ ও ‘ইএ প্লে’ চালাতে পারবেন। তবে এত সব সক্ষমতার পরও ডিভাইসটির ওজন একটু বেশিই হবে।
কনসোলের মূল সংস্করণের ওজন ৬৭০ গ্রাম ও ‘এক্স’ সংস্করণের ওজন ৭১৫ গ্রাম, যা গেইমারদের জন্য কিছুটা ভারী হতে পারে। এর তুলনায় নিনটেনডো’র নতুন ‘সুইচ ২’ কনসোলের ওজন অনেক কম, কেবল ৫৩৪ গ্রাম।
এখনও একটি বড় প্রশ্ন রয়েছে, কনসোল দুটির দাম কত হবে? মাইক্রোসফট এখনও তাদের নতুন কনসোলের দাম প্রকাশ করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ‘এক্স’ সংস্করণের কনসোলটির দাম অবশ্যই বেশি হবে।