Published : 11 May 2025, 06:21 PM
চাঁদের জন্য জিপিএস-এর মতো ন্যাভিগেশন সিস্টেম উন্মোচন করেছে স্প্যানিশ প্রযুক্তি কোম্পানি জিএমভি।
এর মাধ্যমে চাঁদ অভিযানের দিকনির্দেশনা এমন সহজ করে তোলা হচ্ছে কোম্পানিটির লক্ষ্য, যেমন গুগল ম্যাপস-এর মতো অ্যাপ ব্যবহার করে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে গাড়ি চালান চালকরা।
লুপিন নামে পরিচিত প্রকল্পটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা, সম্ভাব্য খনির সুযোগ বা এমনকি ভবিষ্যতের পর্যটনের জন্য চন্দ্র পৃষ্ঠের অনুসন্ধানে আগ্রহ বাড়ার সাথে সাথে নতুন অবস্থান, ন্যাভিগেশন এবং সময় কৌশল পরীক্ষা করার জন্য ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির একটি প্রোগ্রামের অংশ।
লুপিন নামে পরিচিত এ প্রকল্পটি ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি বা ইএসএ-এর একটি প্রোগ্রামের অংশ, যেখানে নতুন অবস্থান নির্ধারণ, ন্যাভিগেশন ও সময় নিরূপণ প্রযুক্তি পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।
চাঁদের পৃষ্ঠে অনুসন্ধান নিয়ে আগ্রহ আবার বেড়ে যাওয়ায় বৈজ্ঞানিক গবেষণা, সম্ভাব্য খনিজ আহরণ বা ভবিষ্যতে পর্যটনের জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি।
প্রকল্পটির পরিচালক স্টিভেন কে বলেছেন, “এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে আমরা চাঁদে মানুষের উপস্থিতি প্রতিষ্ঠার আরও কাছে নিয়ে যাচ্ছি ইউরোপকে। এটি মঙ্গলে অভিযান বা মানুষের বসতি স্থাপনের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ হতে পারে।”
নতুন এ প্রযুক্তির পরীক্ষা চালানো হয়েছে আফ্রিকার পশ্চিমে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ ‘ফুয়ের্তেভেনচুরা’-এর অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্যে, যেখানে পৃথিবীর এমন একটি অংশে জিএমভি তাদের প্রোটোটাইপের মাঠপর্যায়ের পরীক্ষা চালিয়েছে, যার ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য কিছুটা চাঁদের পৃষ্ঠের সঙ্গে মেলে।
রয়টার্স লিখেছে, চাঁদের কক্ষপথে ঘোরাঘুরি করা এসব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে জিপিএস-এর মতো সংকেত ব্যবহার করে চাঁদের পৃষ্ঠে থাকা রোভার ও মহাকাশচারীদের তাদের অবস্থান নির্ধারণ করতে সাহায্য করবে লুপিন।
বর্তমানে চাঁদে দিক ঠিক করে চলার বিষয়টি খুবই কঠিন। কারণ, চাঁদের পৃষ্ঠে থাকা বিভিন্ন মহাকাশযানকে পৃথিবী থেকে পাঠানো তথ্য আর জটিল হিসাবের ওপর ভরসা করতে হয়, যেটা একেবারেই দ্রুত নয়, আবার খুব সঠিকও নয়।
এক বিবৃতিতে জিএমভি বলেছে, “চাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হলে পৃথিবীকে সরাসরি দেখতে পাওয়া লাগে বা চাঁদের কক্ষপথে থাকা রিলে স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে হয়। এতে অনেক সময় কিছু অংশে সিগন্যাল পৌঁছে না। ফলে যোগাযোগে দেরি হয়, যা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাধার তৈরি করে।”
চাঁদের পৃষ্ঠে সাম্প্রতিক আঘাত বা ধুলার চলাচলের কারণে যে পরিবর্তন হয়, তার খবর যদি দ্রুত না পাওয়া যায়, তাহলে চাঁদে চলাচল করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে।
কোম্পানিটি চাঁদের মানচিত্রের সঙ্গে চাঁদের কক্ষপথে ঘোরানো স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া তথ্য একসঙ্গে করতে চায়, যাতে তারা উপগ্রহটির অন্ধকার বিভিন্ন অংশের ওপর লক্ষ্য রাখতে পারে। যেমন চাঁদের দক্ষিণ মেরু বা ‘ফার সাইড’, যেটি সাধারণত ছায়ায় ঢেকে থাকে।
জিএমভি-এর কৌশল প্রধান মারিয়েলা গ্রাজিয়ানো বলেছেন, “আমরা চাই এসব রোভার যেন চাঁদের পৃষ্ঠে দ্রুত ও নিরাপদে ম্যাপ করতে পারে। যাতে মহাকাশচারীরা কয়েক বছরের মধ্যে সেখানে কাজ করতে ও স্থায়ী ঘাঁটি বসাতে পারেন।”