Published : 19 Jun 2025, 02:19 PM
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ও ইসরায়েলের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া উত্তেজক পোস্টের সঙ্গে নাম আসায় পেন্টাগন তাদের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে।
এ নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্তও শুরু হয়েছে বলে পেন্টাগনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদোলু।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টকে ঘিরে এ বিতর্কের কেন্দ্রে যার নাম এসেছে, সেই কর্নেল নাথান ম্যাককরমাক মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের জে-ফাইভ স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং ডিরেক্টরেটে লেভান্ত ও মিশর শাখার প্রধানের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
মঙ্গলবার জুইশ নিউজ সিন্ডিকেট (জেএনএস) একটি এক্স অ্যকাউন্ট নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তড়িঘড়ি তাকে বরখাস্ত করা হয়।
আংশিক ছদ্মনামে পরিচালিত ওই এক্স অ্যাকাউন্টটি ম্যাককরমাকেরই বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই অ্যাকাউন্ট থেকে ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সবচেয়ে বাজে মিত্র’ অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
পরে পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা জেএনএসকে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে তদন্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি (ম্যাককরমাক) জয়েন্ট স্টাফে থাকছেন না।”
ওই অ্যাকাউন্টের বিষয়বস্তু এবং এর প্রভাব খতিয়ে দেখতে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছে, জানিয়েছেন তিনি।
যেসব পোস্ট ঘিরে বিতর্ক সেগুলোর মধ্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনাও আছে।
এ নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে জেএনএস, পরে মিডল ইস্ট আই-ও বিস্তারিত লেখে। এরপর থেকে ওই পোস্টগুলো আর্কাইভে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ম্যাককরমাক ওই পোস্টগুলোতে নেতানিয়াহু ও তার মিত্রদের ‘ইহুদি-শ্রেষ্ঠত্ববাদী দুষ্টচক্র’ হিসেবে অভিহিত করে এরা ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দিয়ে ‘এরেটজ ইসরায়েল’ (ইহুদিদের ঐতিহাসিব ভূমি) থেকে জাতিগত ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন।
“ঠিকমতো জানে না এমন কারও কাছ থেকে এ ধরনের তিক্ত আলাপ-আলোচনা প্রত্যাশা করা যায়। কিন্তু তার যে অবস্থান, নিজের নামে তিনি এসব বলছেন? এটা অবিশ্বাস্য,” মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তিভিত্তিক এক কর্মী এমনটা বলেছেন বলে জানিয়েছে জেএনএস।
পেন্টাগন পরে জানিয়েছে, পোস্টগুলোতে জয়েন্ট স্টাফ বা মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন নেই।
“আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক মৈত্রী ও অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,” বলেছে তারা।
ম্যাককরমাকের লিংকডন প্রোফাইল অনুযায়ী, তিনি জে-ফাইভ স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং ডিরেক্টরেটে লেভান্ত ও মিশর শাখার প্রধানের পদে আসেন গত বছরের জুনে।
তার নামে আসা পোস্টগুলোতে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ‘বাজে আচরণ’ উসকে দেওয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে, জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই।
“পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলের সমালোচনায় চোখ বন্ধ করে থাকতে চায়, সম্ভবত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন ইহুদি গণহত্যা (হলোকস্ট) সংক্রান্ত অপরাধবোধের কারণে।
“ইসরায়েলের গত কয়েক দশকের কর্মকাণ্ডে জাতিগত নির্মূল ও গণহত্যার নানান অভিযোগ উঠে এসেছে,” বলা হয়েছে পোস্টগুলোতে।