Published : 25 Nov 2024, 07:58 PM
ভারতের পার্লামেন্টে শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনই আদানির ঘুষের অভিযোগ নিয়ে হট্টগোল হয়েছে। এর জেরে অধিবেশন মুলতবি করা হয়। ঘুষ কেলেঙ্কারির মুখে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় এক বছরে মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে গৌতম আদানির ডলার বন্ডের দাম।
যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষকাণ্ডে আদানি গোষ্ঠীর নাম জড়ানো নিয়ে সোমবার ভারতের পার্লামেন্ট অধিবেশনে আলোচনা চায় বিরোধীরা। কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলো আদানি-ইস্যুতে এই আলোচনা দাবি করে।
অভিযোগ, সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহের বরাদ্দ পেতে ভারতীয় কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়েছেন আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান গৌতম আদানি-সহ কয়েকজন। তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। জারি হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ।
বিরোধীদের হট্টগোলের জেরে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই কক্ষেই অধিবেশন মুলতুবি হয় ৷ দুপুরের দিকে নিম্নকক্ষ লোকসভা এবং উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার অধিবেশন ফের শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আদানি ইস্যুর পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে বিরোধীরা হট্টগোল শুরু করলে অধিবেশন বুধবার পর্যন্ত মুলতুবি করা হয়।
ভারতের বিরোধী দলগুলো গত সপ্তাহে বলেছিল, সোমবার পার্লামেন্টের বৈঠকে তারা আদানি ইস্যু উত্থাপন করবে। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে লেখেন, অধিবেশন শুরু হওয়ার পর সরকারের প্রথম কাজ হওয়া উচিত আদানি কেলেঙ্কারি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা। কারণ, এ বিষয়টির সঙ্গে ভারতের বৈশ্বিক ভাবমূর্তি জড়িয়ে।
উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় জানান, তিনি আদানি ইস্যু নিয়ে এমপি’দের কাছ থেকে আলোচনার দাবি সম্বলিত ১৩টি নোটিশ পেয়েছেন। তবে সেগুলো পার্লামেন্টের নিয়মানুযায়ী না হওয়ায় তিনি আলোচনার অনুমতি দিতে পারেননি।
এ সময় ধনখড় পার্লামেন্টে কথা বলতে বলেন খড়গেকে। তবে অন্য এমপি’রা তাতে বাধা দিলে হট্টগোল শুরু হয়। পরে জগদীপ ধনখড় গোটা দিনের জন্য রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন। এর কিছুক্ষণ পর নিম্নকক্ষ লোকসভাতেও একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। ফলে স্পিকার সেখানেও অধিবেশন স্থগিত করে দেন।
ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির বিরুদ্ধে গত বুধবার ঘুষ ও প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা ও প্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর থেকেই শেয়ারবাজারে বড় ধসের পাশাপাশি আদানির ডলার বন্ডের মূল্য কমতে থাকে।
এর মধ্যে ডলার বন্ডের দাম আরও কমে সোমবার এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে চলে আসে। বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় এবং কিছু ব্যাংক ঋণ স্থগিত করায় আদানি বন্ডের এই দরপতন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।