Published : 19 May 2025, 09:43 PM
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষা নিয়ে নতুন চুক্তিতে পৌঁছেছে যুক্তরাজ্য। বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, মৎস্যসম্পদ, ভ্রমণ এবং যুব স্কিম নিয়ে বহুমুখী এই চুক্তি করেছে দুই পক্ষ।
সোমবার লন্ডনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের যৌথ সম্মেলনে এই চুক্তির বিষয়ে সমঝোতা হয়। ২০২০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) ৯ বছর পর দু’পক্ষের মধ্যে এমন বড় ধরনের সমঝোতা এটিই প্রথম।
ডনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য কাছাকাছি আসতে শুরু করেছিল।
বিভিন্ন বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সঙ্গে এক টেবিলে আলোচনায় বসেছে যুক্তরাজ্য। রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়েও ইইউ-যুক্তরাজ্য একসঙ্গে বসে আলোচনা করেছে।
এবার দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক পরিসরে নতুন চুক্তিও হল। সোমবার চুক্তির ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, “যুক্তরাজ্য-ইইউ চুক্তি উভয়পক্ষের জন্যই লাভজনক (উইন-উইন) হয়েছে। আমাদের সম্পর্কে এ এক নতুন অধ্যায়।”
ওদিকে, ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন বলেন, “আমরা একটি অধ্যায়ের পাতা উল্টাচ্ছি। আমাদের অনন্য সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছি।”
নতুন চুক্তিতে কি কি আছে তা তুলে ধরেছে বিবিসি:
মাছ ধরার অধিকার:
নতুন চুক্তির আওতায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মাছ ধরা নৌকাগুলো ২০৩৮ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের জলসীমায় আগের মতোই মাছ ধরতে পারবে।
যুক্তরাজ্য প্রতিবছর ইইউ ও নরওয়ের সঙ্গে মাছ ধরার কোটা নির্ধারণ করবে এবং ব্রিটিশ জলসীমায় কারা মাছ ধরতে পারবে, সে বিষয়ে লাইসেন্স দেবে।
খাদ্য ও কৃষিপণ্য:
ইউরোপীয় ইউনিয়নে খাদ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু ছাড় পেয়েছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্য ও ইইউ’র মধ্যে বাণিজ্য সহজ করতে চুক্তিতে একমত হয়েছে দুইপক্ষ।
নতুন স্যানিটারি অ্যান্ড সাইটোস্যানিটারি (এসপিএস) চুক্তির ফলে ব্রেক্সিটের পর প্রথম যুক্তরাজ্য আবার কাঁচা বার্গার ও সসেজ ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি করতে পারবে।
যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, তাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক পার্টনার ইইউ’র সঙ্গে নতুন চুক্তির মাধ্যমে কেবল খাদ্য রপ্তানিতেই নয়, কৃষিজ উৎপাদনেও সুবিধা মিলবে।
এতে খাবারের দাম কমবে এবং জ্বালানি-নিরাপত্তা আরও বাড়বে এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ব্রিটিশ অর্থনীতিতে প্রায় ১,২১০ কোটি ডলার যোগ হবে বলেও আশাবাদী যুক্তরাজ্য।
প্রতিরক্ষা:
ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই যুক্তরাজ্য ও ইইউ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করে এসেছে।
সেই চেষ্টা আরও জোরদার হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপে তাদের নিরাপত্তা গ্যারান্টি তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর থেকে।
নতুন চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ‘সিকিউরিটি অ্যাকশন ফর ইউরোপ (এসএএফই)’ নামক দেড়শ বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ইইউ প্রতিরক্ষা তহবিল থেকে ঋণ পাওয়ার সুযোগ পাবে।
ভ্রমণ ও যুব স্কিম:
অবকাশ যাপনে যাওয়া ব্রিটিশ নাগরিকরা ইউরোপে ভ্রমণের সময় আরও অনেক বিমানবন্দরে ই-গেট ব্যবহার করতে পারবে। তবে এ নিয়ম কখন থেকে কার্যকর হবে তা এখনও পরিষ্কার জানা যায়নি।
‘যুব অভিজ্ঞতা স্কিম’ নিয়ে আরও সহযোগিতা করতে দুইপক্ষ রাজি হয়েছে। তবে এই স্কিম এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে।