Published : 10 Jun 2025, 09:08 PM
গাজা নিয়ে করা ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের জেরে দুই ইসরায়েলি কট্টর-ডানপন্থি মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মঙ্গলবারের নেওয়া এ ব্যবস্থার ফলে ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ ও জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী বেন-গাভির এখন যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবেন না, পাশাপাশি তাদের সম্পদও জব্দ হবে, বলেছে বিবিসি।
‘চরমপন্থি সহিংসতা উসকে দেওয়ায় এবং ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার গুরুতরভাবে খর্ব করায়’ স্মতরিচ ও ইতামার বেন-গাভিরের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, বলেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি।
এর পাল্টায় ইসরায়েল বলেছে, “নির্বাচিত প্রতিনিধি ও সরকারের সদস্যদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া খুবই নিন্দনীয়।”
তবে ল্যামি বলেছেন, দুই ইসরায়েলি মন্ত্রী যা করেছেন, তা কোনোমতেই ‘মেনে নেওয়া যায় না’।
“এ কারণেই আমাদের এখন ব্যবস্থা নিতে হয়েছে, যেন দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা যায়।
“গাজায় যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা, ভবিষ্যতে গাজার শাসনব্যবস্থায় যাদের কোনও ভূমিকা থাকবে না সেই হামাসের হাতে থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের দ্রুত মুক্তি, ভূখণ্ডটিতে ত্রাণ সহায়তা বাড়ানো এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথ তৈরিতে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো,” বলেছেন তিনি।
এমন এক সময়ে দুই কট্টর-ডানপন্থি ইসরায়েলি মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা দিল যখন গাজায় চলমান যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলো তেল আবিবের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
দুই মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “অংশীদার অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউ জিল্যান্ড ও নরওয়ের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য স্পষ্টভাবে বলতে চায়, পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়ের ওপর ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের জোর-জবরদস্তি ও ক্রমবর্ধমান সহিংসতা অবশ্যই বন্ধ হতে হবে।”
বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, ব্রিটেনের পাশাপাশি কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড ও নরওয়েও পশ্চিম তীরে অবৈধ এক বসতিতে থাকা বেন-গাভির ও স্মতরিচের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও তাদের সম্পদ জব্দ করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
এই দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থাকে গাজায় চলমান ঘটনাপ্রবাহ থেকে ‘আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই’ উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ভূখণ্ডটিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলতে তেল আবিবের প্রতি জোর আহ্বানও জানানো হয়।
স্মতরিচ ও বেন-গাভির দুজনই কট্টর-ডানপন্থি দলের সদস্য, যারা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট সরকারে বেশ প্রভাবশালী।
গাজা নিয়ে এ দুই মন্ত্রীর অবস্থান আগেও তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছিল। স্মতরিচ গাজায় ত্রাণ ঢোকার সুযোগ না দিতে প্রচার চালিয়েছিলেন। আর বেন-গাভির গাজাবাসীকে অন্যত্র পুনর্বাসন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
হেবরন হিলসে নতুন এক বসতির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্মতরিচ যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞাকে একহাত নিয়েছেন।
“মাতৃভূমির কোলে আমাদের বসতি স্থাপন রুখে দিতে ব্রিটেন আগেও একবার চেষ্টা করেছিল, আবার তা হতে দিতে পারি না আমরা। আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছায় বসতি নির্মাণ চালিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ,” বলেছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের পদক্ষেপ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বেন-গাভিরের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
কূটনৈতিক 'সুনামি'র মুখে ইসরায়েল, ট্রাম্পও চুপ
দখলকৃত পশ্চিম তীরে বড় পরিসরে বসতি সম্প্রসারণের ঘোষণা ইসরায়েলের