Published : 01 Jun 2025, 12:31 AM
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, গত সপ্তাহের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্র যে অস্ত্রবিরতি প্রস্তাব হাজির করেছে সে বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া পেশ করেছে তারা।
এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, তারা ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে জীবিত ১০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি ও মৃত ১৮ জনের মরদেহ ফেরত দিতে প্রস্তুত আছে।
যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ৬০ দিনের এক অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দিয়ে বলেছে, এর প্রথম সপ্তাহে জীবিত ও মৃত এই ১৮ ইসরায়েলিকে মুক্তি দেবে হামাস আর স্থায়ী যুদ্ধবিরতি শুরু হলে আরও ৩০ জনের বেশি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। আর গাজায় জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে মানবিক ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হবে।
হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, অস্ত্রবিরতির এই প্রস্তাব ইসরায়েল অনুমোদন করেছে।
তবে হামাস যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত এই খসড়া প্রস্তাবের বিষয়ে কিছু আপত্তিও তুলে ধরেছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
হামাস প্রথমে এই অস্ত্রবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। কিন্তু এবার তারা প্রস্তাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে নিজেদের কিছু আপত্তি ও দাবি তুলে ধরেছে।
তারা বলেছে, তারা ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ ও গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর ‘সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের’ লক্ষ্যে এ প্রস্তাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। তারা ফিলিস্তিনের গাজায় ত্রাণ আসা অব্যাহত থাকবে এ নিশ্চয়তা চায়।
কিন্তু তাদের এসব দাবির কোনোটিই উইটকফের খসড়া প্রস্তাবে নেই। হামাস এই প্রতিক্রিয়া জানানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত অস্ত্রবিরতি সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যানও করলো না আবার পরিষ্কারভাবে গ্রহণও করলো না।
বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট বলেছিলেন, “আমি নিশ্চিত করতে পারি যে বিশেষ দূত উইটকফ এবং প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলের সমর্থিত একটি অস্ত্রবিরতি প্রস্তাব হামাসকে পাঠিয়েছেন। হামাসের কাছে পাঠানোর আগে ইসরায়েল এই প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছে।”
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানায়, জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে এক বৈঠকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, “আমরা বিশ্বাস করি না হামাস শেষ জিম্মিকে মুক্তি দেবে। আর সব জিম্মি আমাদের হাতে না আসা পর্যন্ত আমরা ভূখণ্ডটি (গাজা) ছেড়ে আসবো না।”
ওই সময় মার্কিন অস্ত্রবিরতি প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রধান আলোচক খলির আল-হায়া দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছিলেন, “যুদ্ধের পূর্ণ ও স্থায়ী অবসান নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়া আংশিক চুক্তিতে হামাস রাজি হবে না।”
কিন্তু হামাস সম্ভবত এটাও উপলব্ধি করেছে যে তারা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করতে পারবে না। তারা ভালোভাবেই জানে, ইসরায়েল গাজায় তাদের স্থল অভিযান আরও তীব্র করার প্রস্তুতি নিচ্ছে আর এ মুহূর্তে তাদের এ ধরনের আক্রমণ প্রতিরোধ করার অথবা এমনকি শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলারও সামরিক সক্ষমতা নেই। তাই তারা মার্কিন প্রস্তাবের সরাসরি উত্তর না দিয়ে পাল্টা কিছু প্রস্তাব পেশ করেছে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা।