Published : 12 Jun 2025, 12:10 AM
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা কমিয়ে আস্থা ফেরানোর চেষ্টায় সীমান্তে লাউডস্পিকার দিয়ে প্রচারণা বন্ধ করে দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং নির্বাচিত হওয়ার এক সপ্তাহ পরই এই পদক্ষেপ এল। মিয়ং দুই কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছিলেন।
উত্তরের সীমান্তে লাউডস্পিকার সম্প্রচার বন্ধের জে-মিয়ংয়ের সিদ্ধান্তকে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠার ‘প্রথম পদক্ষেপ’ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলছে, “দুই কোরিয়ার মধ্যে আস্থা পুনর্গঠন এবং কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি অর্জনের লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত।”
উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্তে দক্ষিণের লাউডস্পিকার প্রচার-প্রপাগান্ডাকে যুদ্ধ তৎপরতা হিসেবেই দেখে এসেছে এবং অতীতে তারা এই লাউডস্পিকার উড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়া ৬ বছর এই লাউডস্পিকার সম্প্রচার বন্ধ রেখেছিল। তবে গত বছর উত্তর কোরিয়া আবর্জনা ভর্তি বেলুন দক্ষিণ কোরিযায় পাঠাতে শুরু করলে আবার সীমান্তে লাউডস্পিকার চালু করে সিউল।
এই সম্প্রচারে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিদেশের সংবাদ, গণতন্ত্র বিষয়ক তথ্য এবং দক্ষিণ কোরিয়ার জীবনযাত্রা সম্পর্কে বিবরণ দেওয়া হত।
দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের সময় উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে ইওল স্বল্প সময়ের জন্য সামরিক শাসন জারি করলে তাকে অভিশংসন করে অপসারণ করা হয়।
তারপরই নতুন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন তার উত্তরসূরি লি জে-মিয়ং। তিনি নির্বাচনী প্রচারে বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছিল উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংলাপ ফের শুরু করা এবং দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমানো।
উত্তরের সীমান্তে প্রচার মাইক বন্ধ করা মিয়ংয়ের সেই প্রতিশ্রুতিরই অংশ। তবে উত্তর কোরীয়দের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নের পক্ষে সোচ্চার সংগঠনগুলো এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে।
সিউল-ভিত্তিক ‘ডেটাবেইস সেন্টার ফর নর্থ কোরিয়ান হিউম্যান রাইটস’- এর নির্বাহী পরিচালক হানা সং বলেন, “এই লাউডস্পিকারগুলো উত্তর কোরিয়ার জনগণের জন্য ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধন। এটি তাদেরকে মনে করিয়ে দিত যে তারা বিস্মৃত হয়নি।”
“এগুলো বন্ধ করে কেবল উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের দেশের জনগণকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার প্রচেষ্টাকেই আরও মজবুত করা হল।”