Published : 13 Oct 2024, 06:18 PM
দীর্ঘ ৫৬ বছর ৮ মাসের অপেক্ষার সমাপ্তি ঘটেছে এক ফোন কলে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক সেনা থমাস চেরিয়ানের লাশ ফিরে পেয়েছে তার পরিবার।
ফোন কলটি এসেছিল ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যের পাথানমথিট্টা পুলিশ স্টেশন থেকে। সেই কলে অপ্রত্যাশিত খবর পান থমাস থমাস- জানতে পারেন তার বড় ভাই থমাস চেরিয়ানের মৃতদেহ অবশেষে খুঁজে পাওয়া গেছে।
১৯৬৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে চণ্ডীগড় থেকে লেহ যাচ্ছিল ভারতীয় বিমানবাহিনীর এএন-১২ বিমান৷আরোহী ছিল ১০২ সেনা৷ কিন্তু উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিমানটির সঙ্গে আর যোগাযাগ করা যায়নি। পরে জানা যায়, প্রতিকূল আবহাওয়ায় বিমানটি রোহতাং পাসের কাছে ভেঙে পড়েছে৷ বরফের স্তূপের মধ্যেই চাপা পড়েছিল মৃতদেহগুলো।
এরপর বহু বছর ধরে বিমানটি নিখোঁজ ছিল। আর তাতে আরোহী সেনাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তাও ছিল রহষ্যে ঘেরা। ২০০৩ সালে পর্বতারোহীদের একটি দল বিমানটির আরোহী এক সেনার মৃতদেহ খুঁজে পায়।
তারপর থেকেস কয়েকবছরে সেনাবাহিনীর অনুসন্ধানে আরও ৮ টি লাশ খুঁজে পাওয়া যায়। ২০১৯ সালে পর্বত থেকে উদ্ধার করা হয় বিমানের ধ্বংসাবশেষ। আর মাত্র কয়েকদিন আগে ১৯৬৮ সালের ওই বিমান দুর্ঘটনা আবারও সংবাদ শিরোনাম হয়েছে আরও চার মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার ঘটনায়। এই চারজনেরই একজন থমাস চেরিয়ান।
এই সেনারা প্রত্যেকেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘সেপাই’ পদে কাজ করতেন। মৃতদের আত্মীয়দের দেওয়া বিবরণ অনুযায়ী লাশগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। চেরিয়ানের পরিবারে তার ভাই রয়েছে৷ তাকে চেরিয়ানের দেহ উদ্ধারের খবর দেওয়া হয়৷
বিমান দুর্ঘটনার সময় চেরিয়ানের বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর। তিনি হিমালয়ের লেহ এলাকায় প্রথম ফিল্ড পোস্টিংয়ে যাচ্ছিলেন। চেরিয়ানের মৃতদেহ উদ্ধারের খবর শুনে তার ভাই থমাসের প্রতিক্রিয়া, “এটা যন্ত্রণাদায়ক৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাইয়ার দেহ যে উদ্ধার হল, সেটি স্বস্তির। দেহাবশেষ পরিবারের সমাধিক্ষেত্রে সমাহিত করা হবে।”
তিনি জানান, তার মা-বাবা দুইজনই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাদের নিখোঁজ ছেলে চেরিয়ানের খবর জানার অপেক্ষায় ছিলেন।
২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী মাউন্টেনিয়ারিং ট্রেনিং সেন্টারের শিক্ষার্থীরা প্রথম ওই বিমানের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পেয়েছিল। তখন টানা অভিযান চালিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডোগরা স্কাউট দল ৫ জনের দেহ উদ্ধার করেছিল।
এবার এই তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে ডোগরা স্কাউট এবং তিরঙ্গা মাউন্টেইন রেসকিউ দলের সদস্যরা। এর আগে ২০০৫, ২০০৬, ২০১৩ এবং ২০১৯ সালে তল্লাশি অভিযান হয়েছে। চারটি অভিযানে ৫টি দেহই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল।