Published : 16 Jun 2025, 10:58 PM
ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আহ্বান জানিয়েছে ইরান।
তেহরান বলছে, দুই দেশের মধ্যে চার দিন ধরে আকাশপথে যে হামলা পাল্টা হামলা চলছে, সেটা বন্ধ করতে চাইলে এটাই ‘একমাত্র পথ’।
অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তার দেশ ‘জয়ের পথে’ রয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ইরানের শহরগুলোতে ইসরায়েলের বাহিনী বিমান হামলা আরও জোরালো হয়েছে। আবার ইরানও প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দেখিয়েছে যে তারা ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ভেদ করতে সক্ষম। ইরানের এ হামলাকে তাদের সফল পাল্টা আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এক্স পোস্টে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি সত্যিকারের কূটনীতিটা করতে চান এবং যুদ্ধ বন্ধে আগ্রহী হন, তাহলে পরের পদক্ষেপগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
"ইসরায়েলকে অবশ্যই আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। তারা সামরিক আগ্রাসন পুরোপুরি না থামালে আবাদের জবাবও চলতে থাকবে। ওয়াশিংটন থেকে একটি ফোন কল নেতানিয়াহুকে থামাতে পারে। আর সেটাই কূটনীতিতে ফেরার পথ উন্মুক্ত করতে পারে।"
এদিকে ডনাল্ড ট্রাম্পের উদ্ধৃতি দিয়ে টেলিগ্রাফ বলেছে, ‘ইরান যুদ্ধবিরতি চায়’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি ৬১তম (কূটনৈতিক আলোচনার) দিনে বলেছিলাম, আমাদের মধ্যে এখনো কোনো চুক্তি হয়নি। তাদের একটি চুক্তিতে আসতে হবে এবং এটা করাটা দুপক্ষের জন্যই কঠিন। এবং ইরান এই যুদ্ধে জয়ী হচ্ছে না। ”
এর আগে অবশ্য রয়টার্স এক খবরে বলেছিল, যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ইরান রাজি নয়।
দুই পক্ষের মধ্যস্ততায় সম্পৃক্ত থাকা এক কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়, ইসরায়েলি হামলার মধ্যে অস্ত্রবিরতি নিয়ে তেহরান কোনো আলোচনায় ইরান রাজি নয় বলে কাতার ও ওমানকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে।
দুই ইরানি ও তিন আঞ্চলিক কূটনীতিকের বরাতে রয়টার্স বলছে, যুদ্ধবিরতির জন্য কাতার, সৌদি আরব ও ওমানকে তেহরান ‘অনুরোধ’ জানিয়েছে।
এসব দেশকে তেহরান বলেছে, ট্রাম্প যেন তার প্রভাব খাটিয়ে ইসরায়েলকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি করান। বিনিময়ে পারমাণবিক আলোচনায় ইরান নমনীয়তা দেখাবে বলে পাঁচ কূটনীতিকের বরাতে বলেছে রয়টার্স।
ইরানের এ ‘আহ্বানের’ আগেই অবশ্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দাবি করেন, তার দেশ দুটি প্রধান লক্ষ্য অর্জনের ‘পথে রয়েছে’। একটি হলো, ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা। আরেকটি হলো, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা।
এদিন বিমানঘাঁটিতে ইসরায়েলি সেনাদের সামনে তিনি বলেন, “আমরা বিজয়ের পথে রয়েছি। আমরা তেহরানের বাসিন্দাদের বলছি, শহর ছেড়ে চলে যান; আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল ইরানের শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব এবং প্রধান পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যার মাধ্যমে ‘আচমকা’ অভিযান শুরু করে।
তারা দাবি করেছে, ইরানের আকাশসীমার এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে এবং আগামী দিনে হামলা আরও জোরদার করা হবে।
তেহরান বলছে, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২২৪ জন ইরানি নিহত হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক।