Published : 29 May 2025, 05:12 PM
সুইজারল্যান্ডের আল্পস পর্বতমালায় একটি হিমবাহ ধসে বরফ, কাদা ও পাথরের স্রোতে চাপা পড়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি পাহাড়ি গ্রাম।
বুধবারের এ ঘটনায় একজন নিখোঁজ হওয়ার খবর জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। ব্লাটেন নামে এই গ্রামে ধসের আশঙ্কায় মানুষজনকে আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
সুইস জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এসআরএফ-এ প্রচারিত ড্রোন ফুটেজে দেখা গেছে, ব্লাটেন গ্রাম এবং পাশের বনভূমি কাদা ও পাথরের প্রবল ঢলে ঢেকে গেছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লাটেন গ্রামের মেয়র মাত্তিয়াস বেলভাল্ড বলেন, “আমরা আমাদের গ্রাম হারিয়েছি। গ্রামটি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তবে আমরা আবার সব কিছু নতুন করে গড়ে তুলব।”
ভ্যালেইস ক্যান্টনের কর্মকর্তা স্টেফান গ্যানজার সুইস গনমাধ্যমকে জানান, ব্লাটেন গ্রামের প্রায় ৯০ শতাংশ শিলাধসে ঢেকে গেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, গ্রামটি যে পাহাড়ের নিচে অবস্থিত, সেটির একটি অংশ চলতি মাসে ধসে পড়তে শুরু করলে বিজ্ঞানীরা হিমবাহের ভেঙে পড়ার সতর্কতা দেন এবং ১৯ মে ব্লাটেনের প্রায় ৩০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, কীভাবে হিমবাহের অংশবিশেষ ধসে পড়ে ধুলোমেঘ তৈরি করে গ্রামের দিকে নেমে আসে ।
জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু ও পরিবেশবিদ্যার অধ্যাপক ক্রিশ্চিয়ান হুগেল বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “ব্লাটেন গ্রামের দুর্যোগের একাধিক কারণ থাকলেও এটি জানা গেছে যে,স্থানীয় এলাকায় পারমাফ্রস্ট গলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আল্পসে উষ্ণ তাপমাত্রার কারণে এই গলন ঘটে থাকতে পারে। বরফে জমাট বাঁধা মাটি গলে গেলে পাহাড়ের পাথর অস্থির হয়ে পড়ে, আর সেটাই ভূমিধসের জন্য বড় কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।”
হুগেল বলেন, “আলপ্স অঞ্চলে এ এমন বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি বর্তমান শতক তো বটেই, এমনকি আগের শতাব্দীতেও দেখা যায়নি।”
ড্রোনে ধারণ করা ফুটেজে দেখা যায়, কাদায় স্রোতে ভেঙে যাওয়া কাঠের ঘরবাড়ির ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে রয়েছে পুরো এলাকা জুড়ে। ধ্বংসস্তূপের নিচে অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট চাপা পড়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
সুইস জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এসআরএফ জানায়, দক্ষিণ সুইজারল্যান্ডের ল্যোচেনটাল উপত্যকায় অবস্থিত এই গ্রামের অনেক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
সুইজ প্রেসিডেন্ট কারিন কেলার-সুটার স্থানীয়দের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, “নিজের ঘর হারানো যে কতটা কষ্টের, তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।”
জরুরি সেবা সংস্থাগুলো এলাকাটি ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ উল্লেখ করে সবাইকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং উপত্যকার প্রধান সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে।