Published : 14 May 2025, 03:19 PM
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ইয়েমেন থেকে তাদের ভূখণ্ডের দিকে ছোড়া একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বাধা দিয়ে ধ্বংস করেছে।
বুধবারের এই হামলার ঘটনায় কেউ আহত বা কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তাৎক্ষণিকভাবে খবর হয়নি।
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, জেরুজালেম ও আশপাশের অনেকগুলো শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সতর্কতা জানিয়ে সাইরেন বেজে ওঠে। পশ্চিম তীরের কিছু ইহুদি বসতিতেও সাইরেনের শব্দ শোনা যায়।
সাইরেন বাজার কয়েক মিনিট আগে ইসরায়েলিদের ফোনে আসা সতর্ক বার্তায় দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের মধ্যেই ইসরায়েলে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইয়েমেনের হুতিরা। ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ইয়েমেনের হুতিদের সঙ্গে তিনি একটি অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছেছেন আর এটি লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজগুলোতে হামলা বন্ধ করবে।
হুতি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানিয়েছেন, তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল বুধবার ইয়েমেনের তিনটি সমুদ্রবন্দর থেকে সবাইকে সরে যাওয়ার সতর্কতা জারি করেছে। দেশটি বলেছে, ইরান সমর্থিত হুতিরা তাদের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে আর তারা সেটি বাধা দিয়ে ধ্বংস করছে।
এর কিছুক্ষণ পর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত তিনটি বন্দরের জন্য সতর্ক বার্তা দিতে শুরু করে। আইডিএফ ইয়েমেনি বন্দরগুলোতে বিমান হামলা চালাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, হুতিরা হোদেইদাহ, রাস ইসা ও সালিফ বন্দর ব্যবহার করে আসছে, এগুলো থেকে সবাইকে সরে যাওয়ার জন্য সতর্কতা জরি করা হচ্ছে।
চলতি মে মাসের প্রথমদিকে এক ঘোষণায় ট্রাম্প বলেন, ইয়েমেনের হুতিরা মার্কিন জাহাজে হামলা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে তাই যুক্তরাষ্ট্রও তাদের লক্ষ্যস্থলগুলোতে বোমাবর্ষণ বন্ধ করছে।
এরপর হুতিরা বলেছে, তারা মার্কিন জাহাজগুলোতে হামলা বন্ধ করলেও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাবে।
৭ অক্টোবর ইসরায়েল ফিলিস্তিনের ছিটমহল গাজায় ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করার পর ইয়েমেন উপকূলে আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচল পথে ইসরায়েল ও ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোতে হামলা শুরু করে ইয়েমেনের হুতিরা। গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়েছে তারা ইসরায়েলি লক্ষ্যস্থলগুলোত হামলা চালাচ্ছে বলে দাবি হুতিদের।
এরপর তারা ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ড লক্ষ্য করে নিয়মিত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে। এর জেরে ইসরায়েল ইয়েমেনে হুতিদের বিভিন্ন অবস্থানে ব্যাপক প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়।
লোহিত সাগর ও আশপাশের জলপথে মার্কিন জাহাজগুলো হুতিদের আক্রমণের শিকার হওয়ায় ট্রাম্প ইয়েমেনি গোষ্ঠীটির শক্তিকেন্দ্রগুলোতে বিমান হামলা চালানো শুরু করেন। ১৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া প্রবল মার্কিন বিমান হামলায় ইয়েমনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও বহু মানুষ নিহত হয়।
এরপর ইয়েমেনের প্রতিবেশী ওমানের মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হুতিদের অস্ত্রবিরতি চুক্তি হয়। এই চুক্তিতে ইসরায়েলকে অন্তভুক্ত করা হয়নি।