Published : 21 May 2025, 08:14 PM
No truth can cure the sorrow we feel from losing a loved one. No truth, no sincerity, no strength, no kindness can cure that sorrow. All we can do is see it through to the end and learn something from it, but what we learn will be no help in facing the next sorrow that comes to us without warning.
― Haruki Murakami, Norwegian Wood
হারুকি মুরাকামি। এ নামটির সাথে কম-বেশি সবাই পরিচিত। বিশ্বসাহিত্য অঙ্গনে, নন্দিত একজন লেখক তিনি। সাহিত্যজগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। অত্যন্ত জনপ্রিয় ও পাঠকপ্রিয় এ লেখক ১৯৪৯ সালে জাপানের কিয়োটোতো(Kyoto) শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কোবে (kobe) শহরে বেড়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে টোকিয়োতে স্থানান্তরিত হন যেখানে তিনি ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
‘হিয়ার দ্য উইন্ড সিং’ উপন্যাসটি লেখার মাধ্যমেই তিনি সাহিত্যজগতে পা দেন। এ উপন্যাসটি লেখা নিয়ে চমকপ্রদ একটি তথ্য হল যে ১৯৭৮ সালে তিনি জিঙ্গু স্টেডিয়ামে বসে ইয়াকুল্ট সুয়ালোস ও হিরোশিমা কার্পের মধ্যে একটি বেসবল খেলা দেখছিলেন। সেই সময় ডেভ হিলটন নামক এক মার্কিন খেলোয়াড় ব্যাটিং করতে আসেন। একটি বহুল প্রচলিত গল্প অনুসারে, ঠিক যেই মুহূর্তে ডেভ হিলটন একটি ডাবল হিট করেন, তৎক্ষণাৎ মুরাকামির মনে একটি ভাবনা জাগে। আর সেই ভাবনাটি হল—'আমি তো একটা উপন্যাস লিখতে পারি’। যিনি কখনোই লেখালেখির কথা ভাবেননি তাঁর জন্য এটি ছিল ভীষণ অপ্রত্যাশিত একটি অনুভূতি। তবে তিনি লেখালেখির প্রতি প্রচন্ড এক তাগিদ অনুভব করেন। স্টেডিয়াম থেকে বাড়ি ফিরে যান, ফেরার পথে কাগজ ও কলম কেনেন এবং সেই রাতেই তিনি এ উপন্যাসটি লিখতে শুরু করেন যা ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয়। প্রকাশনার বছরেই ‘হিয়ার দ্য উইন্ড সিং’ উপন্যাসটির জন্য তিনি ‘Gunzou Literature’ পুরস্কারে ভূষিত হন যা ছিল উদীয়মান লেখকদের জন্য একটি সম্মাননা। উপন্যাসটির পরবর্তী রচনা হিসেবে তিনি ‘পিনবল, ১৯৭৩’ ও ‘অ্যা ওয়াইল্ড শিপ চেইজ’ গ্রন্থ দুটি রচনা করেছিলেন। এভাবেই শুরু হয় হারুকি মুরাকামি নামক এই কিংবদন্তি লেখকের পথচলা।
হারুকি মুরাকামি তাঁর গল্পগুলোতে জাদুবাস্তবতার উপাদান যুক্ত করে থাকেন যেখানে কল্পনা আর বাস্তব অভিজ্ঞতা মিলেমিশে একাকার হয়। পাঠক মন্ত্রমুগ্ধের মত তাঁর লেখা পড়েন। শব্দ চয়ন, বিভিন্ন চরিত্রের বিশ্লেষণ ও তাদের আত্ন-অন্বেষণ কিংবা উপলব্ধি, তাঁর উদ্ধৃতিগুলো পাঠকের কাছে ভীষণ প্রিয়। যদিও জাদুবাস্তবতাই তাঁর রচনার মূল বিষয়, তবে তিনি ‘নরওয়েজিয়ান উড’ নামক বাস্তবভিত্তিক একটি উপন্যাস রচনা করেন। বলা হয়ে থাকে এটা তাঁর প্রথম (ও একমাত্র বাস্তবভিত্তিক উপন্যাস)।
তাঁর উল্লেখযোগ্য অন্যান্য উপন্যাসসমূহের মধ্যে রয়েছে ‘স্পুটনিক সুইটহার্ট’, ‘সাউথ অব দ্য বর্ডার ওয়েস্ট অব দ্য সান’, ‘ড্যান্স ড্যান্স ড্যান্স’, ‘দ্য উইন্ড-আপ বার্ড ক্রনিকেল’, ‘কাফকা অন দ্য শোর’, ‘আফটার ডার্ক’ ইত্যাদি। এছাড়া তাঁর ছোটগল্প সংকলনের মধ্যে রয়েছে ‘দ্য এলিফ্যান্ট ভ্যানিশেষ’, ‘আফটার দ্য কোয়াক’, ‘মেন উইদাউট উইমেন’, ফার্স্ট পারসন সিঙ্গুলার’ ইত্যাদি। এছাড়া তিনি রচনা করেছেন ‘দ্য স্ট্রেঞ্জ লাইব্রেরি’ নামক একটি অলংকৃত উপন্যাসিকা। ফিকশনের পাশাপাশি নন-ফিকশন নিয়েও মুরাকামি কাজ করেছেন। দৌড়ানো নিয়ে ‘হোয়াট আই টক এবাউট হোয়েন আই টক এবাউট রানিং’ নামক একটি ব্যক্তিগত প্রবন্ধও তিনি রচনা করেছেন যা পাঠকমহলে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই বইটিতে তিনি দৌড়ের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং দৌড় ও লেখালেখির মধ্যে যোগসংযোগ নিয়ে কথা বলেছেন। এছাড়া লেখালেখি নিয়ে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন ‘নভেলিস্ট অ্যাজ অ্যা ভোকেশন’ নামক বইটিতে যেখানে তিনি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা বলেছেন—
‘’উপন্যাসগুলো সাধারণত আপনার ভেতর থেকেই সৃষ্টি হয়, এগুলো এমন কিছু নয় যা আপনি চাইলেই ইচ্ছেমত বা কৌশলগতভাবে পরিবর্তন করতে পারেন। লেখালেখির বাজারে কি চলছে এরকম কিছু গবেষণা করে তার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ইচ্ছাকৃতভাবে আপনি আপনার লেখার বিষয়বস্তু পুনর্গঠন করতে পারবেন না। যদি আপনি এমনটা করেন, তবে এমন অগভীর ভিত্তি থেকে সৃষ্টি হওয়া সাহিত্য খুব বেশি পাঠকের মন অবধি পৌছাবে না।‘’
সাহিত্যঅঙ্গনে অনেক জনপ্রিয় ও সম্মানিত হলেও, সাধারণত তিনি খ্যাতির এই ছড়াছড়ি এড়িয়ে চলেন। এমনকি সাহিত্যিক আড্ডাতেও তাঁকে দেখা যায় না। তাঁর খুব বেশি লেখক বন্ধু আছে বলেও মনে হয়না। তারপরেও মুরাকামির রয়েছে ভুবনজোড়া খ্যাতি। বিভিন্ন ভাষায় তাঁর বইয়ের হাজার-লক্ষ কপি বিক্রি হয়ে থাকে। তাঁর বই পঞ্চাশেরও অধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। লেখালেখি থেকে শুরু করে তাঁর ব্যক্তিজীবন: তিনি কিভাবে জীবনযাপন করেন, তাঁর লেখালেখির রুটিন, তাঁর সেই সুপরিচিত দৌড়, ম্যারাথন ও জ্যাজ সঙ্গীতের প্রতি তাঁর ভালোবাসা পাঠকদেরকে মোটামুটি একটা ঘোরের মধ্যে রাখে বলা যায়।
হারুকি মুরাকামি—যার গদ্য যেমন অনন্য, তেমনি অন্যন্য তাঁর লেখার ধরনও। তিনি সাধারণভাবে অপ্রচলিত নিয়মে লিখে থাকেন এবং জীবনযাপন নিয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিও লৌকিকতাবর্জিত। তাঁকে নিয়ে খুব মজাদার কিছু তথ্য জানা যায়—
১। শুরুতেই বলেছি যে একটি বেসবল খেলা দেখাকালীন তিনি প্রথম মনে করেন যে তিনিও লিখতে পারেন। সেই থেকেই তাঁর লেখালেখির শুরু। তবে একজন লেখক হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন সফল ও সক্রিয় অনুবাদকও। তিনি সাধারণত ইংরেজি ভাষা থেকে জাপানিজ ভাষায় অনুবাদ করে থাকেন। হারুকি মুরাকামির প্রিয় বইগুলোর একটি হচ্ছে এফ.স্কট. ফিটজেরাল্ড রচিত ‘The Great Gatsby’ এবং তিনি এ উপন্যাসটি জাপানিজ ভাষায় অনুবাদ করেন। অনুবাদ বিষয়ক একটি প্রবন্ধে মুরাকামি বলেন যে, ত্রিশের শেষ দিকে তিনি নিজের জন্য একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন। লক্ষ্যটি ছিল ষাট বছর বয়সের মধ্যে The Great Gatsby অনুবাদ করা। কারণ তিনি এমন কোনো অনুবাদ খুঁজে পান নি যা তাঁকে সন্তুষ্ট করেছে। তাই তিনি নিজেই এ উপন্যাসটি অনুবাদ করার সিদ্ধান্ত নেন। তাছাড়া একজন পাঠক ও লেখক হিসেবে তিনটি বই তাঁর কাছে খুব অপরিহার্য— ফিটজেরাল্ডের The Great Gatsby, ফিয়োদর দস্তয়েভস্কির The Brothers Karamazov, এবং রেমন্ড চ্যান্ডলারের The Long Goodbye। তবে তিনি Gatsby এর প্রতি বেশি জোর দিয়েছেন।
জাপানি ভাষায় মুরাকামি কর্তৃক অনূদিত ফিটজেরাল্ডের The Great Gatsby-এর প্রচ্ছদ
এ কারণেই এই বইটা অনুবাদ করা তাঁর আগ্রহের শীর্ষে ছিল এবং ষাট বছরের আগেই তিনি এই লক্ষ্য পূরণে সফল হন। ২০০৬ সালে মুরাকামির এই অনুবাদটি প্রকাশিত হয়। রেমন্ড কারভার, জন আর্ভিং ও জে. ডি. স্যালিঞ্জারের মতো লেখকদের লেখাও তিনি ইংরেজি থেকে জাপানিজে অনুবাদ করেছেন। তবে তিনি নিজের কোনো লেখা ইংরেজিতে অনুবাদ করেন না। তাঁর লেখা ইংরেজিতে অনুবাদের জন্য নিয়মিত অনুবাদক আছেন এবং তারাই সাধারণত অনুবাদগুলো করে থাকেন। ইংরেজি অনুবাদগুলোর প্রুফ তিনি নিজে দেখেন তবে দু-একটা শব্দ ছাড়া খুব বেশি পরিবর্তন করেন না এবং অনুবাদকদের সাথে অন্য কোনো বিষয়ে কোনোরকম মত-বিরোধ হয়না।
২। হারুকি মুরাকামি বিড়াল ভালোবাসেন। এজন্য তাঁর বিভিন্ন গ্রন্থে আমরা বিড়ালের দেখা পাই। এ বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘’এটার সম্ভাব্য কারণ এই যে, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিড়ালদের খুব পছন্দ করি। ছোটবেলা থেকেই আমার আশেপাশে বিড়াল ছিল।‘’
৩। মুরাকামি প্রচলিত জীবনধারা মেনে নেন নি। ‘একটা ডিগ্রি অর্জন কর, চাকরি খুঁজে পাও, এরপর বিয়ে কর’ এই রীতির বাইরে গিয়ে তিনি আগে বিয়ে করেন, পরে চাকরি নেন এবং এরপরে গিয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন যা তখনকার জাপানিজ সমাজের চোখে খুব দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত ছিল। আজও স্ত্রী ইয়োকা মুরাকামি তাঁর লেখার প্রথম পাঠক এবং তাঁর সবচেয়ে বড় সমালোচক। এমনকি বছরের পর বছর ধরে, এতগুলো বেস্টসেলার উপহার দিয়েও তিনি আসলে জানেন না যে তাঁর বাৎসরিক উপার্জন কত কারণ তাঁর স্ত্রীই টাকা-পয়সার তত্ত্বাবধায়ন করেন।
৪। কর্পোরেট চাকরির নিরাপদ পথ বেছে না নিয়ে তিনি ও তাঁর স্ত্রী মিলে একটি জ্যাজ সঙ্গীতের বার চালু করেন। এর মাধ্যমে সঙ্গীতের প্রতি তাঁর ভালোবাসা পূর্ণ হলেও, শুরুর দিনগুলো ততোটা সহজ ছিল না। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই একাধিক কাজ করছিলেন। অবশ্য প্রথম উপন্যাস প্রকাশের পর, তাঁর অবস্থার পরিবর্তন হয়। উপন্যাসটি লেখার সময়ও তাঁর জ্যাজ বারটি ছিল। বারটি চালানোর ফাঁকে ফাঁকেই তিনি লেখা চালিয়ে যেতেন। জ্যাজ বারে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার পরেও তিনি তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘হিয়ার দ্য উইন্ড সিং’ মাত্র ছয় মাসের মধ্যে লিখে শেষ করেছিলেন যদিও তিনি বইটির প্রথম খসড়া নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। যেহেতু তিনি উপন্যাসটির প্রথম খসড়া দেখে সন্তুষ্ট হন নি তাই তিনি একটি অন্য পন্থা অবলম্বন করলেন। জাপানিজ ভাষায় লেখার বদলে উপন্যাসটি তিনি ইংরেজিতে লিখলেন। এ ভাষায় তাঁর শব্দ ভান্ডার সীমিত ছিল এবং তিনি সরল বাক্যে লিখতে পারতেন। সম্পূর্ণ লেখা শেষ হলে সেটাকে ভিত্তি করে জাপানিজ ভাষায় তিনি চূড়ান্ত সংস্করণটি রচনা করেন। তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘পিনবল, ১৯৭৩’ প্রকাশের পরই তিনি জ্যাজ বারটি বিক্রি করে দেন এবং একজন পূর্ণকালীন লেখক হবার সিদ্ধান্ত নেন।
৫। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে খুবই বাধা-ধরা নিয়ম মেনে চলেন। এমনকি তিনি তো তাঁর এই নিয়ম-কানুনের জন্যও পাঠকের কাছে বিখ্যাত। তিনি ভোর চারটায় ঘুম থেকে ওঠেন, রাত জাগতে পছন্দ করেন না, রাত নয়টার মধ্যেই তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুম থেকে উঠে তিনি দুপুর পর্যন্ত লেখালেখি করেন। তাঁর কাছে শরীরচর্চা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য তিনি দৌড় ও সাঁতারকে বেছে নেন। লেখালেখি শেষে প্রতিদিন তিনি ১০ কিমি দৌড়ান কিংবা ১৫০০ মি সাঁতার কাটেন কিংবা কোনো কোনো দিন দুটোকেই বেছে নেন। বোঝাই যাচ্ছে যে, তিনি একজন অসাধারণ নিয়মিত দৌড়বিদ। তাঁর জীবনে তিনি ২৩টিরও বেশি ম্যারাথন, একটি আল্ট্রাম্যারাথন ও একাধিক ট্রায়াথলনে অংশ নিয়েছেন। আগেই বলেছি তাঁর খুব বিখ্যাত একটি গ্রন্থ ‘What I talk about when I talk about running’ এর বিষয়বস্তু হল দৌড়। বইটিতে তিনি দৌড় ও লেখালেখির মধ্যে সাদৃশ্য তুলে ধরেন এবং তিনি মনে করেন দুই ক্ষেত্রেই উন্নতি করতে চাইলে প্রতিদিন হাজিরা দিতে হয়। দৌড়ের মাঠে এবং লেখালেখির কাগজে কিংবা ডেস্কটপে। লেখালেখি, দৌড় ও সাঁতার ছাড়া, তিনি প্রতিদিন কিছুটা পড়েন এবং গান শোনেন। তিনি তাঁর প্রতিটি উপন্যাসের জন্য চার থেকে পাঁচটি খসড়া করে থাকেন এবং খসড়া শেষে তিনি বছরের বাকি সময়টা সেগুলো পুনরায় লেখার জন্য ব্যয় করেন।
৬। নিজের সম্পর্কে তিনি তাঁর গ্রন্থ ‘what I talk about when I talk about running’ এ বলেন,
‘’মানুষ হিসেবে আমি একা থাকতে পছন্দ করি। একদম নির্দিষ্ট করে যদি বলি, তবে আমি এমন একজন মানুষ যার জন্য একা থাকা কোনো কষ্টকর বিষয় নয়। প্রতিদিন এক-দুই ঘণ্টা একা দৌড়ানো, কারো সঙ্গে কথা না বলা, কিংবা টানা চার-পাঁচ ঘণ্টা ডেস্কে একা বসে থাকা—আমার জন্য কঠিন বা বিরক্তিকর কোনোটাই নয়। ছোটবেলা থেকেই আমি এরকম—যখনই সময় পেতাম, তখন কারো সাথে সময় কাটানোর পরিবর্তে একা একা বই পড়তে কিংবা একমনে গান শুনতে বেশি পছন্দ করতাম। সবসময়ই আমি নিজের মত করে কিছু না কিছু করার মত খুঁজে নিতে পারতাম।‘’ তিনি আরোও বলেন, ‘’ জীবনে আমি সবসময় তাই করেছি, যা আমি করতে চেয়েছি। মানুষ হয়ত আমাকে থামানোর চেষ্টা করতে পারে কিংবা বোঝাতে পারে যে আমি ভুল করছি, কিন্তু আমি বদলাব না।‘’
লেখক মুরাকামির পাশাপাশি ব্যক্তি মুরাকামিও তাঁর পাঠকদের মুগ্ধ করেন। অনেকেই আছেন যারা তাঁর থেকে উৎসাহিত হয়ে জীবন-যাপনে তাড়াতাড়ি ঘুমানো, তাড়াতাড়ি ওঠা, কিংবা প্রতিদিন ১০, ০০০ স্টেপ হাঁটা, কিংবা কিছুটা দৌড়ানো বা সাঁতার কাটার মত বিষয় যুক্ত করেছেন। এরকম মানুষের মধ্যে আমিও আছি। আছে পরিচিত আরোও অনেকে। তাঁর রিয়েলিস্টিক উপন্যাস ‘নরওয়েজিয়ান উড’ যেমন জীবনের অনেক খোলা সত্য চোখের সামনে তুলে ধরে তেমনিভাবে তাঁর জাদু-বাস্তবতার উপন্যাসগুলো আমাদেরকে বাস্তব ও কল্পনার মাঝামাঝি দাঁড় করায়। তাঁর উদ্ধৃতিগুলো মাথায় ঘুরে বেড়ায়। তিনি আমাদেরকে জ্যাজ মিউজিক ভালোবাসতে শেখান। তাঁর গল্পের বিড়ালদেরকেও আমরা ভালোবাসি। হয়ত ভালোবাসি তাঁর মত একা থাকতে কিংবা মন একটু খারাপ হলেই কোথাও একটু হেঁটে বেড়াই কারণ হাঁটতে হাঁটতে মাথায় কত ধরনের নতুন নতুন ভাবনা আসে—আমরা হাজিরা দেই নিত্যদিনের কাজে হোক সে লেখালেখি, একটু ছবি আঁকা, ১০০০০ স্টেপ হাঁটা কিংবা শুধুমাত্র বেঁচে থাকা।
তথ্যসূত্র
https://harukimurakami.com/author
https://www.bustle.com/articles/188928-15-fascinating-facts-about-haruki-murakami
https://cupblog.org/2013/05/07/haruki-murakami-on-translating-the-great-gatsby/
https://www.thecollector.com/haruki-murakami-facts/
https://www.shortlist.com/news/20-things-you-probably-didnt-know-about-haruki-murakami
Book: ‘What I Talk About When I Talk About Running’ ও ‘Novelist As A Vocation’, ‘Norwegian wood’.