Published : 07 May 2025, 04:39 PM
যুদ্ধাবস্থার মধ্যে ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশকে শান্ত থাকার এবং সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার শোধ নিতে ভারত বুধবার প্রথম প্রহরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। জবাবে পাকিস্তান ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গোলা বর্ষণ করে।
পাকিস্তান বলেছে, ভারতের হামলায় তাদের অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অন্তত দশজন নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে দেশটির পুলিশ।
এ পরিস্থিতিতে পরমাণু অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠলে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ।
বুধবার বাংলাদেশের অবস্থান জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ভারত এবং পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকার।
“এ পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এবং উভয় দেশকে শান্ত থাকার, সংযম প্রদর্শনের এবং পরিস্থিতি ঘোলাটে করে এমন পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।”
বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “আঞ্চলিক শান্তি, প্রগতি এবং স্থিতিশীলতার মনোভাব থেকে বাংলাদেশ আশা করছে, কূটনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে উত্তেজনা কমে আসবে এবং এ অঞ্চলের মানুষের মঙ্গলের স্বার্থেই শান্তি বজায় থাকবে।”
পাকিস্তানে ভারতের হামলার মাধ্যমে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা যে মাত্রায় গেল, তাকে ‘হতাশাজনক’ বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
আর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনার বিষয়ে সতর্ক নজর রাখার কথা বলেছেন।
দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো সামরিক সংঘাতের ভার ‘বিশ্ব বহন করতে পারবে না’ বলে গুতেরেস মন্তব্য করেছেন তিনি।
পাকিস্তানে ভারতের হামলায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন, তারা উত্তেজনা আর না বাড়িয়ে দুই দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ভারত ও পাকিস্তানকে ‘সংযম প্রদর্শন, উত্তেজনা কমানো এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শান্তির জন্য হুমকি হয়ে ওঠে এমন উত্তেজনা’ এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
জাপানের মন্ত্রিসভার মুখ্য সচিব ইয়োশিমা হায়াশি বলেছেন, “গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জোরালো নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। একইসঙ্গে আমরা এ নিয়েও উদ্বিগ্ন যে- হামলা, পাল্টা হামলার মাধ্যমে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে এবং তা পূর্ণমাত্রার সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে আমরা ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি সংযম প্রদর্শন ও সংলাপের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানাই।”
মধ্যপ্রাচ্যের আরেক প্রভাবশালী দেশ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির বুধবার ভারত সফরে যাওয়ার কথা। দিন কয়েক আগে তিনি ইসলামাবাদও গিয়েছিলেন। উত্তেজনা কমাতে ইরান আগেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছিল। এবার ভারত সফরে তার দেশটির প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করার কথা।