Published : 14 May 2025, 09:13 PM
গাজীপুরের কালীগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত আট বছরের একটি শিশুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানতে পেরেছেন, শিশুটি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল।
শিশুটির মায়ের ভাষ্য, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে গাজীপুরের কালীগঞ্জের শশি মার্কেটের পাশে একটি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দেয়ালে ধাক্কা দেয়। সে সময়ে বাসার সামনে শিশুটি আহত হয়। পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান।
অবস্থা গুরুতর হওয়ায় শিশুটির মা মঙ্গলবার রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে তাকে শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি নেওয়া হয়। ওই বিভাগে চিকিৎসার সময়ই তার যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়টি ধরতে পারেন চিকিৎসক।
শিশু সার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সামান্তা বলেছেন, “সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুটির মুখে আঘাত এবং জননাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে পরীক্ষায় দেখা গেল শিশুটি দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার আগে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। বিষয়টি শিশুটির পরিবারকে জানানো হয়েছে। পরে তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি হাসপাতালের ওসিসিকে অবগত করা হয়েছে।”
ওসিসির ভারপ্রাপ্ত কো-অরডিনেটর তাইয়েবা সুলতানা বলেন, “শিশুটির ব্যাপারে আমাদের অবগত করেছেন সংশ্লিষ্ট শিশু বিভাগের চিকিৎসক। আমরা জানিয়েছি, তাদের চিকিৎসা শেষ হলে আমাদের কাছে পাঠানোর জন্য। আমাদের কাছে এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুটি প্রথমে কিছু না বললেও পরে জানিয়েছে একই বাড়িতে বসবাসকারী তারই ৪০ বছর বয়স্ক খালাত ভাই ইয়াছিন তাকে প্রায়ই যৌন নির্যাতন করতেন। সে তার ভয়ে কিছুই বলত না।”
শিশুটির মা বলেন, শিশুটির জন্মের আগেই তারা বাবা তাদেরকে ফেলে চলে যান। তিনি মানুষের বাসাবাড়িতে কাজ করে সংসার চালান।
তিনি বলেন, “আমি কাজের কারণে বেশিরভাগ সময়ে বাইরেই থাকতাম। মেয়েটি কখনো কিছু বলে নাই। ইয়াসিন আমার বোনের ছেলে, সে বিবাহিত। তার স্ত্রী-সন্তান সবাই তাকে ছেড়ে চলে গেছে। সে খুবই খারাপ, তাকে ভয় হয়। সে মাদক খায়।”
তিন ভাই বোনের মধ্যে নির্যাতনের শিকার শিশুটি সবার ছোট।
শিশুটির কিশোর বয়সী বড় ভাই বলেছেন, তারা এ ঘটনা কালীগঞ্জ থানায় জানিয়েছেন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দীন বলেন, “শিশুটির পরিবার তার থানায় এসেছিল। তারা জানিয়েছে, শিশুটি দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তাররা তার যৌন নির্যাতনের বিষয়টি পরিবারকে জবেলেছেন। আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।”