Published : 27 May 2025, 09:45 PM
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের মধ্যে এখনও ৩৩৮ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, “আহত ১৫ হাজার ৩৯৩ জন সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সহায়তা পেয়েছেন। এদের মধ্যে ৩৩৮ জন এখনো হাসপাতালে। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মাধ্যমে ৪০ জন এবং মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও রাশিয়ায় নেওয়া হয়েছে।
“চিকিৎসার জন্য সরকারের ৬১ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আরও ২৮জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও তুরস্কে নেওয়ার কার্যক্রম চলমান আছে।''
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে করা এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ''জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, চীন, মালয়েশিয়া, নেপাল থেকে ২৬ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছেন। তাদের শুধুমাত্র যাতায়াত খরচ দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় ৩৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা।''
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ৮৩৪ ‘শহীদ পরিবারের’ মধ্যে ৬৩০ জনের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ৬৩ কোটি সঞ্চয়পত্রের ব্যাংক চেক দেওয়া হয়েছে। বাকিদের দেওয়া হবে ওয়ারিস সংক্রান্ত বিষয় নিষ্পত্তির পর।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘এ’ ক্যাটাগরির আহত ৪৯৩ জনকে ২ লাখ টাকা করে ৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে।
‘বি’ ক্যাটাগরির ৯০৮ জনকে এক লাখ টাকা করে ৯ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং ‘সি’ ক্যাটাগরির আহত ১০৬৪২ জনকে ১ লাখ টাকা করে ১০৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা চেক দেওয়া হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা, নগদ সহায়তা, নিহতদের পরিবারকে অর্থ প্রদানসহ সরকারের মোট খরচ হয়েছে ২৮৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
চার ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ''ওনারা আদৌ বিষ পান করছেন কিনা সেটা নিয়ে সরকারি পর্যায়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আর দীর্ঘদিন ধরে কেউ চিকিৎসাধীন হলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা হচ্ছে তাদের মানসিক সহায়তা দেওয়ার। তারপরও কারও মধ্যে হতাশা থাকলে সরকারের সংশ্লিষ্টরা দায়িত্বশীল ও যত্নবান হবে এবং তাদের যতবেশি সম্ভব মানসিক সহায়তা দেবেন।''
'আশা করব সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন'
জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকার পরও কিছু জায়গার আন্দোলনে ‘নমনীয়তা’ আর কিছু জায়গায় ‘বাধা দেওয়ার’ কারণ জানতে চাইলে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ''আশা করব সবাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। আইনকে হাতে তুলে নিবেন না এবং কারও দাবি থাকলে সুনির্দিষ্ট অফিসিয়াল বা এজেন্সির কাছে জানাতে পারেন। ''
যুদ্ধাপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের রায়ের বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে, সরকার কোনো কোনো গোষ্ঠীর কাছে নতি স্বীকার করছে।
এ বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, ''আদালতের রায়ের বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।''
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাতের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ''প্রধান বিচারপতি কিছুদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেছেন। সেখানে ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন আছে। ওদের অনেক ট্রানজিশনাল জাস্টিসের ইস্যু আছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়েই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে এসেছিলেন প্রধান বিচারপতি।''
সরকারি কর্মচারী আইন সংস্কারের বিরুদ্ধে সচিবালয়ের কর্মচারীদের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, ''আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। তাদেন কোনো অভিযোগ থাকলে সচিবরা আছেন, তাদের একটি ছোট কমিটিও আছে, তাদেরকে বলতে পারেন। আমরা মনে করি যে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা প্রজাতন্ত্রের নিয়ম-কানুন মেনে চলবেন।”