Published : 01 Aug 2024, 10:53 PM
জামায়াত-শিবির ১৯৭১ সালে যেভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে, তার সঙ্গে কোটা আন্দোলনে সহিংসতার ‘হুবহু মিল’ পাচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
হামলাকারীদের ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসী’ আখ্যায়িত করে তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার কথা বলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে ‘বিএনপি-জামাতের ইন্ধনে মানুষ হত্যা, নৈরাজ্য, অগ্নিসংযোগ ও সরকারি সম্পদ ধ্বংসের’ প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, “যারা দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে তারা কখনো ছাত্র হতে পারে না। তারা ছিল বিএনপি- জামায়াত রাজাকারের দল। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি। তাদের কার্যকলাপে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে।”
২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণা করলে ছাত্ররা চলতি জুলাই মাসের শুরু থেকে ফের মাঠে। ধীরে ধীরে তাদের আন্দোলনের মাত্রা ও ব্যপ্তি বাড়তে থাকে। ১৬ জুলাই সেই আন্দোলন সহিংস রূপ পায়।
এর মধ্যে রামপুরায় বিটিভি ভবন, মেট্ররেলের দুটি স্টেশন, বনানীতে সেতু ভবন, মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাব স্টেশন, মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনেও ভাঙচুর হয়।
পরিস্থিতির অবনতি হলে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েন করা হয় সারা দেশে। দুই দফায় তিন দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলে পুরো দেশ কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
সরকারি হিসেবে এক সপ্তাহের সংঘাতে দেশড় জনের মৃত্যুর তথ্য এলেও সাংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা দুইশর বেশি।
আন্দোলন ঘিরে নাশকতার জন্য জামায়াত ও বিএনপিকে দায়ী করে আসছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, “জামায়াত-বিএনপি, শিবির, ছাত্রদল, স্বাধীনতাবিরোধীরা এত শক্তি কোথা থেকে পেল, এটা আমাদের খুঁজে দেখতে হবে। যেখান থেকেই হোক, যত বড় শক্তিশালী হোক, আইনের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। আর তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আজ উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর করেছেন । তিনি দেশি ও আন্তর্জাতিক সব ষড়যন্ত্র আর নানা প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করে উন্নত-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন।”
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকাল ষড়যন্ত্র মোকাবেলার আহ্বান জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক চেয়ারম্যান হেলাল মোর্শেদ খান, বাংলাদেশ সড়ক ও পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, শ্রমিক লীগের কার্যকরি সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব এমদাদ হোসেন মতিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম সুলতান আহমেদ, আবু সাঈদ, সফিকুর রহমান শহিদ, শাহজাহান আলী, ফরিদুজ্জামান ও সিরাজুল ইসলামসহ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম সমন্বয় পরিষদের নেতৃবৃন্দ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন শেষে ‘হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অগ্নিসংযোগ ও সরকারি সম্পদ ধ্বংসের’ প্রতিবাদে একটি মিছিল জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শুরু করে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।