Published : 02 Jul 2025, 09:43 PM
ঋণের নামে প্রায় ২৭০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে আলোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে।
তার সঙ্গে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারসহ ১৫ জনকে এসব মামলায় আসামি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তাদের বিরুদ্ধে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড (বর্তমানে আভিভা ফাইন্যান্স লিমিটেড) থেকে ঋণের নামে এ পরিমাণ অর্থ লোপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
বুধবার দুদকের সম্বনিত জেলা কার্যালয় ঢাকা ১ এ মামলা তিনটি দায়ের করা হয়।
বাকি আসামিরা হলেন- এস আলমের ভাই আব্দুস সামাদ (এস আলম গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান), পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, পরিচালক শাহানা ফেরদৌস, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ইভিপি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান রাশেদুল হক, ম্যানেজার ও করপোরেট ফাইন্যান্স বিভাগের প্রধান নাহিদা রুনাই, এসভিপি ও ক্রেডিট কমিটির সদস্য কাজী আহমেদ জামাল, সাবেক ডেপুটি ম্যানেজার (করপোরেট ফাইন্যান্স) জুমারাতুল বান্না , মেরিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ, পরিচালক টিপু সুলতান ও মো. ইসহাক। এই ১২ জনকে তিনটি মামলাতেই আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া তিন প্রতিষ্ঠানের তিন স্বত্বাধিকারীকে তিন মামলায় আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম মামলায় মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড কোং এর স্বত্বাধিকারী মো. গোলাম মোস্তাফাকে, দ্বিতীয় মামলায় মেসার্স এ এম ট্রেডিং-এর স্বত্বাধিকারী মো. আবদুল্লাহ আল মামুনকে এবং তৃতীয় মামলায় মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোম্পানির স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক আক্তার বলেন, ''পরস্পর যোগসাজসে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাস ভঙ্গ করে নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণ প্রস্তাব প্রস্তুত ও ঋণ অনুমোদন করে ঋণ প্রদান এবং ঋণের নামে নেওয়া অর্থ আত্মসাৎ ও পরে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্থানান্তরের অভিযোগে মামলা তিনটি দায়ের করা হয়েছে।“
প্রথম মামলায় অভিযোগ করা হয়, ৯৪ কোটি ৬৩ টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয় মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড কোংয়ের নামে। পরে এই অর্থ মেরিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেড ও এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। এটি দায়ের করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান।
দ্বিতীয় মামলার অভিযোগে বলা হয়, মেসার্স এ এম ট্রেডিংয়ের নামে ১০৪ কোটি ২০ লাখ ৭৭ হাজার টাকার ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করা হয়। এরপর সেই অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ঘুরিয়ে শেষ পর্যন্ত এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। এটি দায়ের করেছেন দুদকের উপপরিচালক তাহাসিন মুনাবীল হক।
তৃতীয় মামলায় মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোংয়ের নামে ৭১ কোটি ৫১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একই প্রক্রিয়ায় এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডে স্থানান্তর করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এটি দায়ের করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইসমাঈল।