Published : 11 May 2025, 04:08 PM
আওয়ামী লীগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ, জুলাই সনদ প্রকাশ ও আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবিতে শাহবাগ অবরোধ করেছেন জুলাই আন্দোলনে আহতদের একটি দল।
শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত আসার পর জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি, জামায়াতে ইসলাম, আপ বাংলাদেশসহ জুলাই আন্দোলনে সম্পৃক্ত সংগঠনগুলো শাহবাগ ছেড়ে গেলেও আহতদের এই দলটি অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।
রোববার বেলা আড়াইটার দিকে শাহবাগে তাদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়। এতে আশপাশের সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
তারা বলেছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
জুলাই আন্দোলনে আহত মাসুদ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে স্থায়ী নিষিদ্ধ করতে হবে। জুলাই সনদ প্রকাশ ও আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।”
এসব দাবিতেই মূলত তারা এখনো শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছেন।
সুমন নামের একজন বলেন, “আমি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে ভর্তি ছিলাম। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবির সঙ্গে আমাদের দাবি ছিল জুলাই সনদ প্রকাশ। একটা দাবি মেনে নিল, আরেকটা বলছে ৩০ দিনের মধ্যে করবে।
“নয় মাসে যখন সনদ দিতে পারেনি, তখন ৩০ দিনে কীভাবে দেবে?”
মোহাম্মদ শাকিল বলেন, “আপনারা কেন এখনো আহত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন না? এখনো অসংখ্য আহত হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। এই সরকারকে তাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।”
অভ্যুত্থানে আহতদের এই দলটির শনিবার রাত থেকে শাহবাগে অবস্থান নেওয়ার কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন নুরুল ইসলাম নামের এক আন্দোলনকারী।
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা আর আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা এক জিনিস নয়। এটা সরকার মুলা ঝুলাইছে। তাই, আমরা আমাদের দাবি আদায়ে মাঠে আছি।”
এর আগে সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের দেশত্যাগের খবর নিয়ে আলোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ডাকে সরকারপ্রধানের বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নেন একদল বিক্ষোভকারী।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ডাকা এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম ও বৈষম্যবিরোধী অভ্যুত্থানে সম্পৃক্ত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শুক্রবার জুমার পর তারা মিন্টো রোডের প্রবেশ মুখে মঞ্চ বানিয়ে সেখানে সমাবেশ করেন। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে তাতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।
সেখান থেকে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা দেওয়ার পর বিকাল থেকেই বিক্ষোভকারী শাহবাগে অবস্থান নেন।
শনিবার বিকালে সেখানে গণজমায়েত থেকে আবারও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।
শাহবাগে গণজমায়েত কর্মসূচি চলার মধ্যে মিরপুর সড়কের শিশুমেলা মোড়ে সড়ক অবরোধ করেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা।
শনির আখড়াতেও একই দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা।
রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক থেকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত আসে।