Published : 27 May 2025, 12:24 AM
জুলাই অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার যেমন দেশ হাতে পেয়েছিল, তা যেন ‘তেমনি রয়ে না যায়’, তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভায় তিনি বলেন, ‘জনগণকে নির্বাচনমুখী করতে হবে। কেউ যেন ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিতে না পারে, সেই বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করতে হবে। শৃঙ্খলা আনতে হবে; জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিরাপদ ভোটের আয়োজন করতে হবে।
“এত বড় অভ্যুত্থানের পর যে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছিলাম, এটা যেন তেমন বাংলাদেশই রয়ে না যায়।'
মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এ সভা হয় বলে তার কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনা ও অগ্রগতি সম্পর্কে কমিশনের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করেন।
সভায় অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনে অনিয়মে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঐকমত্য কমিশন আগামী জুনের প্রথম সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে। এ আলোচনার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
কমিশনের প্রথম দফা আলোচনা শেষ হয় ১৯ মে।
সভায় কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, এ বিষয়ে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যেই ঐকমত্য প্রকাশ করেছে।
কমিশন সদস্য আইয়ুব মিয়া অবিলম্বে জনপ্রশাসন সংস্কার বাস্তবায়ন কমিশন গঠনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে এনাম কমিশন বিভিন্ন সরকারি সংস্থার যে অরগানোগ্রাম তৈরি করেছিল, সেটাই এখনো রয়ে গেছে। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সংস্থা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে এবং নতুন অনেক সংস্থা গঠন করা হয়েছে। এ কমিশন গঠন করা হলে এই অরগানোগ্রামগুলো পুনর্গঠন করা যাবে।
তিনি বলেন, এনবিআর সংস্কারে জনপ্রশাসন কমিশনের সুপারিশ ছাড়া আরও দুটি কমিশন কাজ করেছে, যার ফলে এক ধরনের সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়েছে।
বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি এমদাদুল হক রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি নিয়োগে যে কমিশন গঠন করা হয়েছে, তা যেন স্বচ্ছভাবে কাজ করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে আহ্বান জানান।
দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন প্রতিনিধি ইফতেখারুজ্জামান প্রাথমিকভাবে গঠিত ছয়টি কমিশনের বাইরে গণমাধ্যম, শ্রম, স্থানীয় সরকার, নারী ও স্বাস্থ্য বিষয়ক যে সংস্কার কমিশনগুলো হয়েছে, সেগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের আহ্বান জানান।
নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশন প্রধান বদিউল আলম মজুমদার ২০০৮ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য প্রণীত খসড়া প্রস্তাবটি অধ্যাদেশ আকারে প্রকাশের আহ্বান জানান।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি সফর রাজ হোসেন।