Published : 05 Jun 2025, 10:38 PM
কোরবানির ঈদ উদযাপনে পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে হবিগঞ্জ যাচ্ছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা রাসেল আহমেদ; মাধবদী, নরসিংদী, ইটাখোলায় ছোট ছোট যানজট পেরিয়ে গেলেও তার ভোগান্তি চরমে ওঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে।
বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে রাসেল বলেন, ব্যক্তিগত গাড়িতে আশুগঞ্জে পৌঁছানোর পর তার ৫ কিলোমিটার রাস্তা পার হতে লেগে গেছে দুই ঘণ্টার বেশি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত প্রায় সময়ই চরম যানজট লেগে থাকে।
“এই জায়গার রাস্তা বছরের পর বছর একইরকম খানাখন্দে ভরা দেখি। রাস্তার সংস্কার চলছে তো অনেক দিন ধরে। এই কাজ কবে শেষ হবে।”
এদিন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট যাচ্ছিলেন সাইফুল জার্নাল ও আজমাইন আজাদ কথা দম্পতি ও তাদের মেয়ে হীরামন। আশুগঞ্জ পার হওয়ার পর দুই জায়গায় যানজটে তাদের দেড় ঘণ্টার বেশি সময় গেছে বলে জানান সাইফুল।
আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত অন্তত ১০ কিলোমিটারে এমন ভোগান্তি নিত্যদিনের। তবে ঈদের আগে সেই দুর্ভোগ ওঠে চরমে।
বাসচালক, যাত্রী ও পুলিশ বলছে, আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটার ফোর লেইন এবং বিশ্বরোড থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশের মাধবপুর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার অংশে ছয় লেইনের নির্মাণ কাজ চলছে। এর সঙ্গে রাস্তার পাশে গাড়ি রাখা ও থ্রি-হুইলারের অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণে তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে।
সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ওসি মো. মামুন রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ও সড়কটিতে যানজট লেগে ছিল।
“আশুগঞ্জ থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত ১২ দশমিক ২১ কিলোমিটার। এ অংশ জুড়ে আছে খানাখন্দ ও ছোট-বড় গর্ত। এর কারণে যানজট থাকে। আর সিএনজি, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন গাড়ি উল্টো দিকে চলাচলের কারণেও যানজট হয়।”
লাবিবা বাসে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাচ্ছিলেন সোলায়মান সুমন। তিনি বলেন, সড়কটিতে মাঝে মাঝে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে।
একদিন আগেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শহরতলীর বিরাসারে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে গ্যাস সিলিন্ডারবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে তাতে আগুন ধরে যায়। এরপর একের পর এক সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়।
এ দুর্ঘটনার কথা স্মরণ করে সুমন বলেন, “সড়কের খানাখন্দ ঠিক করা না হলে আরও বড় কোনো দুর্ঘটনা হতে পারে। এই সড়কে আমরা যাতায়াত করি মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে। বছরের পর বছর রাস্তা সংস্কারের নামে এই সড়ক কেটে রাখা হয়েছে। কিন্তু ঠিক করা হচ্ছে না।”
বেহাল সড়কে ঈদযাত্রায় ভোগান্তিতে পড়ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, সুনামগঞ্জের ঘরমুখো মানুষেরা।