Published : 20 Oct 2024, 10:03 PM
দেশে ধান কাটার মৌসুমের মত এখন ‘দাবি-দাওয়ার মৌসুম’ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
রোববার রাজধানীতে একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পল্লী বিদ্যুৎ খাতে সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের একীভূতকরণ এবং চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের (আউটসোর্সিং) চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল সমিতিগুলো।
সব শেষ গেল বৃহস্পতিবার দুই দফা দাবি বাস্তবায়নে ১২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সমিতিগুলো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ শুরু করে।
পরে সেদিন বিকালে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেখানে আশ্বাস পাওয়ার পর রোববার পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়।
ওই প্রসঙ্গ ধরে বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এখন একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছি। কেউ দাবি-দাওয়া করলে আমরা এটাতে কিন্তু ‘না’ করি না।
“আপনারা দেখেছেন যে ধান কাটার মৌসুমের মত এখন দাবি-দাওয়ার মৌসুম। সবাই কিন্তু রাস্তায় বসে যাচ্ছে। এখন কথা হচ্ছে, আপনি দাবি করলেই যে দাবি মেনে নেওয়া হবে এটার তো কোন কারণ নাই।”
উপদেষ্টা বলেন, “এখন আরইবি এবং পিবিএস একীভূত করতে গেলে যে প্রশ্ন আগে আসবে, কেন আলাদা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের পল্লীবিদ্যুত কর্মসূচি একসময় বিশ্বব্যাপী সমাদৃত কর্মসূচি ছিল। তরুণ অফিসার হিসেবে আমরা যখন বিশ্ব ব্যাংকে যেতাম, সবাই এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করত।”
দাবি মানায় তাৎক্ষণিক আল্টিমেটাম নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এই যে আউটসোর্সিং, এটা শুধু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে নাই, এটা সরকারের সব জায়গায় আছে। এটা স্থায়ী করতে গেলে এটার সঙ্গে আর্থিক সংশ্লেষ আছে। এগুলো তো বিচার-বিবেচনা করতে হবে।
“চাইলেই দাবি মেনে নেওয়া হবে, এটা মনে করার কোনো কারণ নাই। কিন্তু, আমরা বলিনি যে আমরা এ দাবিগুলো দেখব না কিংবা বিবেচনা করব না। কিন্তু এখনই ঘোষণা দিতে হবে, এটা তো কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।”
সারাদেশে বেশ কয়েক ঘণ্টা ‘ব্ল্যাক আউট’ কর্মসূচি পালনের সমালোচনা করে ফাওজুল কবির খান বলেন, “তারা সাব-স্টেশন বন্ধ করে দিয়েছে। এটা তো আপনার বাসা-বাড়ির সুইচ না, যে আপনি ইচ্ছা করলেন আপনার এখন বাতির দরকারে নাই, আপনি বন্ধ করে দিলেন।
“অনেকেই সরকারকে দুর্বল ভাবে। ভাবে যে সরকারকে চাপ দিলে যা কিছুই বলা হবে, মেনে নেওয়া হবে। আসলে সেটা না।”
সরকার ‘শক্ত আছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটাই একমাত্র সরকার, যেটার জন্য হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ দিয়েছেন এবং ৩০ হাজারের মত লোক চিকিৎসাধীন আছে। সুতরাং এটা কারো মনে করার অবকাশ নাই যে এটা দুর্বল সরকার। এর থেকে বড় ম্যান্ডেটের সরকার... এই সরকারকে শুধু ৭১ সালের সরকারের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। অন্য যে কোনো সরকারের থেকে এ সরকার অনেক বেশি শক্ত।”
আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পল্লী বিদ্যুতে যারা আন্দোলন করছেন তারা যদি কাজ না করতে চায়, না করুক। আমাদের বিকল্প লোক রেডি আছে। বিদ্যুৎ সেবা জরুরি জনসম্পৃক্ত বিষয়, কোনোভাবেই আমরা ব্যত্যয় হতে দেব না।”