Published : 24 May 2025, 07:16 PM
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে বিভিন্ন উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবির প্রেক্ষিতে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, কাউকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি ‘সমীচীন হবে না’।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে উপদেষ্টা পরিষদ ‘অনির্ধারিত’ বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টার পদত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, “যখন আমার সম্বন্ধে বলা হয়েছে, আমি জানতে চেয়েছি, এটা কি দলীয়ভাবে এরকম কথা বলা হয়েছে কি না? মনে হচ্ছে এবং আমাকে জানানো হবে, এটা কোনো দলীয় মতামত নয়। যদি দলীয় মতামত হত, তাহলে কারণ…এই সরকার তো সকল গণঅভ্যুত্থানের স্বপক্ষের সকল শক্তির সমর্থনেই এই সরকার হয়েছে এবং এই সরকারের ভিত্তিই সেটা।
“সেখানে বিতর্ক সৃষ্টি হোক কাউকে নিয়ে, তাহলে তো সমীচীন হবে না।”
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে শপথ পড়ানোর দাবিতে এক সপ্তাহ আগে নগর ভবনের সামনে লাগাতার আন্দোলন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করা হয়। ইশরাকও পরে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন।
এর পাল্টায় পরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে ‘বিএনপির মুখপাত্র’ আখ্যায়িত করে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন।
ইশরাককে মেয়র করার আন্দোলন নিয়ে দুই দলের বাদানুবাদ ও পাল্টাপাল্টি উপদেষ্টাদের পদত্যাগ দাবির মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে যে আলোচনা শুরু হয় তার মধ্যেই সেনানিবাসে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে কথা বলেছেন বলে খবরে এসেছে।
পরে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন উঠে এবং তিনি পদত্যাগের কথা ভাবছেন বলে তার সঙ্গে দেখা করে আসার পর বিবিসি বাংলাকে বলেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
হঠাৎ তৈরি রাজনৈতিক এমন অস্থিরতার মধ্যে শনিবার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে উপদেষ্টা পরিষদ ‘অনির্ধারিত’ বৈঠকে বসে; যেখানে নির্বাচন, সংস্কার এবং জুলাই ঘোষণা নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে বিফ্রিংয়ে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। বলেন, “উনি তো চলে যাবেন- বলেননি। উনি বলেছেন যে, ‘আমরা যে কাজ করছি, আমাদের উপরে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সে দায়িত্ব পালনে অনেক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে; কিন্তু আমরা সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে আমাদের অর্পিত দায়িত্ব, এটা তো বড় দায়িত্ব, এটার ওপর নির্ভর করছে ভবিষ্যৎ, বহুবছরের ভবিষ্যৎ, এ দায়িত্ব ছেড়ে তো আমরা যেতে পারব না’।”
পরে উপদেষ্টা পরিষদের পাঁচজনের (এনসিপির তরফে তিনজন ও বিএনপির তরফে দুইজন) পদত্যাগ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে জবাবে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “সেরকম কিছু যদি হতোই তাহলে তো…আমরা তো কেউ স্বপ্রণোদিতভাবে আসিনি এবং এই দায়িত্ব খুব উপভোগ্য কোনো দায়িত্বও না। কাজেই সেরকম কিছু হলে তো আমরা যে কেউই পদত্যাগ করতে পারতাম।”
তার পদত্যাগ চাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, “আমাকে বলা হয়েছে, আসলে দলীয়ভাবে কোনো কথা আসেনি বরং তার উল্টোটাই হবে যতটুকু জানতে পেরেছি।”