Published : 04 Nov 2024, 12:00 PM
ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে ভেঙে পড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি ঠিক করতে আরও সময় চেয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, “যেহেতু আপনারা জানেন- ঢাকার প্রায় সব পুলিশকে আমরা চেঞ্জ করছি। তাদের কিন্তু অলিগলি চিনতেও সময় লাগবে। তাদের ইন্টেলিজেন্স নেটওয়ার্ক করতে সময় লাগবে।
“বিজিবিতেও অনেক চেঞ্জ করছে। এজন্য একটু সময় লাগতেছে, তবে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে। সামনের দিকে আরও উন্নতি হবে।"
সোমবার সকালে ঢাকার পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিনই হামলা চালানো হয় থানাসহ পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায়। লুটপাট-ভাংচুর করে আগুন দেওয়া হয়। হামলা হওয়া থানাগুলোতে ধ্বংস হয়ে যায় মামলার নথি, আলামতসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সবকিছু।
এরপর পুলিশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে সংস্কারের উদ্যোগের মধ্যে ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুতি করাসহ শুরু হয় ঢালাও বদলি। বিশেষ করে ঢাকার শীর্ষ পদ থেকে শুরু করে একেবারে কনস্টেবল সদস্যদের বদলির উদ্যোগ নেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের থেকে একটু উন্নতি হয়েছে, কিন্তু আরও উন্নতি হওয়া যায়। খুব একটা সন্তোষজনক পর্যায়ে চলে গেছি তা না।
“এখন যদি বলেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন? জাস্ট সন্তোষজনক; কিন্তু এটা আরও ভালো হওয়া দরকার।"
বিজিবিকে এক গুচ্ছ নির্দেশনা দেওয়ার কথা তুলে ধরে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “জনগণের সাথে একটা সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক যেন বজায় রাখে; বিজিবির যেহেতু বর্ডারভিত্তিক কাজ করতে হয়, জনগণের সাথে একটা সুসম্পর্ক রাখতে হয়।
“জনগণের সাথে সুসম্পর্ক রাখলেই কাজ করতে সুবিধা হয়। তারাই কিন্তু বিভিন্ন ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করে।"
সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদকের প্রবেশ ঠেকানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন সীমান্ত দিয়ে অনেক সময় ফেনসিডিলসহ অন্যান্য চলে আসে; কোনো অবস্থায় যেন না আসে।
“এগুলো আমাদের জাতির অনেক অনেক ক্ষতি করছে।"
অপরাধী ‘প্রতাপশালী' হলেও ছাড় পাবে না বলে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর বলেন, “ক্রিমিনাল যেই হোক না কেন, যতো প্রতাপশালীই হোক, তাকে কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া যাবে না।
“আগে অনেক সময় প্রতাপশালী ক্রিমিনালরা পার পেয়ে যেত, এখন কোনো অবস্থাতেই পার পাবে না।"
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবির ভূমিকা কী- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “অনুপ্রবেশ নিষেধ। কিন্তু মানবিক একটা দিক রয়েছে। ওই বেল্টে আপনারা জানেন সারাদিনই গোলাগুলি হচ্ছে। এদের কিন্তু আবার পাঠিয়ে দেওয়া হয়, খুব একটা বেশি রোহিঙ্গা কিন্তু ঢুকতে পারে না।
“আমাদের ১২ লাখ রোহিঙ্গা আছে, এখন ১৩ লাখের মতো হয়ে গেছে। কিছু ঢুকছে আমিও অস্বীকার করি না। তাদের আবার পাঠায়ে দেব।”
জাপা কার্যালয়ে আগুনের বিষয় ‘জানা নেই’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ দলের নেতাদের নামে হওয়া মামলা প্রত্যাহার এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে শনিবার ঢাকায় সমাবেশ এবং বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছিল দলটি।
বৃহস্পতিবার এই কর্মসূচি ঘোষণার কিছুক্ষণ বাদে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কয়েকটি ভবন পরেই রমনা থানা ভবন। এ ঘটনায় ‘পুলিশের নীরব' ভূমিকা নিয়ে পরদিন প্রশ্ন তোলেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর বলেন, “এ মুহূর্তে এটা আমি জানি না। এজন্য উত্তরটা আমি দিতে পারব না। আমি গিয়ে দেখব।"