Published : 28 May 2025, 12:42 AM
সাদাকালো একটা ছবি, মুখে চাপ দাড়ি, মাথায় ব্যাকব্রাশ চুল।
২৪ বছর আগে দেশের ‘শীর্ষ সন্ত্রাসীর’ তকমা পাওয়া সুব্রত বাইনের এরকমই একটা ছবি একসময় ঘুরেফিরে ছাপিয়েছে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো।
তবে ছবির সঙ্গে যেসব কর্মকাণ্ডের খবর ছাপানো হতো, তা ছিল সবই ‘চমকপ্রদ’ আর ‘চটকদার’।
নেপালে ও ভারতে সুব্রত বাইন গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে খবর বেরিয়েছিল এক যুগ আগেই। সেই গ্রেপ্তারের পর অবশ্য তার একটা রঙিন ছবি যুক্ত হয় ইন্টারপোল ও পুলিশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায়।
নানা মুখরোচক সব গল্পের সেই সুব্রত বাইনকে এবার বাংলাদেশ থেকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে সেনাবাহিনী। সঙ্গে তার বহু বছরের সহযোগী মোল্লা মাসুদও আছে; আছে দুই তরুণ সহযোগীও।
এর আগে ১৯৯৭ সালে ঢাকা মহানগর ডিবির আলোচিত কর্মকর্তা এসি আকরাম গ্রেপ্তার করেছিলেন সুব্রতকে।
মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে সংবাদ সম্মেলনে তাদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। এর আগেই অবশ্য কুষ্টিয়া থেকে সুব্রত বাইনের গ্রেপ্তারের খবর চাউর হয়।
আইএসপিআর বলছে, মঙ্গলবার ভোরে কুষ্টিয়ায় অভিযান চালিয়ে ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একটি ইউনিট সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের ভিত্তিতে ঢাকার হাতিরঝিল থেকে ধরা হয় ‘শ্যুটার’ আরাফাত ও শরীফকে।
বিভিন্ন দেশের পুলিশ সংস্থার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ইন্টারপোলের রেড নোটিসের তালিকায় এখনো ঝুলছে সুব্রত বাইনের নাম, সঙ্গে সেই সাদাকালো ছবিটি। পাশাপাশি অবশ্য রঙিন দুটি ছবিও যুক্ত হয়েছে।
সুব্রত বাইনকে মঙ্গলবার বিকালে সেনাবাহিনীর ব্রিফিংয়ে দেখা গেল মুখে লম্বা সাদা দাড়ি, পরনে টি-শার্ট আর লুঙ্গি। সুব্রত বাইনের এ চেহারা আগে দেখা যায়নি।
পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, সুব্রত বাইন তার পিতৃপ্রদত্ত নাম; তিনি খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারী। তবে দীর্ঘ পলাতক জীবনে ভারতে থাকা অবস্থায় তিনি পরিচয় পাল্টে ফতেহ আলী ওরফে দাদাভাই নাম নিয়ে অপরাধ জগতের যোগাযোগগুলো রক্ষা করছিলেন। মুসলিম পরিচয় ধারণ করার পর থেকেই দাড়ি রাখতে শুরু করেন সুব্রত।
ঢাকার মগবাজারকেন্দ্রিক এই সন্ত্রাসী এক সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন সন্ত্রাসীদের একটি মোর্চা, যা গণমাধ্যমে ‘সেভেন স্টার’ বাহিনী হিসেবে পরিচিতি পায়। তাদের দ্বৈরথ ছিল তখনকার শীর্ষ সন্ত্রাসী লিয়াকত-মুরগীমিলনদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ‘ফাইভ স্টার’ বাহিনীর সঙ্গে।
আশির দশক থেকে ঢাকায় অপরাধবিষয়ক সাংবাদিকতা করে আসা পারভেজ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তখন দৈনিক কাগজে প্রতিদিনই এদের কিছু না কিছু কর্মকাণ্ড ছাপা হতো।
“দুই গ্রুপের দ্বৈরথ, চাঁদাবাজির জন্য নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া, ভয় দেখাতে গুলি ছোঁড়া এবং হত্যাকাণ্ড— এসব অনেকটা নৈমিত্তিক হয়ে উঠেছিল।”
ইন্টারপোলের রেড নোটিসের তথ্য বলছে, সুব্রত বাইনের জন্ম ১৯৬৯ সালে। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল। তিনি বাংলা ও হিন্দিতে অভ্যস্ত। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য রাখার অভিযোগ আছে।
আর বাংলাদেশ পুলিশের ওয়ান্টেড তালিকায় সুব্রতর বিষয়ে বলা হয়েছে, তার গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়ায়। ঢাকার মালিবাগ, মগবাজারের মধুবাগ, মীরবাগ ও টঙ্গীর তিনটি ঠিকানা তার বর্তমান ঠিকানা হিসেবে পুলিশের তালিকায় লেখা রয়েছে। মীরবাগের ঠিকানার সঙ্গে নাম রয়েছে ফতেহ আলী হিসেবে।
উত্থানপর্ব
নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্ত্রীর বিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে সুব্রত বাইনকে নিয়ে অপরাধ জগতে নানা ‘মুখরোচক’ গল্পও প্রচলিত রয়েছে।
কী করে তিনি জড়ালেন অপরাধ জগতে— জানতে চাইলে সাংবাদিক পারভেজ বলছেন, “আশির দশকে তরুণ বয়সেই অপরাধ জগতে জড়ান সুব্রত বাইন। তার বাবা ছিলেন তৎকালীন টিএন্ডটির (বর্তমানে বিটিসিএল) কর্মচারী; নাম বিপুল বাইন।
“মগবাজার এলাকায় টিএন্ডটি কলোনিকেন্দ্রিক তার আবাস ছিল। ওই এলাকারই ‘জঙ্গি গ্রুপ’ বলে একটি অপরাধী গোষ্ঠীর সঙ্গে তার প্রথম ওঠাবসা ছিল। নব্বইয়ের দশকটা হচ্ছে এদের উত্থানকাল।”
সেই সময়কার অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদক বর্তমানে দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক কামরুল হাসান তার ‘আষাঢ়ে নয়’ ধারাবাহিকে লিখেছেন, “১৯৯১-এর নির্বাচনে তিনি বিএনপির হয়ে মগবাজার এলাকায় কাজ করেন সুব্রত বাইন। এতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর খুব কাছের লোক হয়ে যান। মগবাজারের মধুবাগ মাঠে একবার তার জন্মদিনের উৎসবও হয়। ওই উৎসবে বিএনপির অনেক নেতা হাজির হওয়ার পর সুব্রত বাইন রাতারাতি তারকা সন্ত্রাসী বনে যান।
“১৯৯৩ সালের দিকে মধুবাজার বাজারে সবজিবিক্রেতা খুন হলে পুলিশের তালিকায় নাম ওঠে সুব্রত বাইনের। এর কিছুদিন পর মগবাজারের বিশাল সেন্টার নির্মাণের সময় চাঁদাবাজি নিয়ে গোলাগুলি হয়। এর পরই সুব্রত বাইনের নাম গণমাধ্যমে চলে আসে। সুব্রত বাইন পরে বিশাল সেন্টারের দোকান মালিক সমিতির নেতাও হন। সেই পরিচয়ে চাঁদাবাজি শুরু করেন।”
কামরুল হাসান লিখেছেন, “সে সময় যুবলীগের লিয়াকত মগবাজার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতেন। লিয়াকতের কবল থেকে এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে বিএনপিপন্থীরা সুব্রতকে সমর্থন দেন। এরপর ১৯৯৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ট্রিপল মার্ডারে নেতৃত্ব দেন সুব্রত। এ ছাড়া মগবাজারের রফিক, সিদ্ধেশ্বরীর খোকনসহ বেশ কয়েকজন তার হাতে খুন হন।
“ওই সময় রমনা, মগবাজার, কারওয়ান বাজার ও মধুবাগ এলাকায় গোলাগুলি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। অবস্থা এমন হয়েছিল যে হতাহতের খবর না পেলে পুলিশও ঘটনাস্থলে যেত না। এভাবে খুব অল্প সময়ে রাজধানীর দক্ষিণাংশের একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে সুব্রত বাইনের হাতে। সুব্রতর বিরুদ্ধে সে সময় কমপক্ষে ৩০টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে আগারগাঁওয়ে জাসদ ছাত্রলীগের নেতা মুরাদ খুনের ঘটনায় তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হয়।”
সাংবাদিক পারভেজ খান বলছেন, “এদের মূল কাজ ছিল কন্ট্রাক্ট কিলিং। এরা অস্ত্র বেচত, ভাড়াও দিত। তখন ঢাকায় মাদক হিসেবে ফেন্সিডিলের খুব চল ছিল। এরা সেই ব্যবসাও করত। চাঁদাবাজি তো আছেই।”
মৌচাক এলাকায় এক সময় চশমার দোকান করতেন, এরকম এক ব্যবসায়ী বলছেন, “সুব্রত বাহিনীর অত্যাচারে বিশাল সেন্টারের কনস্ট্রাকশন দোতলা পর্যন্ত হয়ে থেমে যায়। দেদার চাঁদাবাজি করত তারা। তখন টিএন্ডটি ফোনে আসতো তাদের হুমকি আর চাঁদা দাবির কলগুলো। লোক মারফত চিঠি বা চিরকুটও পাঠানো হতো। কখনো সশরীরে এসে সুব্রতর নামে চাঁদা দাবি করে হুমকিও দিয়ে যেত তারা। রমনা থানায় খোঁজ নেন, অসংখ্য জিডি পাবেন তার নামে। তবে বেশির ভাগই দেনদরবার করে টাকা দিয়ে বা নেতাদের মাধ্যমে রফা করতে চাইতেন।”
সাংবাদিক পারভেজ খান বলছেন, “এদের চাঁদাবাজির যন্ত্রণায় মগবাজার এলাকায় বিশাল সেন্টারসহ কয়েকটি মার্কেটে ব্যবসাই জমেনি।”
প্রথমবার গ্রেপ্তার
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর সুব্রত কিছুটা চাপে পড়েন বলে তখনকার অপরাধ বিষয়ক প্রতিবেদকরা জানাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ আমলেই প্রথম গ্রেপ্তার হন সুব্রত।
কামরুল হাসান তার ধারাবাহিকে লিখেছেন, “১৯৯৭ সালে নয়াপল্টন এলাকার একটি হাসপাতাল থেকে গোয়েন্দা পুলিশের এসি আকরাম হোসেন গ্রেপ্তার করেন সুব্রত বাইনকে। বছর দেড়েক জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে যান। সুব্রত জেলে থাকার সময় তার প্রথম স্ত্রী লুসি তার গ্রুপেরই এক যুবকের প্রেমে পড়েন। জেল থেকে বেরিয়ে ঘটনা জানার পর সুব্রত নিজেই লুসিকে সেই যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেন।”
এরপরেও সুব্রত আরও দুটি বিয়ে করেছেন। পুলিশের প্রতিবেদনগুলো বলছে, সুব্রত দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন সুইটি। তার সঙ্গেও তার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে থাকা অবস্থায় মুসলিম পরিচয়ে আরেক মুসলিম নারীকে বিয়ে করেন তিনি।
ফাইভ স্টার-সেভেন স্টারের দিনগুলো
সাংবাদিক পারভেজ খান বলছেন, “লিয়াকত, মুরগি মিলন, সিদ্ধেশ্বরীর রাসু- এদের ফাইভস্টার গ্রুপের পাল্টায় সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদরা গড়ে তোলেন সেভেন স্টার গ্রুপ। নিত্যদিনই ছিল এদের মারামারি-কাটাকাটি। প্রায়ই এই দুটো গ্রুপের মধ্যে মারামারি, গোলাগুলি, খুনোখুনি হতে লাগল। লিয়াকতদের আস্তানা ছিল ঢাকার ইসকাটন কেন্দ্রিক। আর সুব্রত বাইনরা ছিল মগবাজার কেন্দ্রিক। কাছাকাছি হওয়ায় গ্যাঞ্জাম লাগত বেশি।”
তখন লিয়াকত-মুরগী মিলনদের পৃষ্ঠপোষকতা দিতেন যুবলীগ নেতা হেমায়েত হোসেন আওরঙ্গ। বিপরীতে সুব্রত বাইনরা বিএনপির নেতাদের কাছে পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছেন বলে আলোচনা ছিল।
শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় নাম
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালের ২৫ ডিসেম্বর সরকার ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম এবং তাঁদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করে। এ তালিকায় প্রথম নামটাই ছিল সুব্রত বাইনের।
পুলিশের একটি প্রতিবেদন বলছে, ২০০০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতপাড়ায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মুরগি মিলনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম আসে সুব্রতর সেভেন স্টার গ্রুপের।
এরপর শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় নাম ওঠার পর সুব্রত ঢাকা ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গে ঘাঁটি গাড়েন। পশ্চিমবঙ্গে কলকাতা ও নদীয়ায় ঘুরেফিরে থেকেছেন তিনি। মুসলিম পরিচয়ে নদীয়ায় বিয়েও করেন। সেখানে বাড়ি, ফার্ম হাউজসহ বেশ সহায়সম্পদের মালিকও হয়েছেন তিনি, যেগুলোর টাকার ঢাকা শহরের চাঁদাবাজি থেকে আসা বলে ধারণা পুলিশের।
পুলিশের সূত্র বলছে, ভারতের নাগরিক হিসেবে সিঙ্গাপুর ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণও করেছেন সুব্রত।
নেপালে সুড়ঙ্গ কেটে পলায়ন
কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স সেখানকার কারাইয়া থেকে ২০০৮ সালের ১৩ অক্টোবর সুব্রতকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে কলকাতায় অস্ত্র ও অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলাও হয়। ওই মামলায় ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার গা ঢাকা দেন সুব্রত।
ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর আবার সুব্রতকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স। ধাওয়া খেয়ে সুব্রত বাইন নেপাল সীমান্তের কাকরভিটা শহরে ঢুকে পড়েন, তার পিছু নেন কলকাতা পুলিশের দুই কর্মকর্তা। সেখানকার পুলিশ তিনজনকেই গ্রেপ্তার করে।
এর এক সপ্তাহ পর ভারতীয় দূতাবাসের হস্তক্ষেপে ছাড়া পান পুলিশের দুই কর্মকর্তা। সুব্রত রয়ে যান পূর্ব নেপালের ভদ্রপুর কারাগারে। এরপর তাকে নেওয়া হয় নেপালের ঝুমকা কারাগারে।
২০১২ সালের ৮ নভেম্বর ঝুমকা কারাগার থেকে ৭৭ ফুট সুড়ঙ্গ কেটে পালিয়ে যান সুব্রতসহ ১২ জন। ২৭ নভেম্বর কলকাতার বৌবাজারের একটি বাসা থেকে সুব্রতকে গ্রেপ্তার করে ভারতীয় পুলিশ। ফতেহ আলী নাম নিয়ে ছদ্মবেশে তিনি সেখানে অবস্থান করছিলেন।
‘পুশব্যাক’ হয়ে দেশে
এরপর থেকে সুব্রত ভারতের কারাগারেই অবস্থান করছিলেন। তবে দুই বছর আগে তাকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পুশব্যাক করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেয় বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর আসে।
খবরে বলা হয়, এরপর থেকে তিনি বাংলাদেশের গোপন কারাগারে ছিলেন, যা আয়নাঘর নামে পরিচিত। ৫ অগাস্টের পট পরিবর্তনের পর আয়নাঘর থেকে মুক্তি পান সুব্রত বাইন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “দুবছর আগে ভারতের জেলখানা থেকে ছাড়া পায় সুব্রত বাইন। এরপর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গোপনে পুশব্যাকের মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে তুলে দেয়। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে এ হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালত হয়ে কারাগারে পাঠানোর কথা। কিন্তু সুব্রত বাইনকে সরাসরি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গোপন বন্দিশালায় নিয়ে যাওয়া হয়।”
গত ৫ অগাস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ অগাস্ট সুব্রত বাইন কারাগার থেকে মুক্তি পান বলে ‘আমাদের সময়ের’ খবরে বলা হয়।
ছাড়া পেয়ে আবারও আগের মতো তৎপরতা শুরু করেন বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়।
গত ১১ অক্টোবর দৈনিক প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, “সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মগবাজারের বিশাল সেন্টারে দলবল নিয়ে মহড়া দিয়েছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন। একটি দোকান দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। পরে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ডেকে কথা বলেছেন। এ নিয়ে সেখানকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।”
সুব্রত বাইন কী করতে চান, তার অস্ত্রভাণ্ডারের উৎস কী এসব নিয়ে কোনো প্রশ্নের জবাব সেনা সদর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া হয়নি। কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশের তদন্তে এই বিষয়গুলো বেরিয়ে আসবে।
আরও পড়ুন
সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ গ্রেপ্তার কুষ্টিয়ায়, বাকি দুজন হাতিরঝিলে
সুব্রত বাইন গ্রেপ্তার: দেড় মাস আগে বাসায় ওঠেন ব্যবসার কথা বলে, থাকতেন নারীও