Published : 03 Oct 2024, 10:10 PM
ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নিয়ে যারা উধাও হয়ে গেছে, তারা যেন আদালতে আইনি লড়াই চালাতে না পারে, সেই দাবি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দেখা করেছেন ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস-বিএবির নেতারা।
বৃহস্পতিবার বিকালে অর্থ মন্ত্রণালয়ে এই বৈঠক শেষে বিএবি সভাপতি আব্দুল হাই সরকার সাংবাদিকদের বলেন, “যারা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে তারা যেন কোর্টে প্রতিনিধি পাঠাতে না পারে৷ পলাতকদের কোনো অধিকার নেই কোর্টে তাদের প্রতিনিধি পাঠানো৷ তাদের এই সুযোগ বন্ধ করার বিষয়ে আমরা সরকারকে প্রস্তাব করেছি৷”
অর্থ উপদেষ্টা যখন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন, তখন ঢাকা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএবির শীর্ষ পদে আসা আবদুল হাই।
তিনি বলেন, “উনার সময় তো ব্যাংকগুলো কত সুন্দর চলছে! স্মুথ ছিল৷”
আওয়ামী লীগ শাসনামলের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যখন থেকে সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের ‘অন্যায় আদেশ’ করা হত, সেগুলো মানতে গিয়েই তো ব্যাংকগুলো সমস্যায় পড়ে গেছে৷ শেষ মুহূর্তে এসে এই অবস্থায় দাঁড়িয়েছে এখন৷
“এস আলমসহ এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে সৃষ্টি করার জন্য সাহায্য করা হয়েছে৷ সরকার থেকে যদি বলে এস আলমকে টাকা দিয়ে দাও, তাহলে টাকা দিতে তো বাধ্য৷”
বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে এ অবস্থান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে বলেও আশার কথা বলেন বিএবি চেয়ারম্যান।
যখন কোনো ব্যাংক সমস্যায় পড়ে যায়, তখন আমানতকারীরা সেখানে টাকা রাখতে চায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “মানুষের বিশ্বাস জন্ম দিতে সময় লাগবে৷ বর্তমান সরকার যেভাবে আমাদের সহযোগিতা দিচ্ছে এবং সুন্দর নীতি নিচ্ছে, তাতে আমরা দ্রুত এ সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারব৷”
বৈঠকে সুনির্দিষ্ট কোন প্রস্তাব ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অনেকেই পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন৷ পলাতকদের কোনো অধিকার নেই কোর্টে তাদের প্রতিনিধি পাঠানো৷ এই সুযোগ তাদের দেওয়া উচিত না৷
“তারা কানাডায় বসে থেকে দেশে মামলা মোকাবিলা করার সুযোগ যেন না পান৷ এটা করতে হলে তারা দেশে এসে করুক৷”
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা দিয়ে ব্যাংককে বাঁচানো সম্ভব না মত দিয়ে আব্দুল হাই বলেন, “আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্স করপোরেশন, আইএমএফ, এডিবি, এদের যদি একটা প্যাকেজ দেওয়া যায় তাহলে এসব ব্যাংককে বাঁচানোর সেরা মাধ্যম হবে৷”
বিএবি সভাপতি বলেন, “ব্যাংকের মূল শক্তি আমানতকারী৷ যদি তারা টাকা না রাখে তাহলে ব্যাংক শেষ৷ তাহলে ঋণও দেওয়া যাবে না৷ ব্যাংক বাঁচবে কীভাবে?
“টাকার উৎস তো আমানতকারী৷ আমরা বোর্ডে বসতে পারি, কিন্তু আমাদের আর কত টাকা আছে?”
এভাবে ব্যাংক টেকাতে পারবেন?- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “প্রতিটি জিনিসেরই সমাধান আছে৷ ওই সমাধানটাই বের করার চেষ্টা করছি৷ আমরা সরকারের সাথে আলোচনা করেছি যাতে সমস্যায় থাকা ব্যাংকগুলোকে সাহায্য করতে পারি।”