Published : 31 May 2025, 12:15 AM
জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের বেকসুর খালাস পাওয়াকে ‘বিচার বিভাগের উপর রাজনৈতিক প্রভাব’ হিসেবে দেখছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি।
শুক্রবার সংগঠনের বিবৃতিতে বলা হয়, “চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে সম্পূর্ণ নির্দোষ হিসেবে বেকসুর খালাস দেওয়া কোনো ন্যায়বিচার নয়, বরং বিচার বিভাগের ওপর রাজনৈতিক প্রভাবের উদাহরণ।
“আশ্চর্যের বিষয় হলো, অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারকার্যকে ত্রুটিপূর্ণ বলার পরও সেখানেই আপিল রিভিউ করল। আমরা বলতে চাই, যে পদ্ধতিতে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ পূরণের জন্য এই ত্রুটিপূর্ণ যুদ্ধাপরাধী বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, সেই একই স্বার্থকে এই অন্তর্বর্তী সরকার ধারণ করে জামায়াতে ইসলামীর স্বার্থ সংরক্ষণ করেছে ।“
বিবৃতিতে বলা হয়, “বর্তমান সরকার এমনভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সাজিয়েছে, যেখানে প্রধান প্রসিকিউটরসহ রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর আগে যুদ্ধাপরাধী আসামিদের পক্ষের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে এই মামলার রায়ে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ ঘটেছে, যেটি রায়কে প্রভাবিত করেছে।
“বর্তমান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আগের প্রসিকিউশনের কার্যক্রমের দায় নিতে অস্বীকার করার মাধ্যমে কেবল পেশাগত অসদাচরণই নয়, বরং পুরো বিচারিক প্রক্রিয়াকেই দুর্বল করে দিয়েছে। পূর্বের প্রসিকিউশন ভুল করলে বর্তমান প্রসিকিউশনের দায়িত্ব ছিল সেটি সংশোধন করে রাষ্ট্রকে ডিফেন্ড করা। এই ধরনের পরিস্থিতিতে আসামীর নির্দোষ হিসেবে ‘বেকসুর খালাস’ পাওয়া ন্যায়বিচারের নামে প্রহসন।”
সংগঠনটি মনে করে, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান যে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থার আকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছিল, এই রায় সেই আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জুলাই গণহত্যারও বিচার না করার ‘বন্দোবস্ত’ করছে।”
বুধবার বিকালে এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাসের ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট প্রতিবাদ কর্মসূচি করে। কর্মসূচিতে হামলায় ছয়জন আহত হয়। তাদের দাবি, ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিলেও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রশিবিরের হামলার অভিযোগ উঠেছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সংশোধন করে গণহত্যাকারী জামায়াতে ইসলামী ও আওয়ামী লীগের বিচারের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলায় জড়িত ছাত্রশিবিরের সদস্যদের বিচারের দাবিও জানানো হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির পক্ষে আনু মুহাম্মদ, হারুন উর রশীদ, সীমা দত্ত, সামিনা লুৎফা নিত্রা, আবদুল্লাহ আল কাফী, ফখরুদ্দিন কবীর আতিক, মাহা মির্জা, আফজাল হোসেইন ও মারজিয়া প্রভার সই করেন।