Published : 26 Jun 2025, 11:05 PM
নির্বাচনের প্রস্তুতিকে চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে তুলে ধরে নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, ভোটের সামগ্রী কেনাকাটার কাজও সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, ভোটার তালিকা আইনে সংশোধন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আবেদন বাছাই, সীমানা নির্ধারণের আবেদন নিষ্পত্তির মত কাজগুলো সময় মত সম্পন্ন করা হবে।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ-এবিবির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন ইসি সচিব।
নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রতিদিন সকাল থেকে অফিস ত্যাগের আগ পযন্ত প্রতিটি দাপ্তরিক কাজ এখন নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কিত। প্রস্তুতি একটা চলমান প্রক্রিয়া। এটাকে যদি কোনো একটি সময় সারণীতে ঢুকিয়ে দিই, তাহলে ভুল হবে। তার মানে আমার কাল আসা লাগবে না।”
ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতিমূলক কাজ নিয়মিত চলছে বলেও তুলে ধরেন আখতার আহমেদ।
ইসির সিনিয়র সচিব বলেন, “নির্বাচন করতে আমাদের বেশ কিছু কেনাকাটার বিষয় রয়েছে। নির্বাচন সামগ্রী ক্রয় করার ব্যাপারে আমরা দরপত্র আহ্বান করেছি। একটি পণ্যের পুনদরপত্র আহ্বান করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি, সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সংক্রান্ত মালামাল ক্রয় সম্পন্ন করতে।
ভোটার তালিকা আইন সংশোধন চায় ইসি
বিদ্যমান ভোটার তালিকা আইনে পরিবর্তন চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানান আখতার আহমেদ।
তিনি বলেন, “ভোটার তালিকা, কোন পর্যন্ত সময়সীমা নিয়ে ভোটার করা হবে, যারা নির্বাচনে ভোট দেবেন-এই সংক্রান্ত বিদ্যমান আইনের পরিবর্তন আনার জন্য আমরা একটি প্রস্তাব করেছি।”
ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে কমিশন যে সময়টা যৌক্তিক বিবেচনা করে সেটি ঠিক করার সুযোগ রেখে এ প্রস্তাব করার কথা বলেছেন তিনি।
“যৌক্তিক বিবেচনাটা কীসের ভিত্তিতে হবে, এটা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। তবে এটা স্বাভাবিকভাবে আসতে পারে-কবে ভোট হবে এবং ভোটের আগে তফসিল, তফসিলের আগে প্রতীক বরাদ্দ, ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সীমা নির্ধারণ করবে। এ সংক্রান্ত সংশোধনী প্রস্তাব আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।”
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপর দাবি-আপত্তি ও নিষ্পত্তি শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয় ২ মার্চ।
নিবন্ধন আবেদন বাছাই চলছে
এবার নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য ২২ জুনের মধ্যে ১৪৭টি আবেদন পেয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ইসি সচিব বলেন, “নিবন্ধনের জন্য ১৪৭টি আবেদন পাওয়া গেছে। তিন দলের একাধিক আবেদন থাকায় ১৪৪টি দল আবেদন করেছে। এসব আবেদনের প্রাথমিক পর্যালোচনার জন্য ২০ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রতীকের সংখ্যা বাড়বে। কোন কোন প্রতীক নতুন যুক্ত হচ্ছে তা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, “৭৬টি আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ চেয়ে আবেদন এসেছে। এসব নিয়ে পর্যালোচনা চলছে।”
এনআইডি যাচাই সেবা নিয়ে এবিবি
এর আগে বিকালে নির্বাচন ভবনে এবিবির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসি সচিব।
এনআইডি যাচাই সেবা নেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে নতুন পদ্ধতিতে আসতে ১০ দিন সময় দেওয়ার কথা বলেছেন ইসি সচিব।
নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা বলছেন, কমিশনের সার্ভারে থাকা নাগরিকদের তথ্য যাচাইয়ে ব্যাংকগুলোকে আর ঢালাও তথ্য না দিয়ে সুনির্দিষ্ট যে তথ্যটি চাওয়া হবে, কেবল সেটি ‘ম্যাচ’ অথবা ‘নট ম্যাচ’ আকারে জানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকের অগ্রগতি সম্পর্কে ইসি সচিব বলেন, “আমরা যে তথ্য যাচাই সেবার ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতিতে যেতে চাচ্ছি, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেকেই বলেছেন, একটু সময়ের প্রয়োজন।
“আমরা বলেছি, সময় নিলেও এই পদ্ধতিতেই যেতে হবে। এজন্য তাদের ১০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ
নির্বাচনি সামগ্রী কেনাকাটায় তিন থেকে চার মাস লাগবে: ইসি সচিব