Published : 22 Oct 2024, 10:46 PM
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মধুর ক্যান্টিনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর তারা কুশপুতুলে আগুন ধরিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, “শেখ হাসিনার পলায়নের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে সরিয়ে দিতে বলেছিলাম আমরা। অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলাম, গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধরে রাখতে একটি বিপ্লবী সরকার গঠন করা যেতে পারে।
“কিন্তু তারা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে শপথ গ্রহণ করার মাধ্যমে যে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটির খেসারত এখন দিতে হচ্ছে।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক বক্তব্য ঘিরে তার পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের নেতারাসহ বিভিন্ন সংগঠন।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচি থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি সংগঠন। ওই সময়ের মধ্যে মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতির পদ না ছাড়লে ‘দুর্বার আন্দোলন’ গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বঙ্গভবন ঘেরাও কর্মসূচি ছাড়াও এদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। ওই সমাবেশ থেকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও সংবিধান বাতিলসহ পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দাবি বাস্তবায়নের সময় বেঁধে দিয়েছেন তারা।
ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ অগাস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা, যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সেদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর দেন। সেদিন রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।”
এরপর সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে নোবেলবিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সেই সরকারের শপথ পড়ান।
তার আড়াই মাসের মাথায় গত ১৯ অক্টোবর মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ‘কোনো দালিলিক প্রমাণ’ তার কাছে নেই।
এ নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “রাষ্ট্রপতি বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পান নাই, এটা হচ্ছে মিথ্যাচার, উনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল।”
রাষ্ট্রপতির ওই বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে তার পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন-
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে শহীদ মিনারে বিক্ষোভ-সমাবেশ
বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান: পদ ছাড়তে রাষ্ট্রপতিকে ২৪ ঘণ্টা
রাষ্ট্রপতি 'মিথ্যা' বলেছেন, পদে থাকার যোগ্যতা নিয়ে ভাবতে হবে: আইন