Published : 12 Oct 2023, 04:03 PM
চার বছর আগে ঢাকার সদরঘাটে লঞ্চের কেবিন থেকে এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল, যিনি পরকীয়া প্রেমিকের হাতে খুন হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমে সম্প্রতি বিদেশ ফেরত এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার পিবিআই বলছে, জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিলুফা বেগম (৫৭) নামের ওই নারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পরকীয়া সম্পর্কের পর বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় ২০১৯ সালের ১৬ জুন নিলুফাকে খুন করে তিনি ব্রুনাই চলে গিয়েছিলেন।
গ্রেপ্তার মো. দেলোয়ার হোসেন মিজি (৪৪) এবং নিলুফার বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে উপজেলার নাসিরকোর্ট মোল্লাবাড়ি এলাকায়।
ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, ঢাকার সদরঘাটে মিতালি-৭ লঞ্চের কেবিন থেকে নিলুফা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। তদন্তে একই গ্রামের ব্রুনাই প্রবাসী দেলোয়ারের সঙ্গে তার পরকীয়ার বিষয়টি জানা যায়। এরপর তার পাসপোর্ট নম্বর সংগ্রহ করে জানা যায়, খুনের ঘটনার ১০ দিনের মাথায় তিনি বিদেশে চলে যান।
চার বছর পর গত ২২ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে দেলোয়ার হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, “২০১২ সালের দিকে নিলুফার বাড়িতে কাঠমিস্ত্রীর কাজের সুবাদে বয়সে ১৩ বছরের ছোট দেলোয়ারের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। ২০১৫ সালে তার স্বামী মারা যায়। ২০১৭ সালে দেলোয়ার ব্রুনাই চলে গেলেও তাদের সেই সম্পর্ক চলতে থাকে।
“২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল দুই মাসের ছুটিতে দেশে আসেন দেলোয়ার। সেসময় নিলুফা তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। বিয়ে না করলে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া ছাড়াও তার বাড়িতে গিয়ে ওঠার হুমকি দেন। পরে দেলোয়ার ফের বিদেশ যাওয়ার আগেই বিয়ের প্রুতিশ্রুতি দেন।”
পিবিআই জানায়, দেলোয়ার বিয়েতে রাজি ছিলেন না। কিন্তু নিলুফার চাপাচাপিতে তাকে খুন করে বিদেশে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। এজন্য নিলুফাকে ঢাকায় নিয়ে বিয়ের কথা বলে লঞ্চের কেবিনে ওঠেন। একপর্যায়ে সেখানে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করেন।
দেশে আসার আগে দেলোয়ার হত্যা মামলাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “এক আত্মীয়কে মামলার খোঁজ খবর নিতে বলেছিলেন। মামলা শেষ করতে টাকা-পয়সা লাগলে তারও খোঁজ নিতে বলেন।
“দেশে আসলে সমস্যা হবে না, এমন আশ্বাসেই ব্রুনাই থেকে সেপ্টেম্বরে দেশে ফিরে ধরা পড়েন দেলোয়ার।”