Published : 02 Apr 2024, 12:16 AM
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীন ও তার ছেলে ফয়সাল আবেদীনের বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে জজ আদালত।
ঢাকার ৮ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বদরুল আলম ভুঞা রোববার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ৩০ মে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করেন।
দুদকের আইনজীবী রেজাউল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০০৪ সালের বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের গ্রেনেড হামলাকে আওয়ামী লীগের অন্তর্দ্বন্দ্ব বলে জয়নুল আবেদীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। তিনি হাওয়া ভবনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।”
সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের ছেলে ফয়সাল আবেদীন পলাতক থাকায় বিচারক তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন বলে জানান আইনজীবী রেজাউল।
২০১০ সালের ১৮ জুলাই দুদক সম্পদের হিসাব চেয়ে সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনকে নোটিস দেয়। তিনি ওই নোটিস চ্যালেঞ্জ করে ২৫ জুলাই হাই কোর্টে রিট আবেদন করলেও বিষয়টি ‘উত্থাপিত হয়নি’ মর্মে খারিজ হয়ে যায়।
এরপর ওই বছরের ২৫ অক্টোবর দুদক পুনরায় সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নোটিস দেয়। এর সাত বছর পর ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দুদক আবার নোটিস দেয় তাকে।
ওই নোটিসে তাকে আগের সম্পদের হিসাব স্পষ্ট করতে দুদকে হাজির হতে বলা হয়। পাশাপাশি তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে ওই বছরের ২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টকে চিঠি দেয় কমিশন।
বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের জামিন স্থগিতের শুনানি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে
এর জবাবে তদন্ত না করতে গত ২৮ এপ্রিল দুদককে পাল্টা চিঠি দেয় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এ নিয়ে জাতীয় সংসদেও আলোচনা হয়।
পরে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই জয়নুল আবেদীন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক গোলাম মাওলা।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, জয়নুল আবেদীনের মোট সম্পদ এক কোটি ৩২ লাখ ৩৯ হাজার ১৭৪ টাকা। তার ১৯৮২-১৯৮৩ কর বর্ষ থেকে ২০১০-১১ কর বর্ষ পর্যন্ত পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছে ৬৪ লাখ ৭৪ হাজার ৩৯ টাকা।
পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ অর্জিত সম্পদ ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ২১৩ টাকা। এর বিপরীতে আয়ের উৎস পাওয়া যায় ১ কোটি ৮৭ লাখ ৬৩ হাজার ৩০৪ টাকার। তার আয়ের তুলনায় ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৯ টাকা বেশি সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, জয়নুল আবেদীন তার ছেলেকে ২৬ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছিলেন বলে ঘোষণা দেন, যা তার ছেলে ফয়সাল আবেদীনের আয়কর নথিতে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বিচারপতির আয়কর রিটার্নে ২৬ লাখ টাকা ঋণ দান এবং ফেরত প্রাপ্তির কোনও তথ্য নেই।
সাবেক এ বিচারপতির দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে দাখিল করা ব্যাংক স্টেটমেন্টে (২০০৫-২০০৬ এবং ২০০৬-২০০৭ অর্থবছর) তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬ লাখ টাকা উত্তোলনের তথ্য নেই।