Published : 23 Jun 2025, 12:03 PM
ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
রোববার রাতে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছেন ডিবি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার রবিউল হোসেন ভুঁইয়া।
তিনি বলেন, “মুনিরুল মওলার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা রয়েছে, সেই মামলায় তাকে রাতে গ্রেপ্তার করে এনে ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছে।”
২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। এরপর ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক থেকে অন্তত ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নেয় চট্টগ্রামভিত্তিক ওই শিল্পগোষ্ঠী। তখন থেকে ব্যাংকটিতে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন মুনিরুল মওলা, তার বাড়িও চট্টগ্রামে।
তাকে দ্রুত পদোন্নতি দিয়ে প্রথমে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমডি করা হয়।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ইসলামী ব্যাংকে ব্যাপক ঋণ জালিয়াতির ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। নিয়ম না মেনে তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকটির চট্টগ্রামের তিন শাখা থেকে ৩ হাজার ২৫৭ কোটি ঋণ দেওয়া হয়।
দুদকে এ অভিযোগ জমা হওয়ার পর কমিশন অভিযোগটি আমলে নিয়ে তা অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় সংস্থার উপপরিচালক সিরাজুল হককে। পরে তিনি বদলি হলে দায়িত্ব বর্তায় দুদকের উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাতের কাছে।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গত অগাস্টে গতি পায় ইসলামী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির অনুসন্ধান। এরপর গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে ব্যাংকটির অর্ধশতাধিক কর্মকর্তাকে বিরুদ্ধে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
এই পরিপ্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল ইসলামের ছেলে আহসানুল আলমের বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংকের ১ হাজার ৯২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুদক, যিনি ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
তিনি ছাড়াও মামলায় ৫৭ জনকে আসামি করা হয়, যেখানে ব্যাংকটির সাবেক এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার নাম রয়েছে।
জানুয়ারিতে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আহসানুল আলমসহ ৫৪ জনের বিরুদ্ধে করা আরেক মামলাতেও আসামি করা হয় মুনিরুল মওলাকে, যে মামলায় ৯৯৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করে দুদক।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পাল্টে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এর মধ্য দিয়ে এস আলমের নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হয় ব্যাংকটি।
নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর এমডি মুনিরুল মওলাকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন কর্মকর্তারা। তাদের বাধার মুখে ১৯ ডিসেম্বর অফিস ছাড়তে বাধ্য হন মুনিরুল মওলা। পরে এ বছর ৬ এপ্রিল মুনিরুল মওলাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় ব্যাংকের পর্ষদ।