Published : 04 Aug 2023, 06:14 PM
শ্রাবণের বৃষ্টিতে সরবরাহ ঘাটতির কথা বলে আবারও মুরগির দাম বাড়াতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার ঢাকার কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহেও ছিল ১৭০ টাকা।
সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়; গত সপ্তাহে এই মুরগি ছিল ২৮০ টাকা।
দোকানি মতিউর রহমান বললেন, “এ সপ্তাহে মুরগির দাম বাড়তি। কারণ সাপ্লাই কমে গেছে। সাপ্লাই কমে গেলে কারওয়ান বাজারে মুরগির দাম বাড়তে থাকে।”
মুরগি ছাড়াও বিভিন্ন রকম সবজি, পেঁয়াজ, রসুন ও আদার বাজার আবারও ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে বলে ক্রেতারা জানাচ্ছেন।
বাজার করার পর দুপুরে ঝুম বৃষ্টির মধ্যে কারওয়ান বাজারে স্ত্রীসহ বসে ছিলেন ইনস্যুরেন্স কর্মকর্তা মাখন লাল।
বাজার নিয়ে জানতে চাইতেই তিনি বললেন, “সব জিনিসের দাম তো বেশি মনে হচ্ছে। আদা কিনতে গেলাম দাম বাড়তি, পেঁয়াজ কিনতে গেলাম তাও দাম বাড়তি।”
ঘণ্টা খানেকের বৃষ্টিতে কারওয়ান বাজারের দোকানিরা সবজির দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিকেজি ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে সবজি বিক্রি হচ্ছে।
মাখন লালের স্ত্রী জানালেন, তারা মানিক মিয়া এভিনিউতে একটি অস্থায়ী বাজার থেকে নিয়মিত কেনাকাটা করেন। কিন্তু শুক্রবার ওই মার্কেট বন্ধ থাকে বলে কারওয়ান বাজারে আসেন।
“কারওয়ান বাজারে এসে কোনো লাভ হলো না। পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মাছ-মুরগি যাই বলেন, সব কিছুর দামই বাড়তি।”
চলতি সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দামও কেজিতে ৫ টাকা করে বেড়েছে। কারওয়ান বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৪২ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২২০ টাকা আর চীন থেকে আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৮০ টাকায়।
সাধারণত আমদানি করা রসুনের চেয়ে কম দামে বিক্রি হয়ে থাকে ছোট আকৃতির দেশি রসুন। বছরের বেশিরভাগ সময় জুড়েই প্রতিকেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে আমদানি করা রসুন ও প্রতিকেজি ৭০ টাকা থেকে ৯০ টাকার মধ্যে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছিল।
মসলা বিক্রেতা শামীম হোসেন জানান, হঠাৎ করে দেশি রসুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা করে বেড়ে গেছে।
“আজকে দেশি রসুন ২২০ টাকা করে চলছে, চায়না রসুনের দাম ১৮০ টাকা। আমদানি করা আদা দীর্ঘদিন ধরেই ২০০ থেকে ২২০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। এখন কোনা কোনো জাতের আদার দাম বেড়ে ২৪০ টাকা হয়ে গেছে। আদার ক্ষেত্রে আমদানি কম হচ্ছে। কিন্তু রসুনের দাম কেন বাড়তেছে বলতে পারছি না “
সবজির দাম চড়া
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা হাশেম মিয়া জানান, সবজির দাম গত কয়েক সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল ছিল। গত দুই দিন ধরে বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম কিছুটা বাড়তি। কেজিতে অন্তত ৫ টাকা করে বাড়ছে সবজির দাম। মরিচের দাম আবারও প্রতিকেজি দেড়শ টাকা থেকে বেড়ে ২০০ টাকার দিকে চলে যাচ্ছে। শুক্রবার মরিচ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১৮০ টাকায়।
হাশেমের দোকানে প্রতিকেজি পটল ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, ঢেড়শ ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুমুখী ৬০ টাকা, ধু্ন্দুল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, কাচা কলার হালি ৪০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
অবশ্য ভারী বর্ষণ শুরুর পর কারওয়ান বাজারের অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকায় বিভিন্ন সবজির দাম কমিয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।
সেখানকার এক বিক্রেতা বলেন, “আজকে আর কাস্টমার বেশি আসবে না। শসা, ঢেঁড়শ, পটলের মতো সবজি বেশি সময় দোকানে রাখা যায় না। তাই এগুলো তাড়াতাড়ি বিক্রি করে দিচ্ছি কেনা দামের চেয়েও কম দামে।
“কিন্তু কচুমুখী সহজে নষ্ট হবে না, তাই কচুমুখীর দাম ঠিকই প্রতিকেজি ৬০ টাকা করে রাখছি। ঢেঁড়শ বিক্রি করছি প্রতিকেজি ১৫ টাকায়, যদিও আমার কেনা মূল্য পড়েছে ২৫ টাকা করে।”