Published : 30 May 2025, 09:42 PM
দেশের গুচ্ছভুক্ত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিতে 'বিশেষ সুবিধা' পাবেন জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতের স্বজনরা।
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নির্দেশিকায় এ কথা বলা আছে।
এতে বলা হয়, “গেজেটভুক্ত শহীদ ও তালিকাভুক্ত আহতদের স্ত্রী-সন্তান (স্ত্রী-সন্তান না থাকলে ভাই-বোন) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাবেন।”
তবে এ বিশেষ সুবিধা কী হবে, তা এখনও নির্ধারণ হয়নি বলে শুক্রবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সমন্বিত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আনোয়ারুল আজীম আখন্দ।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ উপাচার্য বলেন, "সরকারের একটি প্রজ্ঞাপন রয়েছে, সেখানে লেখা আছে, ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাবে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত-নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। আমরা সরকারের প্রজ্ঞাপনের বাইরে যায়নি।
“বলা হয়েছে, এবারের ভর্তির জন্যই শুধু সুবিধাটা পাবে। এই সুবিধাটা কী রকম হবে, তা আমরা উপাচার্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের প্রজ্ঞাপনের মর্মার্থ বুঝে সিদ্ধান্ত নেব।"
গুচ্ছ ভুক্ত ১৯টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় রয়েছে- ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়, জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও আছে গুচ্ছের তালিকায়।
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ পছন্দক্রম দেওয়াসহ ভর্তির অনলাইন আবেদন শুরু হয় বৃহস্পতিবার; চলবে ৫ জুন পর্যন্ত।
নির্দেশিকায় কোটার ক্ষেত্রে ছয় ধরনের পছন্দক্রম দেওয়া আছে। এর মধ্যে রয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কোটা, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বা উপজাতি কোটা, জুলাই-অগাস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সুবিধা, বিকেএসপি বা খেলোয়াড় কোটা, পোষ্য কোটা, হরিজন ও দলিত কোটা ও নন-ট্রাইবাল (পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা) কোটা (রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য)।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি কমাতে ২০২০ সাল থেকে দেশের সরকারি সাধারণ, কৃষি, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।
গত শিক্ষাবর্ষে ২৪টি জিএসটিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম চালায়। তবে এবার জিএসটিভুক্ত পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পরীক্ষা পদ্ধতি থেকে সরে গেছে।
এর আগে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তিতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ এবং আহতের পরিবারের সদস্যরা বিশেষ সুবিধা পাবেন বলে জানানো হয়েছিল।
ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গেজেটভুক্ত শহীদ এবং তালিকাভুক্ত আহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের শুধু ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ম বর্ষ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে।
এর আগে ২ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও স্কুল অ্যান্ড কলেজগুলোর অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত-নিহতদের পরিবারের সদস্যদের ভর্তিতে কোটা রাখার নির্দেশনা দেয়। পরে সমালোচনার মুখে গত ৩ মার্চ কোটার আদেশ সংশোধন করে প্রতি শ্রেণিতে একটি করে আসন বেশি রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
আরও পড়ুন
ঢাবিতে ভর্তি: গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের স্বজনরা পাবেন 'বিশেষ সুবিধা'