Published : 22 Dec 2024, 04:30 PM
টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনার দ্রুত তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গনে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম রাকিব লিখিত বক্তব্যে এই হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, “২০২৪ সালের হামলা ও হত্যাকাণ্ড এবং ২০১৮ সালে একই ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থিদের হামলা ও হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি মাত্র। তৎকালীন সরকারের সাথে সাদপন্থিদের ঘনিষ্ঠতার কারণে ২০১৮ সালের সেই হামলার বিচার তো দূরের কথা, কোনো তদন্তও হয়নি।
“এ ধরনের সহিংস কার্যকলাপ শুধু ধর্মীয় পরিবেশকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেনি, বরং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উপরেও গুরুতর প্রভাব ফেলেছে।“
ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদের অনুসারিদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত তিনজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর আসে বুধবার সকালে।
গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি হাবিব ইস্কান্দার বলেন, মঙ্গলবার ইজতেমা ময়দানে অবস্থান করছিলেন মাওলানা জুবায়ের আহমদের অনুসারীরা।
পরে মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে থাকেন।
এ সময় মাঠের ভেতর থেকে জুবায়ের অনুসারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। জবাবে সাদের অনুসারীরাও পাল্টা হামলা চালায়।
একপর্যায়ে সাদপন্থিরা মাঠে প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়।
আগামী বছর প্রথম পর্বে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি ইজতেমায় অংশ নিবেন ‘জুবায়েরপন্থিরা’ এবং দ্বিতীয় পর্বে ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি অংশ নিবেন ‘সাদপন্থিরা’।
রাকিব বলেন, “ওই ঘটনার আগের রাতে ‘সচেতন ছাত্র সমাজ’ নামে একটি সংগঠন নিজেদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দাবি করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে।
“পাশাপাশি, সাদ কান্ধলভিকে কেন্দ্র করে তাদের সব দাবি রাতের মধ্যেই মেনে নেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। এরপরে টঙ্গীতে হামলার ঘটনা ঘটে। এই হামলার পেছনে ‘সচেতন ছাত্র সমাজ’র সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে।”
‘সচেতন ছাত্রসমাজ’র বিচার দাবি করে রাকিব বলেছেন ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের অপতৎপরতার পুনরাবৃত্তি না হয় সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবি
• অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে, টঙ্গী ইজতেমা ময়দানের হামলা ও হতাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
• এই ঘটনার মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।
• ২০১৮ সালে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে হামলা ও হত্যাকাণ্ডে সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
• ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়ে ভূঁইফোড় সংগঠন ‘সচেতন ছাত্র সমাজ’র সদস্যদের অবিলম্বে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।
আরও পড়ুন
টঙ্গীতে ইজতেমা ময়দানে তাবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ৩
গাজীপুরে মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীদের মহাসড়ক অবরোধ
ইজতেমা মাঠে প্রবেশে মানা, মিছিল-জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা
টঙ্গীতে ইজতেমা ময়দানে তাবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ৩
ভারতের মাওলানা সাদকে জোড় ইজতেমায় আনা নিয়ে উত্তেজনা
টঙ্গীতে সংঘর্ষ: নিহতের সংখ্যা আসলে কত?