Published : 01 Aug 2024, 05:49 PM
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে আটক শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ পর্যন্ত ১৩ জনকে বিভিন্ন থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এর মধ্যে ঢাকার কোতোয়ালি থানা থেকে নয়জন, সাভার থেকে একজন, টাঙ্গাইল থেকে দুইজন এবং লক্ষ্মীপুর থেকে একজনকে মুক্ত করার কথা জানিয়েছেন প্রক্টর অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ পর্যন্ত ১৬ জন শিক্ষার্থীকে আটকের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে মোট ১৩ জনকে ছাড়ানো হয়েছে। তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় তাদের ছাড়ানো যায়নি।”
সবশেষ আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে লক্ষ্মীপুর থেকে ছাড়িয়ে এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাসুম বিল্লাহ বলেন, “আমার বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল সোবহান লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশের হাতে আটক হয়। এ খবর জানার পর আমরা লক্ষ্মীপুর পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। আলোচনার মাধ্যমে আমরা ওই শিক্ষার্থীকে থানা থেকে মুক্ত করতে পেরেছি।”
কোটা সংস্কারের আন্দোলন গত ১৫ জুলাই সহিংস রূপ পাওয়ার পর থেকে আন্দোলন ঘিরে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর এসেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। তবে সরকারি হিসাবে নিহত হয়েছেন দেড়শ জন। আন্দোলনে আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। আন্দোলন চলাকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রছাত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা আটক ও আহত শিক্ষার্থীদের তালিকা করছেন। এখন পর্যন্ত তারা গুরুতর আহত ১৬ জনের তথ্য পেয়েছেন।
আন্দোলন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট ও সহিংসতার অভিযোগে কোনো ‘নিরপরাধ’ শিক্ষার্থীকে হয়রানি না করতে ২৯ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
‘নিরপরাধ’ কোনো শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হলে বিষয়টি প্রক্টর অফিসে জানাতে বলা হয় সেখানে। পাশাপাশি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার আশ্বাসও দেওয়া হয়।
আন্দোলনের মধ্যে গত ১৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে জগন্নাথের গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আহসান হাবীব তামিম নিহত হন। তার বাসা মিরপুর এলাকাতেই।
বুধবার তামিমের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আর্থিক সহযোগিতা হিসেবে এক লাখ টাকা, এক মাসের বাজার করে দেন বিভাগের শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়।
অপরদিকে আন্দোলনের মধ্যে আহত আইন বিভাগের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী আল আমিনের খোঁজখবর নিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম।
প্রক্টর জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের তালিকা মোতাবেক তাদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তরফ থেকে আর্থিক সহযোগিতাও নিশ্চিত করা হচ্ছে।