Published : 07 Mar 2024, 09:04 PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বিশুদ্ধ পানির উৎস’ একমাত্র গভীর নলকূপ অকেজো পড়ে আছে এক বছরের বেশি সময় ধরে; ফলে খাবার পানির ভোগান্তি কমাতে রোজার আগেই সেটি পুনরায় সচলের দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন ওয়াসার পানি রিজার্ভ ট্যাংকে ওঠানোর পর যাচ্ছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবনে। অনেক সময় সেই পানিরও সংকট তৈরি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়াসহ বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরে অনেক সময় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পড়তে হয় খাবার পানির সংকটে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, নলকূপটি সংস্কারে টেন্ডার হয়ে গেছে। রোজার আগেই তারা শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন।
গভীর নলকূপটির অবস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের পেছনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর দিকে এটি স্থাপন করা হয়। বেশ কয়েকবার মেরামতও হয়েছে। কিন্তু বছরখানেক ধরে সেটি বিকল হয়ে পড়ে আছে। পুরান ঢাকায় ক্যাম্পাসের আশেপাশের মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা আগে এই নলকূপ থেকে পানি নিয়ে যেতেন খাওয়ার জন্য।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাইমুন রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেদের হল না থাকায় আমাদের মেসে থাকতে হয়। আর মেসে প্রধান সমস্যা হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি বা খাবার পানির অভাব। এজন্য ক্যাম্পাস থেকেই মেসের জন্য পানি নিয়ে যাই।
“কিন্তু এখন ক্যাম্পাস থেকে পানি নিতে গেলে প্রায়ই লক্ষ্য করি, পানিতে দুর্গন্ধ থাকে৷ পরে জানতে পারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নলকূপটি নষ্ট, সরাসরি ওয়াসার পানি ফিল্টার করা হচ্ছে৷ দ্রুতই নলকূপ সংস্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।”
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিজান উদ্দীন মাসুদ বলেন, “কিছুদিন আগে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াসার পানির কারণে হয়ত এমনটি হয়েছে। ক্যাম্পাসের একটি মাত্র নলকূপ, সেটাও এক বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত এটি মেরামত করলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী ঊর্মি ইসলাম বলেন, “পুরান ঢাকার পানির অবস্থা সবাই জানে। এজন্য ক্যাম্পাস থেকে মেসে পানি নিতে হয়। আর এখন ক্যাম্পাসের পানির অবস্থাও বাজে। তার উপর এখন তো ক্যাম্পাসে পানিই থাকে না।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী বলেন, ক্যাম্পাসের পেছনে অনেক কর্মচারী পরিবার নিয়ে থাকেন। রোজায় পর্যাপ্ত পানি না থাকলে সেহরি আর ইফতারে তাদের অনেক সমস্যা হবে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ পরিবর্তন হওয়ার কারণে ফাইলটি দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিল। নতুন উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ আসার পর আমরা ফাইলটি দ্রুত অনুমোদনের চেষ্টা করি।
“এখন নলকূপ সংস্কার অনুমোদনের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। এর জন্য টেন্ডার ও ড্রপিং হয়ে গেছে৷ রমজানে যেন পানির কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য এর আগেই আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।”