Published : 27 May 2025, 12:37 PM
গত ১০ মৌসুমে প্লে-অফে জায়গা করে নিতে পারেনি পাঞ্জাব কিংস। সেই দলটিই এবার প্রাথমিক পর্ব শেষ হওয়ার বেশ আগেই নিশ্চিত করে ফেলে প্লে-অফে খেলা। শেষ পর্যায়ে এসে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেও এখন তারা। কিভাবে সম্ভব হলো এমন পালাবদলের? অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শশাঙ্ক সিং জানালেন, দলীয় সংস্কৃতি বদলে ফেলাতেই পারফরম্যান্সের এমন বদল। কোচ রিকি পন্টিং ও অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ায়ের গড়া সেই সংস্কৃতির মূল নীতি হলো, দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে একই কাতারে রাখা, একইরকম সম্মান ও ভালোবাসা দেওয়া।
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে উড়িয়ে সোমবার পাঞ্জাব কিংস নিশ্চিত করেছে শীর্ষ দুইয়ে থাকা ও প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলা। যেটির মানে, ফাইনালে পৌঁছতে অন্তত দুটি সুযোগ পাবে দলটি।
১৮ মৌসুমের আইপিএল অভিযানে স্রেফ একবারই ফাইনালে খেলেছে পাঞ্জাব, সেটিও সেই ২০১৪ সালে। এছাড়া আর কেবল একবারই তারা শীর্ষ চারে ছিল, ২০০৮ সালে প্রথম আসরে।
বারবার প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারা দলটি এবার কোচ করে আনে রিকি পন্টিংকে। এরপর নিলামে মরিয়া হয়ে ২৬ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে তারা দলে নেয় শ্রেয়াস আইয়ারকে। অধিনায়কের দায়িত্বও দেওয়া হয় তাকে।
সেই যুগলবন্দিতে এবার দুর্দান্ত পথচলায় ছুটছে পাঞ্জাব। মুম্বাইকে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটসম্যান শশাঙ্ক সিং শোনালেন দলের সাফল্যের পেছনের গল্প।
“রিকি পন্টিং ও শ্রেয়াস আইয়ার, দুজনই একদম প্রথম দিন আমাদের বলেছেন, সবচেয়ে সিনিয়র ক্রিকেটার ইউজভেন্দ্রা চেহেল ও আমাদের বাস ড্রাইভারকে তারা একই চোখে দেখবেন। সেটা তারা মৌসুমজুড়েই বজায় রেখেছেন। চেহেল ও বাস ড্রাইভারকে একই রকম সম্মান দিয়েছেন তারা। এটিই অনেক কিছু বলে দিচ্ছে আমাদের দল সম্পর্কে।”
এই সংস্কৃতি গড়ে তোলায় শশাঙ্ক মূল কৃতিত্ব দিচ্ছেন কোচ রিকি পন্টিংকে।
“তিনি দলের সংস্কৃতি বদল করে দিয়েছেন। আমাদের মানসিকতা বদলে দিয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস বদলে দিয়েছেন। সবকিছুর কৃতিত্ব তাকেই দিতে হবে। কারণ, তার কারণেই খেলাটা নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে। পরস্পরের খেয়াল রাখা, সম্মান করার যে সংস্কৃতি, তা তিনি গড়ে দিয়েছেন।”
“এসব বলা খুব সহজ ব্যাপার। সবাই বলতে পারে, ‘এটা করতে হবে… ওটা করতে হবে।’ কিন্তু তা গড়তে পারা ভিন্ন ব্যাপার। তিনি নিশ্চিত করেছেন, ড্রেসিং রুমে এই সংস্কৃতি যেন গড়ে তোলা হয়।”
পাঞ্জাব গত আসরে ব্যর্থ হলেও টুর্নামেন্টের চমক ছিলেন এই শশাঙ্ক। প্রায় ১৬৫ স্ট্রাইক রেটে ৩৫৪ রান করেছিলেন তিনি ৪৪.২৫ গড়ে। এবারও ফিনিশারের ভূমিকায় দারুণ সফল ৩৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ৫৬.৮০ গড়ে প্রায় দেড়শ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৮৪ রান।
নিজের পারফরম্যান্স ধরে রাখার পেছনেও শশাঙ্ক বললেন দলীয় সংস্কৃতির কথা। কোচের পাশাপাশি কৃতিত্ব দিলেণ অধিনায়ক ও বন্ধু শ্রেয়াস আইয়ারকে।
“শ্রেয়াস আমার খুব প্রিয় বন্ধু। গত ১০-১৫ বছর ধরে ওকে চিনি। তবে ওর নেতৃত্বে খেলা, অধিনায়ক হিসেবে ওকে পাওয়া, সত্যি বলতে আমার জন্য এটা ছিল সবচেয়ে ভালো ব্যাপার। যেভাবে ও সবাইকে স্বাধীনতা দেয়, শুধু আমাকে নয়, দলের সবাইকে… সবাই মানে সবাই, ২৫ জন ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ, কন্টেন্ট টিম, মিডিয়া টিম, লজিস্টিকস, সবাইকে যেভাবে স্বাধীনতা দেয়, দারুণ প্রশংসনীয়।”
“দলীয় সংস্কৃতি গড়ে তোলায় তারও ভূমিকা অনেক। অবশ্যই আমরা পরস্পরকে ভালোবাসি ও খেয়াল রাখি। রিকি স্যার ও শ্রেয়াসের মূল লক্ষ্যই ছিল একটি সংস্কৃতি গড়ে তোলা, ফলাফল আপনাআপনিই আসবে।”