Published : 13 Feb 2025, 07:29 PM
ভারত সফরে অনুশীলন সেশন এড়িয়ে চলার অভিযোগ উঠেছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। জস বাটলারদের পর্যাপ্ত অনুশীলন না করার বিষয়টি মানতেই পারছেন না কেভিন পিটারসেন। ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার পর আরও একবার উত্তরসূরিদের তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক।
আহমেদাবাদে বুধবার তৃতীয় ওয়ানডেতে ভারতের কাছে ১৪২ রানে হারে ইংল্যান্ড। সিরিজে তিন ম্যাচের একটিতেও লড়াই জমাতেই পারেনি সফরকারীরা। এর আগে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে হারে তারা।
তৃতীয় ওয়ানডেতে ধারাভাষ্যকারের দায়িত্ব পালনকালে ভারতের সাবেক অলরাউন্ডার ও সাবেক প্রধান কোচ রাভি শাস্ত্রি বলেন, “আমি শুনলাম, ইংল্যান্ড দল এই পুরো সফরে মাত্র একটি নেট সেশন করেছে।”
এই সফরে ধারাভাষ্যের দায়িত্বে ছিলেন পিটারসেনও। অনুশীলনের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ তিনি ধুয়ে দেন বাটলারদের।
“আমি দুঃখিত, কিন্তু আমি একেবারে হতবাক যে, প্রথম ওয়ানডে হেরে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারার পর থেকে ইংল্যান্ড দল একটিও অনুশীলন সেশন করেনি। এটা কীভাবে হতে পারে? আসলেই তাই, কীভাবে? আমি জানি যে, নাগপুরের (প্রথম ওয়ানডে) পর এই সিরিজে একমাত্র জো রুট নেট সেশনে অংশ নিয়েছিল।”
এই সফরে আসা ক্রিকেটারদের নিবেদন নিয়েও প্রশ্ন তুললেন ৪৪ বছর বয়সী পিটারসেন।
“এই গ্রহে এমন কোনো খেলোয়াড় নেই যে সত্যি বলতে পারবে, তারা হারের পর অনুশীলন না করেই উন্নতি করবে। ইংল্যান্ড দলের এমন কোনো খেলোয়াড় নেই যে, ভারত ছেড়ে বিমানে বসে নিজেদের বলতে পারবে, তারা দলকে জেতাতে সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।”
“প্রতিদিন উন্নতি করার জন্য যদি নিজের সেরাটা দেন, তাহলে হারলেও ঠিক আছে। যদি এই সিরিজে ইংল্যান্ড অনুশীলন না করে থাকে, তাহলে তারা চেষ্টা করেনি। যেকোনো ইংল্যান্ড সমর্থকদের জন্য তা খুব কষ্টের!”
পরে এক্স-এ আরেকটি পোস্ট দেন পিটারসেন। সেখানে স্বদেশী এক সংবাদিককেও একহাত নেন তিনি।
“আমায় এক ইউকে সাংবাদিক একটা আর্টিকেল পাঠাল এবং বলল যে, আমি ও শাস্ত্রি নাকি ইংল্যান্ডের অনুশীলন এড়িয়ে যাওয়া নিয়ে ভুল বলেছি। আসল কারণ নাকি চোট এবং ম্যাচগুলোর মাঝে সময় কম থাকা। তুমি আমায় একটা উপকার করো! যদি এরকম ছাইপাঁশ লিখে থাকো, তাহলে ক্রিকেট নিয়ে লেখা ছেড়ে দাও।”
ইংল্যান্ডের কোথায় উন্নতির প্রয়োজন, সেটাও দেখিয়ে দিলেন দেশটির হয়ে ১০৪টি টেস্ট, ১৩৬টি ওয়ানডে, ৩৭টি টি-টোয়েন্টি খেলা পিটারসেন।
“চোটাঘাত খেলাধুলোর অংশ এবং এই সিরিজের সূচি প্রায় প্রতিটা দ্বিপাক্ষিক সিরিজের মতোই ছিল। চোট কখনও একজন ব্যাটসম্যানকে নেটে নেট বোলারদের খেলা থেকে বিরত রাখতে পারে না, একইভাবে স্পিন খেলার কৌশল শেখা থেকেও না। আর এটাই সেই জায়গা, যেখানে তাদের উন্নতির প্রয়োজন ছিল।”
“বিশ্বাস করুন এটাই স্পিনের বিপক্ষে আমার ক্যারিয়ার বাঁচাতে সাহায্য করেছিল। আমার মনে হচ্ছে, এই সাংবাদিকরা আমাদের মগজ ধোলাই করার চেষ্টা করছে। তোমরা এই ভাবে মানুষকে বোকা বানাতে পারবে না।”
শাস্ত্রির মন্তব্য নিয়ে তৃতীয় ওয়ানডের পর ব্যাখ্যা দেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বাটলার। তার দাবি, এই সফরে অনেক ভ্রমণ করতে হলেও যথেষ্ট অনুশীলন তারা করেছেন।
“আমি নিশ্চিত নই যে, এটা সত্যি কি না। আমাদের দীর্ঘ সফর ছিল, কয়েকদিন দীর্ঘ ভ্রমণ করতে হয়েছে, কয়েকবার আমরা অনুশীলন করিনি, তবে অবশ্যই আমরা সফরজুড়ে অনেক অনুশীলন করেছি।”
“আমরা অবশ্যই একটি ভালো পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করি, কিন্তু এটিকে আয়েশি পরিবেশ বা প্রচেষ্টার অভাব বলে ভুল করবেন না। ছেলেরা পারফর্ম করতে, ভালো করতে এবং উন্নতি করতে উন্মুখ।”
এই সফরে ২২ দিনের মধ্যে আটটি ম্যাচ খেলতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। প্রতিটি ম্যাচ হয়েছে আলাদা আটটি ভেন্যুতে। যার ফলে অনুশীলন সেশন সীমিত করতে হয়েছে দুই দলকেই।
সাড়ে চার বছর পর ওয়ানডেতে খেলতে নেমে তৃতীয় ম্যাচে যৌথভাবে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন টম ব্যান্টন। বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার কুলদিপ ইয়াদাভের বল বুঝতে না পেরে কট বিহাইন্ড হন তিনি।
ধারাভাষ্যের সময়ই পিটারসেন বলেন, স্পিন খেলায় উন্নতি প্রয়োজন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানের।
“গতকাল সে (ব্যান্টন) গলফ কোর্সে ছিল। সে ব্যাটিং করেনি, আর সমস্যাগুলো কোথা থেকে এসেছে? ৬০ রানে একজন, ৮০ রানে দুজন আউট। তারপর কী হলো? তাদের কেউই স্পিন খেলতে পারে না। আর স্পিন খেলার উন্নতি কিভাবে করবেন?”
বাটলার-রুটদের ইনিংস বড় করতে না পারা নিয়েও প্রথম দুই ওয়ানডের পর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন পিটারসেন।