Published : 21 May 2025, 09:59 AM
৯ ম্যাচে ৯.৫৫ গড়ে স্রেফ ৮৬ রান। সাত ম্যাচে আউট দু অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই। পাকিস্তানের হয়ে নানা সময়ে টি-টোয়েন্টি খেলে সাহিবজাদা ফারহানের পারফরম্যান্স। তবে সেই ৯ ম্যাচকে ভুলিয়ে দিয়েছেন তিনি এই বছর, যখন ঘরোয়া ক্রিকেটে ৯ ম্যাচের মধ্যে করেছেন ৪ সেঞ্চুরি! রেকর্ড বইয়ে তোলপাড় ফেলে দেওয়া সেই ব্যাটসম্যান জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তান দলে।
বড় খবর অবশ্য শাহিন শাহ আফ্রিদির বাদ পড়া। গত মার্চে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ থেকেই টি-টোয়েন্টিতে নতুন পথচলা শুরু করেছে পাকিস্তান। সেই সফরে বাদ পড়েছিলেন বাবর আজম ও মোহাম্মাদ রিজওয়ান। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে ফেরানো হয়নি বাংলাদেশের বিপক্ষেও। সেই ধারাবাহিকতায় এবার জায়গা হারালেন আফ্রিদি।
বাঁহাতি এই পেসারের পাশাপাশি জায়গা পাননি আরেক অভিজ্ঞ পেসার হারিস রউফও।
অবিশ্বাস্যভাবে, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজের স্কোয়াডের ৮ জন জায়গা পাননি এবারের দলে। শাহিন আফ্রিদি ছাড়াও বাদ পড়েছেন ওমাইর ইউসুফ, আব্দুল সামাদ, আব্বাস আফ্রিদি, জাহান্দাদ খান, মোহাম্মাদ আলি, সুফিয়ান মুকিম ও উসমান খান।
সাহিবজাদা ছাড়াও দলে ফিরেছেন ফাহিম আশরাফ, ফাখার জামান, হাসান আলি, হুসাইন তালাত, মোহাম্মাদ ওয়াসিম, নাসিম শাহ ও সাইম আইয়ুব।
সাহিবজাদা সবশেষ পাকিস্তান দলে খেলেছেন গত ডিসেম্বরে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের একটি ম্যাচ খেলে আউট হন তিনি ৫ রানে। এর ঠিক আগে অস্ট্রেলিয়া সফরে তিন ম্যাচে করেছিলেন ৮, ৫ ও ৯। তবে দল থেকে পড়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য ফর্মে আছেন ২৯ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান।
গত মার্চে পাকিস্তানের ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে সাত ইনিংস খেলে তিনি করেন তিনটি সেঞ্চুরি ও দুটি ফিফটি। এর মধ্যে ছিল ৭২ বলে ১৬২ রানের একটি ইনিংসও, টি-টোয়েন্টিতে যা পাকিস্তানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
সেই ফর্ম তিনি বয়ে আনেন পাকিস্তান সুপার লিগেও (পিএসএল)। আসরের দ্বিতীয় ম্যাচেই করেন সেঞ্চুরি। তাতে এক মাসের মধ্যে ৯ ইনিংস খেলে ৪ সেঞ্চুরি হয়ে যায় তার। স্পর্শ করেন এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ডও।
পিএসএলে এরপর আর আট ইনিংস খেলে সেঞ্চুরি করতে পারেননি বটে। তবে আসরে সর্বোচ্চ রান এখনও পর্যন্ত তারই (১৫৪ স্ট্রাইক রেটে ৩৯৪)। দল ঘোষণার আগের ম্যাচে ৪১ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত করেছেন তিনি।
চলতি বছর এখনও পর্যন্ত ১৭ ইনিংস খেলে ৯৯৯ রান তার। সর্বোচ্চ ৬০টি ছক্কাও এসেছে তার ব্যাট থেকেই। বছরের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে হাজার রান করে ফেলবেন তিনি নিশ্চিতভাবেই। দুইয়ে থাকা নিকোলাস পুরানের রান ৭৫৬।
পিএসএলের সর্বোচ্চ রান স্কোরার জাতীয় দলে ডাক পেলেও ১৭ উইকেট নিয়ে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি আব্বাস আফ্রিদি বাদ পড়েছেন। এই আসরেই ৯ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়ে দলে ফিরেছেন অভিজ্ঞ হাসান আলি। দলে ফেরা অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফ পিএসএলে ব্যাট হাতে ততটা ভালো না করলেও উইকেট নিয়েছেন ১৪টি।
দলে ফেরা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ফাখার জামান পিএসএলে ১৫৫ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৩৬৯ রান। পেসার নাসিম শাহ ও ওপেনার সাইম আইয়ুব খুব ভালো ফর্মে না থেকেও ফিরেছেন দলে।
নিউ জিল্যান্ড সফরে এক ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেও বাকি চার ইনিংস মিলিয়ে স্রেফ ১ রান করা হাসান নাওয়াজ ধরে রেখেছেন জায়গা। পিএসএলে সবশেষ তিন ইনিংসে অপরাজিত আছেন তিনি ৬৪, ১০০ ও ৬৭ রানের ইনিংস খেলে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের এই তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের সূচি চূড়ান্ত হয়নি। তবে গোটা সিরিজ হবে লাহোরেই।
সিরিজটি হওয়ার কথা ছিল পাঁচ ম্যাচের। তবে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রভাবে অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের সফরই। শেষ পর্যন্ত দুই দেশের বোর্ডের আলোচনায় সফর চূড়ান্ত হলেও সিরিজ নেমে আসে তিন ম্যাচে।
পাকিস্তান স্কোয়াড: সালমান আলি আগা (অধিনায়ক), শাদাব খান (সহ-অধিনায়ক), আবরার আহমেদ, ফাহিম আশরাফ, ফাখার জামান, হারিস রউফ, হাসান আলি, হাসান নাওয়াজ, হুসাইন তালাত, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ হারিস, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, মুহাম্মাদ ইরফান খান, নাসিম শাহ, সাহিবজাদা ফারহান, সাইম আইয়ুব।