ইংল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে
Published : 22 May 2025, 11:56 PM
দারুণ ব্যাটিং উইকেট। সুযোগটা দুই হাতে কাজে লাগালেন ইংল্যান্ডের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান বেন ডাকেট, জ্যাক ক্রলি ও অলিভার পোপ। সেঞ্চুরি উপহার দিলেন তিন জনই। তাদের নৈপুণ্যে প্রথম দিনেই রানের পাহাড় গড়ল ইংল্যান্ড।
২২ বছর পর ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলতে নেমে প্রথম দিনটা ভুলে যাওয়ার মতো কাটল জিম্বাবুয়ের। ট্রেন্ট ব্রিজে একমাত্র টেস্টের প্রথম দিন ইংলিশরা তুলল ৩ উইকেটে ৪৯৮ রান।
খেলা হয়েছে এ দিন ৮৮ ওভার, স্বাগতিকরা রান তুলেছে ওভারপ্রতি ৫.৬৫ করে। ৯০ ওভার খেলা হলে নিশ্চিতভাবেই পাঁচশ রানের ঠিকানায় পৌঁছে যেত তারা।
টেস্টের প্রথম দিন কোনো দলের পাঁচশ রানের নজির আছে একটিই, ২০২২ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে এই ইংল্যান্ডই পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিল ৫০৬। তারপরই এবারের ৪৯৮।
ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্টের প্রথম দিন সর্বোচ্চ রান অবশ্য এটিই। পেছনে পড়ে গেছে ১৯৩৪ সালে ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ৪৭৫।
২০ চার ও ২ ছক্কায় ১৩৪ বলে ১৪০ রানের ইনিংস খেলেন ডাকেট। তার সঙ্গে দুইশ ছাড়ানো উদ্বোধনী জুটি গড়া ক্রলি ১০ ইনিংস পর পঞ্চাশ ছুঁয়ে ১৭১ বলে করেন ১২৪। তার ইনিংসটি গড়া ১৪ চারে।
১৫৩ বলে ২৪ চার ও ২ ছক্কায় ১৬৯ রানে অপরাজিত আছেন পোপ। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ৮ সেঞ্চুরিই তিনি করলেন ভিন্ন ৮ দলের বিপক্ষে! চারটিতে ছাড়ালেন দেড়শ। এখন দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানি তার সামনে।
৯ দলের বিপক্ষে টেস্ট খেলে শুধু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই এখনও কোনো সেঞ্চুরি তিনি পাননি।
এক ইনিংসে ইংল্যান্ডের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের সবার সেঞ্চুরির চতুর্থ ঘটনা এটি। সবশেষ এই তিনজনই করেছিলেন ২০২২ সালে, রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে।
এতবার এই নজির নেই আর কোনো দলের। তিনবার করে আছে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার।
১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে ২ হাজার ৫৮৪ ম্যাচে সব মিলিয়ে ১৭ বার দেখা গেল এমন কিছু।
নটিংহ্যামে বৃহস্পতিবার শুধু টস ভাগ্যটাই পাশে পায় জিম্বাবুয়ে। বোলিংয়ে রান দেওয়ার ‘সেঞ্চুরি’ করেন তাদের দুজন।
শুরু থেকে ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যান ডাকেট। তার সঙ্গী ক্রলি খেলেন রয়েসয়ে। প্রথম ঘন্টায় ইংল্যান্ড করে ১৪ ওভারে ৬৭ রান। ডাকেট পঞ্চাশে পা রাখেন ৪৭ বলে। ক্রলি ফিফটি পূর্ণ করেন ৭৬ বলে। ২৬ ওভারে ১৩০ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।
আগ্রাসী ব্যাটিং অব্যাহত রেখে ডাকেট সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ঠিক ১০০ বলে। তার পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি এটি, ঘরের মাঠ ট্রেন্ট ব্রিজে প্রথম।
৪২তম ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম দুই বলে চার ও ছক্কা হজমের পরের বলে ডাকেটকে ফিরিয়ে ২৫০ বল স্থায়ী ২৩১ রানের জুটি ভাঙেন ওয়েসলি মাধেভেরে। অফ স্পিনারের বলে কাভারে ধরা পড়েন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
১৯৬৫ সালের পর ঘরের মাঠে টেস্টে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি এটি।
ক্রলি এগিয়ে যান পোপের সঙ্গে জুটি বেঁধে। ৯৩ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যান তিনি। ফিরে এসে ১৪৫ বলে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক।
২০২৩ সালের অ্যাশেজে ম্যানচেস্টারে ১৮৯ রানের পর তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি এটি, আর ক্যারিয়ারের পঞ্চম।
ক্রলিকে এলবিডব্লিউ করে ১৩৭ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি ভাঙেন সিকান্দার রাজা। পোপ ততক্ষণে সেঞ্চুরির দুয়ারে। ১০৯ বলে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পা রাখেন তিনি।
এ দিন ২৮ রানে পৌঁছে একটি অর্জন ধরা দেয় জো রুটের। ইংল্যান্ডের প্রথম ও বিশ্বের পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ১৩ হাজার বা এর বেশি রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।
এরপর অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেননি ইংল্যান্ডের সফলতম টেস্ট ব্যাটসম্যান। পেসার ব্লেসিং মুজারাবানির বাড়তি বাউন্সে পুল করে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি (৪৪ বলে ৩৪)।
পোপ দেড়শ পূর্ণ করেন ১৪২ বলে। দিন শেষে তার সঙ্গে অপরাজিত আছেন হ্যারি ব্রুক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (প্রথম দিন শেষে)
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৯৮ ওভারে ৪৯৮/৩ (ক্রলি ১২৪, ডাকেট ১৪০, পোপ ১৬৯, রুট ৩৪, ব্রুক ৯, এনগারাভা ৯-১-৪২-০, মুজারাবানি ২০-৩-১১১-১, চিভাঙ্গা ১২-০-৮৩-০, নিয়াউচি ১৮-০-১০৩-০, রাজা ২৪-১-৯৩-১, মাধেভেরে ৩-০-৩৪-১, বেনেট ২-০-১৭-০)