Published : 31 May 2025, 08:05 AM
ছয় দিনে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। প্রতিটিতেই প্রথম ইনিংস শেষে স্কোর ২০১ রান। এর প্রথমটিতে রান তাড়া করা দল দারুণ জয় পেলেও, বাকি দুটিতে তেমন সম্ভাবনাও জাগাতে পারল না পরে ব্যাট করা দল। সেই দুই ম্যাচে পরাজিত দলের নাম বাংলাদেশ।
লাহোরের ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে কদিন আগে পিএসএল ফাইনালে ২০২ রান তাড়ায় কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটরসকে শেষ ওভারে হারায় লাহোর কালান্দার্স। একই মাঠে পরের পাঁচ দিনে দুই ম্যাচে পাকিস্তানের সঙ্গে একই লক্ষ্যে ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু লড়াই জমাতেই পারেনি। এক ম্যাচ বাকি থাকতে সিরিজ হেরে যাওয়ায় ব্যাটিংকে বড় দায় দিলেন লিটন কুমার দাস।
প্রথম ম্যাচের মতো শুক্রবার রাতেও ২০১ রান তোলে পাকিস্তান। তবে বাংলাদেশ বড় ধাক্কা খায় ম্যাচের শুরুতেই। মাত্র তিন বল করার পর কুঁচকির টানে মাঠ ছাড়েন শরিফুল ইসলাম। বাকি সময় তাই বাঁহাতি পেসারকে ছাড়া খেলতে হয় সফরকারীদের।
স্বাগতিকদের ভিত অবশ্য ছিল আরও বড় স্কোরের। সাহিবজাদা ফারহান ও মোহাম্মদ হারিসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পর হাসান নাওয়াজও একই গতিতে এগোলে ১৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান করে ফেলে পাকিস্তান। তবে বাকি অংশে তাদের প্রত্যাশামতো রান করতে দেয়নি বাংলাদেশের বোলাররা।
হাসান মাহমুদ, শামীম হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজরা দারুণ বোলিং করলে শেষ ৬ ওভারে মাত্র ৪৬ রান করতে পারে পাকিস্তান। শেষটা ভালো না হলেও, স্বাগতিকদের ২০১ রানই ঢের বেশি প্রমাণিত হয় বাংলাদেশের জন্য। আগের ম্যাচে কিছুটা লড়াই করলেও এদিন ব্যাটিং ধসে মুখ থুবড়ে পড়ে তারা।
তানজিদ হাসানের (১৯ বলে ৩৩) শুরুর ঝড়ে এক পর্যায়ে রান ছিল বিনা উইকেটে ৪৪। সেখান থেকে পথ হারিয়ে রান হয়ে যায় ৭ উইকেটে ৭৭! তানজিম হাসান ৯ নম্বরে নেমে ৩১ বলে ৫০ রান খেলে কিছুটা মান বাঁচান দলের।
লাহোরের ব্যাটিং উইকেটে ২০২ রান তাড়া করে জেতা সম্ভব, আগের ম্যাচেই বলেছিলেন লিটন। পরপর দুবার সেটি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাটসম্যানদেরই বড় দায় দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“আমার মতে, যখন শরিফুল চোটে পড়ল, মোমেন্টাম পুরোপুরি ওদের দিকে চলে গেছে। কারণ আমরা জানি, বোলিংয়ে আমাদের ঘাটতি আছে।”
“তবু আমরা ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এই উইকেটে ২০০ রান... আমি যে কোনো (রান তাড়ার জন্য) ব্যাটিং করতে চাইব। কিন্তু ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা সেটি করতে পারিনি।”
প্রথম ম্যাচেও রান তাড়ায় ভালো শুরু করেন তানজিদ। কিন্তু ৩১ রান করে ড্রেসিং রুমে ফিরে যান তিনি। সেদিন লিটনও ভালো কিছুর আশা জাগিয়ে আউট হয়ে যান ৪৮ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচেও ঝড়ো শুরু করা তানজিদের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের বাকিরা কেউই কিছু করতে পারেননি।
দুই ম্যাচ মিলিয়ে বাংলাদেশের একমাত্র ফিফটি তাই ৯ নম্বরে নামা তানজিম হাসানের। ব্যাটিংয়ে দুর্দশা কাটাতে তাই ওপরের সারির ব্যাটসম্যানদের লম্বা ইনিংস খেলার তাগিদ দিলেন লিটন।
“যে-ই ভালো ব্যাটিং করে, তার উচিত ইনিংস এগিয়ে নেওয়া। তার ১৩-১৪ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হবে। চতুর্থ ওভারের পর আর ভালো ব্যাটিং করিনি। টানা উইকেট পড়েছে।”
পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব পাওয়ার পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন লিটন। এরপর টানা চার ম্যাচে পরাজিত দলের অধিনায়ক তিনি।
চলতি সিরিজেই দলকে জয়ে ফেরানোর আরেকটি সুযোগ পাবেন লিটন। ওই ম্যাচের আগে নিজেদের মানসিকতা ঠিক করতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক।
“আমাদের আরও একটি সুযোগ আছে। এই মুহূর্তে আমাদের একসঙ্গে বসে আলাপ করতে হবে কীভাবে আমরা শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি। কারণ এটি পুরোপুরি মানসিকতার ব্যাপার।”
একই মাঠে রোববার হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াইয়ে নামবে বাংলাদেশ।