পিএসএল
Published : 24 May 2025, 12:19 AM
ব্যাটে-বলে ভুলে যাওয়ার মতো একটি দিন কাটল সাকিব আল হাসানের। ছয় দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার আউট হলেন শূন্য রানে। বল হাতে পেলেন না কোনো উইকেট। তার চেয়ে একটু বেশি খরুচে বোলিং করলেও, তিনটি উইকেট পেলেন রিশাদ হোসেন। বড় জয়ে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ফাইনালে উঠল তাদের দল লাহোর কালান্দার্স।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে শুক্রবার ইসলামাবাদ ইউনাইটেডকে ৯৫ রানে হারিয়েছে লাহোর। ২০২ রানের পুঁজি গড়ে গতবারের চ্যাম্পিয়নদের স্রেফ ১০৭ রানে গুটিয়ে দিয়েছে শাহিন শাহ আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন দলটি।
ইনিংসের চার বল বাকি থাকতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বল ব্যাটে ছোঁয়াতে পারেননি সাকিব। ইংলিশ পেসার টাইমাল মিলসের করা পরের বল আকাশে তুলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।
তার বিদায়ের পর উইকেটে যান রিশাদ। প্রথম বলে চার মারেন তিনি ডিপ মিডউইকেট দিয়ে। ইনিংসের শেষ বলে দ্বিতীয় রানের চেষ্টায় রান আউট হন তিনি।
ব্যাট হাতে ২ বলে ৫ রানের পর বোলিংয়ে ৩ ওভারে ৩৪ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার রিশাদ। সাকিব ৩ ওভারে ২৭ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন।
লাহোরের হয়ে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশের আরেক ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ এ দিনও সুযোগ পাননি একাদশে।
চমৎকার বোলিংয়ে ৩.১ ওভারে একটি মেডেনে স্রেফ ৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন লাহোরের অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদি। আরেক বাঁহাতি পেসার সালমান মির্জার প্রাপ্তি ১৬ রানে ৩টি। ম্যাচ-সেরা অবশ্য তিনিই।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দলকে দুইশ ছাড়ানো সংগ্রহ এনে দিতে বড় অবদান রাখেন মোহাম্মদ নাঈম ও কুসাল পেরেরা। পাকিস্তানি ওপেনার নাঈম ৭ চার ও ২ ছক্কায় ২৫ বলে করেন ৫০ রান। চারে নেমে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৩৫ বলে ৬১ রান করেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান পেরেরা।
বোলিংয়েও লাহোরের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। প্রথম চার ওভারের মধ্যে ইসলামাবাদের টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেয় তারা।
আফ্রিদি প্রথম ওভারে মোহাম্মদ শাহজাদকে ফেরানোর পর নিজের পরপর দুই ওভারে সাহিবজাদা ফারহান ও রাসি ফন ডার ডাসেনকে বিদায় করেন সালমান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে তার শিকার ইমাদ ওসাসিম।
সপ্তম ওভারে বল হাতে পেয়ে একটি চারে ৯ রান দেন সাকিব। পরের ওভারে আক্রমণে আসেন রিশাদ। তার প্রথম বলে চার মারার পর চতুর্থ বল ছক্কায় ওড়ান সালমান আলি আগা। ওভারে আসে ১৪ রান।
সাকিব পরের ওভারে একটি ছক্কায় আবার দেন ৯ রান। রিশাদের পরের ওভারে প্রথম বলে ছক্কা মারেন শাদাব খান। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ওভারের বাকি পাঁচ বলে তরুণ স্পিনার দেন স্রেফ এক রান। এর মাঝেই শর্ট বলে লং-অনে ধরা পড়েন সালমান।
টানা স্পেলে রিশাদের তৃতীয় ওভারে আবার প্রথম বলে ছক্কা মারেন শাদাব। পরের বলেই প্রতিশোধ নেন রিশাদ। আরেকটি ছক্কার চেষ্টায় লং-অফে ক্যাচ দেন শাদাব।
ওই ওভারে চতুর্থ বলে জেমস নিশাম ছক্কা মারলেও, পরের বলেই তাকে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে বিদায় করেন রিশাদ। এই ওভারে ১৩ রান দিয়ে তার শিকার ওই দুটি।
সাকিবের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে রান আউটে কাটা পড়েন নাসিম শাহ। তৃতীয় বল স্লগ সুইপে ছক্কা মারেন মিলস। আগের দুই ওভারের মতো এবারও ঠিক ৯ রান দেন ৩৮ বছর বয়সী অলরাউন্ডার।
গত রোববার নিজের সাবেক দল পেশাওয়ার জালমির বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে প্রায় ছয় মাস পর ক্রিকেটে ফিরে, ব্যাটিংয়ে প্রথম বলে আউট হওয়ার পর দুই ওভারে ১৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন সাকিব। বৃহস্পতিবার এলিমিনেটর ম্যাচে নিজের আরেক সাবেক দল করাচি কিংসের বিপক্ষে এক ওভার বোলিং পেয়ে ৪ রানে একটি উইকেট নেন তিনি। পরে নামতে হয়নি ব্যাটিংয়ে।
পরদিন শেষ দিকে ব্যাটিং পেলেও আসরে এখনও রানের দেখা পেলেন না সাকিব। ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাতে স্থগিত হওয়া আসর পুনরায় শুরুর পর তাকে দলে নেয় লাহোর।
রিশাদ খেলছিলেন আসরের শুরু থেকে। স্থগিত হওয়ার পর ফিরে আসেন দেশে। প্লে-অফের আগে আবার দলটিতে যোগ দেন তিনি। এলিমিনেটর ম্যাচে একাদশে সুযোগ না পেলেও, এবার ফিরে দলের জয়ে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আসরে ৬ ম্যাচে তার উইকেট হলো মোট ১২টি।
একই মাঠে রোববার ফাইনালে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের মুখোমুখি হবে লাহোর।