Published : 26 May 2025, 01:09 AM
টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেন কেসি কার্টি। ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে এবার খেললেন ১৭০ রানের দারুণ ইনিংস। পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে তাকে সঙ্গ দিলেন শেই হোপ ও জাস্টিন গ্রিভস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের গড়া পাহাড়সম স্কোরের ধারে কাছেও যেতে পারল না আয়ারল্যান্ড।
ডাবলিনে রোববার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের পাত্তাই দেয়নি হোপের দল। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে তারা জিতেছে ১৯৭ রানে।
প্রথম ম্যাচ আয়ারল্যান্ড জয় পাওয়ার পর দ্বিতীয়টি ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। তিন ম্যাচের সিরিজ তাই শেষ হলো ১-১ সমতায়।
১৪২ বলে আট ছক্কা ও ১৫ চারে ১৭০ রানের ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের নায়ক কার্টি। ২০১৯ সালে ডাবলিনেই ১৫২ বলে ১৭০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন হোপ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এটাই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ৩৮৫ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়ানডেতে যা তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
সফরকারীদের ইনিংসের পর বৃষ্টি নামলে কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। পরে খেলা শুরু হলে আয়ারল্যান্ড ৪৬ ওভারে পায় ৩৬৩ রানের লক্ষ্য। ২৯.৫ ওভারে ১৬৫ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকদের ইনিংস। ফিল্ডিংয়ের সময় পাওয়া চোটে ব্যাটিংয়ে নামেননি জর্ডান নিল ও জশ লিটল।
বোলিংয়ে শুরুটা দারুণ ছিল আয়ারল্যান্ড ও ব্যারি ম্যাককার্থির। প্রথম ওভারেই মেলে ব্র্যান্ডন কিংয়ের উইকেট, পঞ্চম ওভারে এভিন লুইসের।
কিন্তু শুরুর ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি ম্যাককার্থি, পারেনি আয়ারল্যান্ডও। শেষ ৮ ওভারে ১৩২ রান খরচ করে স্বাগতিকরা। ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানের ঝাপটার বড় অংশ যায় দুই ম্যাককার্থি- ব্যারি ও লিয়ামের ওপর দিয়ে।
আয়ারল্যান্ডের প্রথম বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে রান দেওয়ার সেঞ্চুরি করেন ব্যারি ম্যাককার্থি। ১০০ রানে তিনি নেন ৩ উইকেট। লিয়াম ম্যাককার্থি ৯৩ রানে নেন ২ উইকেট। এই সংস্করণে আইরিশ বোলারদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি রান দিয়েছেন কেবল তিন জন।
তৃতীয় উইকেটে কার্টি ও হোপের ১৩৭ রানের জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে এগিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাবলীল ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির আশা জাগান অধিনায়ক হোপ। ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় ২ ছক্কা ও ৯ চারে ৭৫ বলে খেলা তার ৭৫ রানে ইনিংস।
কার্টির সঙ্গে পঞ্চাশ ছোয়া জুটি গড়ে ফেরেন আমির জ্যাঙ্গু। গ্রিভস ক্রিজে যাওয়ার পর বাড়ে রানের গতি। তিনি ও কার্টির তাণ্ডবে রান আসতে থাকে বানের জলের মতো।
ডাবল সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে ১৭০ রানে থামেন কার্টি। ২৩ বলে তিন ছক্কা ও পাঁচ চারে ৫০ রান করে ফেরেন তিনি। পরের ব্যাটসম্যানরা দলকে নিয়ে যান চারশ রানের কাছে।
রান তাড়ায় কখনও জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। শুরুতেই ফেরেন অ্যান্ডি বালবার্ন। ঝড় তোলার আভাস দিয়ে বেশিদূর যেতে পারেননি পল স্টার্লিং। আইরিশ অধিনায়ক থামেন ১৯ বলে ২৬ রান করে।
এক প্রান্ত আগলে রেখে ৬১ বলে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করনে ক্যাড কারমাইকেল। মিডল অর্ডারে থিতু হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি লর্ক্যান টাকার, জর্জ ডকরেল ও অ্যান্ড ম্যাকব্রিন।
ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন কার্টি। টানা দুই সেঞ্চুরিতে সিরিজ সেরাও তিনিই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ৩৮৫/৭ (কিং ১, লুইস ১৪, কার্টি ১৭০, হোপ ৭৫, জ্যাঙ্গু ২২, গ্রিভস ৫০, ফোর্ড ১২, চেইস ৭, মোটি ৭; ব্যারি ম্যাককার্থি ১০-০-১০০-৩, লিয়াম ম্যাককার্থি ১০-০-৯৩-২, নিল ৫-০-৩৩-০, লিটল ৭-০-৩৪-০, ম্যাকব্রিন ১০-০-৫৬-১, ডকরেল ৪-০-৩৬-১, টেক্টর ৪-০-৩১-০)
আয়ারল্যান্ড: ২৯.৫ ওভারে ১৬৫ (বালবার্নি ৩, স্টার্লিং ২৬, কারমাইকেল ৪৮, টেক্টর ০, টাকার ২৯, ডকরেল ২৩, ম্যাকব্রিন ২৮, ব্যারি ম্যাককার্থি ০, লিয়াম ম্যাককার্থি ০* নিল আহত অনুপস্থিত, লিটল আহত অনুপস্থিত; ফোর্ড ৭-১-৩৮-০, সিলস ৫.৫-২-২৬-৩, মোটি ৪-০-২২-০, জোসেফ ৬-১-৩৭-১, গ্রিভস ৬-০-৩৫-১, চেইস ১-০-১-১)
ফল: ডাকাওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ১৯৭ রানে জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ শেষ ১-১ সমতায়
ম্যান অব দা ম্যাচ: কেসি কার্টি
ম্যান অব দা সিরিজ: কেসি কার্টি