Published : 22 May 2025, 07:10 PM
দিনের শুরু থেকে দারুণ ব্যাটিং করছিলেন অমিত হাসান। তবে দ্বিতীয় নতুন বল নেওয়ার পর আর টিকতে পারলেন না তিনি। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শেষ সঙ্গীকে হারিয়ে একা হয়ে গেলেন নুরুল হাসান সোহান। মাঠে লড়াইটা তখন হয়ে গেল সোহান বনাম নিউ জিল্যান্ড 'এ' দল। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের চার-ছক্কার ঝড় থামাতে বোলার ও উইকেটরক্ষক ছাড়া বাকি সবাই দাঁড়িয়ে গেলেন সীমানায়।
সীমানায় ৯ ফিল্ডার দেখেও চ্যালেঞ্জটা নিলেন সোহান। ছক্কা মারলেন কাভারের ওপর দিয়ে। ফাইন লেগ দিয়ে মারলেন বাউন্ডারি। বড় শটের চেষ্টায় অবশ্য একটু পরই থামতে হলো দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানকে। তার বিদায়ের পরপরই গুটিয়ে গেল দল। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে উইকেট হারালেও দিনের শেষটা কিউইরা করল দারুণ।
মিরপুরে দ্বিতীয় আনঅফিসিয়াল টেস্টে ৪ উইকেটে ২২৫ রানে দ্বিতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ ‘এ’ দল অলআউট হয় ৩৫৭ রানে। ৬৭ রান করে আউট হন অমিত হাসান। তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৪০ বলে ৪৮ করেন সোহান।
দিন শেষে নিউ জিল্যান্ড 'এ' দলের সংগ্রহ ১ উইকেটে ১০৪ রান।
আগের দিনের মতো এ দিনও বাগড়া দিয়েছে প্রকৃতি। বৃষ্টিতে ভেসে যায় প্রথম সেশনের প্রায় পুরোটা। বৃহস্পতিবার সব মিলিয়ে খেলা হয় ৬১.২ ওভার।
বৃষ্টিস্নাত প্রথম সেশনে খেলা হওয়া ৩.৩ ওভারে এক রানও নেননি অমিত ও মাহিদুল ইসলাম। লম্বা বিরতির পর খেলা শুরু হলে দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুজন।
দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টার পর বোলিংয়ে ফেরেন ডিন ফক্সক্রফট। এই অফ স্পিনারের বলে লং অন দিয়ে ছক্কা মারেন মাহিদুল। পরের ওভারে বাঁহাতি স্পিনার জেডন লেনক্সের বলও ছক্কায় ওড়ান তিনি।
ফক্সক্রফটের পরের ওভারে চার ও ছক্কা মেরে জুটির পঞ্চাশ পূর্ণ করেন অমিত। সেই ওভারেই অতি আগ্রাসী হওয়ার মাশুল দিতে হয় মাহিদুলকে। স্লগ করে ক্যাচ দেন ২৯ রান করা ব্যাটসম্যান।
এরপর সোহানের সঙ্গে জুটি বাধেন অমিত। ৯৬ বলে ফিফটি করেন তরুণ ব্যাটসম্যান।
সফরকারীরা দ্বিতীয় নতুন বল নেওয়ার পর প্রথম দুই ওভারে দুটি করে চার মারেন অমিত ও সোহান।
তবে নতুন বলের সুবিধা কাজে লাগাতে ভুল করেননি বেন লিস্টার। ভেতরে ঢোকানো দারুণ ডেলিভারিতে অমিতকে এলবিডব্লিউ করেন নিউ জিল্যান্ডের হয়ে ১৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা পেসার।
আগের ম্যাচে হতাশ করা অমিত এবার সম্ভাবনা জাগিয়েও ইনিংস বড় করতে পারলেন না। ১১০ বলের ইনিংসে ৮ চারের সঙ্গে ১টি ছক্কা মারেন ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের ফোয়ারা ছোটানো ব্যাটসম্যান।
অমিত ফেরার পরের বলে নাসুম কট বিহাইন্ড হয়ে গেলে চাপ বাড়ে সোহানের ওপর। তবে পরের ওভারে জ্যাক ফোকসের বলে স্লগ করে পরপর দুটি ছক্কা মেরে উল্টো কিউইদের চাপে ফেলে দেন স্বাগতিক অধিনায়ক।
একদিনের ম্যাচের সিরিজে ও প্রথম আনঅফিসিয়াল টেস্টে সোহানের বিধ্বংসী রূপ দেখেছেন কিউইরা। তার জন্য এবার তাই শুরু হয় ৯ ফিল্ডার সীমানায় করে বোলিং। এর মধ্যেও দ্রুত রান বাড়ান তিনি।
তবে জেডন লেনক্সের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানা পার করতে পারেননি অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। দলকে সাড়ে তিনশ পার করিয়ে আউট হন তিনি। ওই ওভারেই খালেদ আহমেদের বিদায়ে শেষ হয় দলের ইনিংস।
শেষ সেশনে বোলিংয়ে নেমে সপ্তম ওভারে সাফল্য পায় বাংলাদেশ। অফ স্টামপ ঘেঁষা দারুণ ডেলিভারিতে রিস মারিয়ুকে ফেরান খালেদ। ২৪ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর দিনের বাকি অংশে আর আনন্দের উপলক্ষ্য পায়নি বাংলাদেশ।
হাসান মুরাদ, নাঈম হাসান ও এই ম্যাচ দিয়ে একাদশে সুযোগ পাওয়া নাসুম আহমেদ তেমন কোনো পরীক্ষাই নিতে পারেননি কার্টিস হিফি ও জো কার্টারের। সাবলীল ব্যাটিংয়ে অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৮০ রান যোগ করে দিন পার করেন তারা।
কার্টার ৬৬ বলে ৪৮ ও হিফি ৮৯ বলে ৪১ রানে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ 'এ' ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২২৫/৪) ৮৯.৫ ওভারে ৩৫৭ (অমিত ৬৭, মাহিদুল ২৪, সোহান ৪৮, নাসুম ০, নাঈম ০, মুরাদ ২*, খালেদ ২; ফোকস ২৩-৭-৭৮-২, লিস্টার ১৩-১-৪৩-৩, ফক্সক্রফট ১৩-০-৮৭-১, লেনক্স ২৭.৫-৮-৯৬-৩, ফিলিপস ৬-০-২৭-০, বয়েল ৭-১-২১-১)
নিউ জিল্যান্ড 'এ' ১ম ইনিংস: ২৯ ওভারে ১০৪/১ (মারিয়ু ১৪, হিফি ৪১*, কার্টার ৪৮*, খালেদ ৫-০-১৯-১, নাঈম ৭-১-১৯-০, নাসুম ৯-২-২৯-০, মুরাদ ৮-১-৩৬-০)