Published : 24 May 2025, 01:44 PM
রান-সেঞ্চুরির খতিয়ান বলবে, গৌতাম গাম্ভিরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার খুব সমৃদ্ধ নয়। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে কয়েকবার টস করলেও কখনও হতে পারেননি ভারতের নিয়মিত অধিনায়ক। তবে সেসবে কোনো আক্ষেপও নেই তার। ভারতের কোচ ও সাবেক এই ব্যাটসম্যানের মতে, অনেক রান বা অনেক ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বড় টুর্নামেন্ট জেতা, যেখানে তিনি সফল।
গাম্ভির এক সময় আইসিসি টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ব্যাটসম্যান ছিলেন। ক্যারিয়ারের পঞ্চম টেস্টে সেঞ্চুরি করার পর তার সেরা সময় আসে ২০০৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০১০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। সেই সময়টায় এক পর্যায়ে ১০ টেস্টের মধ্যে ৮ সেঞ্চুরি করেন তিনি।
২৮ টেস্টেই তার তখন ৯টি সেঞ্চুরি!
তবে এরপর ৩০ টেস্ট খেলেও আর সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে সেঞ্চুরির পর এই সংস্করণে আর কোনো শতরানের স্বাদ পাননি।
৫৮ টেস্টে ৯ সেঞ্চুরিতে ৪ হাজার ১৫৪ রান নিয়ে শেষ হয় তার টেস্ট ক্যারিয়ার। ওই বাংলাদেশ সফর শেষে তার ব্যাটিং গড় ছিল ৫৭.৫০। ক্যারিয়ার শেষে তা কমে হয় ৪১.৯৫।
ওয়ানডেতে ১৪৭ ম্যাচ খেলে ১১ সেঞ্চুরি ও ৩৪ ফিফটিতে ৫ হাজার ২৩৮ রান করেন তিনি ৩৯.৬৮ গড়ে। টি-টোয়েন্টিতে ৩৭ ম্যাচে ২৭.৪১ গড়ে তার রান ৯৩২।
মূল অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে ছয়টি ওয়ানডেতে ভারতকে নেতৃত্ব দেন তিনি। এবার সিএনএন-নিউজ ১৮ চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, আরও বেশি নেতৃত্ব দিতে না পারায় আক্ষেপ আছে কি না। সেটি উড়িয়ে দিয়ে তিনি বললেন তার বড় দুই প্রাপ্তি কথা।
“আমি কিছু নিয়েই আক্ষেপ করি না। আমার বাড়িতে দুটি বিশ্বকাপ মেডেল আছে। ভারতে কয়জনের এটা আছে? খুবই কম… মাত্র কয়েকজনের দুটি বিশ্বকাপ মেডেল আছে।”
“হ্যাঁ, নেতিবাচক দিক থেকে ক্যারিয়ারে ফিরে তাকালে বলা যায়, ১০০ টেস্ট খেলতে পারতাম… যদি আরও বেশি অধিনায়কত্ব করতে পারতাম…! আকাঙ্ক্ষা ও ইচ্ছার তো কোনো শেষ নেই।”
ভারতের ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের অংশ ছিলেন গাম্ভির। দুটি আসরেই ফাইনালে তিনি ছিলেন ব্যাট হাতে উজ্জ্বল। গাম্ভিরের মতে, ১০ হাজার রান করার চেয়ে বড় ম্যাচে রান করা বেশি জরুরি।
“আমি অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাইনি, একটি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাইনি (২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ)। প্রথম যে বিশ্বকাপ খেলেছি, সেটিই জিতেছি (২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ)। ৫০ ওভারের ক্রিকেটেও নিজের প্রথম বিশ্বকাপই জিতেছি। ফাইনালগুলোতে রান করেছি। কজন সেটা পেরেছে?”
“১০ হাজার রান খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। আসল ব্যাপার হলো, কে কয়টা বড় টুর্নামেন্ট জিতেছে, বাড়িতে কতটা বিশ্বকাপ মেডেল আছে।”
দুটি বিশ্বকাপ ফাইনাল জয়েই তিনি বড় অবদান রাখেন দলের সর্বোচ্চ রান করে। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে তিনি খেলেন ৫৪ বলে ৭৫ রানের ইনিংস। ২০১১ বিশ্বকাপে শুরুর ধাক্কা সামলে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নেন তিনি ৯৭ রান করে।
ভারতের কোচ হিসেবে গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি জিতেছেন আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।