Published : 05 Jul 2025, 08:30 PM
টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারের ব্যর্থতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও চলমান। এই অবস্থায় উদ্বিগ্ন মিচেল জনসন। দেশের মাঠে অ্যাশেজ সিরিজের আগে ব্যাটিং অর্ডারে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা উচিত বলে মনে করেন দেশটির সাবেক এই ফাস্ট বোলার।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিডনি টেস্ট দিয়ে ডেভিড ওয়ার্নারের অবসরের পর থেকে উসমান খাওয়াজার ওপেনিং সঙ্গী হিসেবে থিতু হতে পারেননি কেউ। স্টিভেন স্মিথ, মার্নাস লানবুশেনকে ওপেনিংয়ে তুলে এনেও লাভ হয়নি।
গত মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল দিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবার দলের ইনিংস শুরুর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে একাদশ থেকেই বাদ পড়ে গেছেন লাবুশেন। দীর্ঘ সময় দলের তিন নম্বরে ভরসা হয়ে থাকা এই ব্যাটসম্যান সাদা পোশাকে ছন্দে নেই অনেক দিন ধরে।
লর্ডসের ফাইনাল দিয়ে প্রথমবার তিন নম্বরে সুযোগ দেওয়া হয় ক্যামেরন গ্রিনকে। সেখানে দুই ইনিংস মিলিয়ে তিনি খেলতে পারেন মোটে পাঁচ বল। চলতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও বারবাডোজে প্রথম টেস্টে ব্যর্থ হন তিনি। ওই চার ইনিংসে তার রান ৪, ০, ৩ ও ১৫। গ্রেনেডায় দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে ২৬ রানে আউট হওয়ার পর দ্বিতীয় দিন শেষ করেন তিনি ৬ রানে অপরাজিত থেকে।
গত বছর ভারতের বিপক্ষে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির প্রথম তিন টেস্টে ন্যাথান ম্যাকসুয়েনির ব্যর্থতার পর শেষ দুই টেস্টে খাওয়াজার উদ্বোধনী সঙ্গী হিসেবে দেখা যায় স্যাম কনস্টাসকে। মেলবোর্নে অভিষেকে ইনিংসে ফিফটি করার পথে দুঃসাহসী কিছু শট খেলে ক্রিকেট বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দেন তিনি। ওই ইনিংসের পর যদিও সিরিজে তিনটি ইনিংস খেলে আর বড় কিছু তিনি করতে পারেননি।
পরে শ্রীলঙ্কা সফরে ও টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে বাইরে থাকার পর ক্যারিবিয়ান সফর দিয়ে ফিরলেও ভালো কিছু এখনও তিনি করতে পারেননি। প্রথম দুই টেস্টের চার ইনিংসে তিনি দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল একবার। অভিষেক ইনিংসে ৬০ রানের পর থেকে ১৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের সাত ইনিংসে রান যথাক্রমে ৮, ২৩, ২২, ৩, ৫, ২৫ ও ০।
শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরির পর থেকে খাওয়াজাও আর বড় ইনিংসের দেখা পাননি। লর্ডসের ফাইনালে দুই ইনিংসে তিনি আউট হন শূন্য ও ৬ রানে। ক্যারিবিয়ানে প্রথম টেস্টে করেন ৪৭ ও ১৫, দ্বিতীয় টেস্টে ১৬ ও ২।
পাঁচ টেস্টের অ্যাশেজ সিরিজ শুরু হবে আগামী নভেম্বরে। ২০১০-১১ মৌসুমের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের খোঁজে আছে ইংল্যান্ড।
ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ান-এ শনিবার নিজের লেখা কলামে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন জনসন।
“এখানে এসে অস্ট্রেলিয়াকে তাদের কন্ডিশনে হারানো যে কোনো দলের জন্যই কঠিন। তবে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ও বাউন্সি উইকেটে ইনিংস শুরু করা সব ব্যাটসম্যানের জন্যই কঠিন হতে পারে। অস্ট্রেলিয়ান টপ অর্ডারকে কোনো কন্ডিশনের জন্যই প্রস্তুত মনে হচ্ছে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ফেরার পর থেকে ৩, ৫, ২৫ ও শূন্য রান করা টিনএজার ওপেনার স্যাম কনস্টাস অফ স্টাম্পের বাইরে নড়বড়ে। নতুন তিন নম্বর ক্যাম গ্রিনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।”
প্রথম শ্রেণির প্রতিযোগিতা শেফিল্ড শিল্ড ও অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশনে ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যানদেরই অ্যাশেজ সিরিজে খেলার সুযোগ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন জনসন।
“আমি নিজেই আসল প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি, অ্যাশেজ সিরিজের আগে কি আমি শীর্ষ চার জনকে পরিবর্তন করতাম? হ্যাঁ। দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দের যদি (শেফিল্ড) শিল্ড পর্যায়ে অভিজ্ঞতা থাকে এবং নিজেদের খেলা নিয়ে ভালো ধারণা থাকে, তাহলে কেন তারা পরিবর্তন করতে পারবে না, আমি বুঝতে পারছি না। সত্যি বলতে, আমি হলে কয়েক বছর আগেই পরিবর্তন আনতে শুরু করতাম, এমন খেলোয়াড়দের দলে আনতাম যারা পারফর্ম করতে ও প্রজন্মের বড় পরিবর্তনকে মসৃণ করতে সাহায্য করতে পারে।”
“আপাতত দুই ওপেনার কনস্টাস ও উসমান খাওয়াজা যদি তাদের জুটি ধরে রাখতে চায়, তাহলে (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে) তৃতীয় টেস্টে তাদের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়া প্রয়োজন। গ্রিন যদি তিন নম্বরে কিছু রানও করে, তবু আমার মনে হয়, তার জন্য সেরা পজিশন এটা নয়।”