Published : 09 Mar 2025, 08:37 AM
ভারতের বাড়তি সুবিধা নিয়ে যখন আলোচন-সমালোচনা তুঙ্গে, সৌরভ গাঙ্গুলি বইয়ে দিলেন উল্টো হাওয়া। সাবেক ভারতীয় অধিনায়কের মতে, পাকিস্তান সফরে গিয়ে ব্যাটিং স্বর্গ উইকেটগুলোয় খেলতে পারলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা খুশিই থাকত। কিন্তু বাস্তবতার কারণেই দুবাইয়ে খেলতে হচ্ছে তাদের, যেখানে চ্যালেঞ্জ বরং বেশি। ভারতীয় দল পাকিস্তানে না যাওয়াতেও ভুল কিছু দেখছেন না ভারতের সাবেক বোর্ড প্রধান।
পাকিস্তান সফরে না গিয়ে ভারত দুবাইকে বেছে নিয়েছে, আসরের একমাত্র বদল হিসেবে একই শহরে সব ম্যাচ খেলছে তারা নিজেদের পছন্দের ভেন্যুতে, এসব নিয়ে নানা চর্চা চলছে টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই। পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি-তর্কও চলছে। এবার সৌরভ যেসব বললেন, এসব বলেননি অন্য কেউ।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতর প্রথম দুই আসরের অধিনায়ক সাবেক এই ব্যাটসম্যান ট্রেইলব্লেজার্স স্পোর্টস কনক্লেভকে বললেন, ভারত বাধ্য হচ্ছে দুবাইয়ে খেলতে।
“কিসের পছন্দ? ভারত তো নিজেদের ইচ্ছায় সব ম্যাচ দুবাইয়ে খেলতে রাজি হয়নি! তারা পাকিস্তানে যেতে পারছে না, ভারতের সরকার অনুমতি দিচ্ছে না। এজন্য খেলতে হচ্ছে (দুবাইয়ে)। এটা তো ভারতীয় দলের হাতে নেই। ব্যাপারটি তো এমনই।”
গত দুটি বৈশ্বিক আসরে ভারত প্রচুর ভ্রমণ করতে হয়েছে এবং তার পরও তারা একটি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, আরেকটিতে রানার্স আপ, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন সৌরভ। ২২ বছর আগের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের পদক্ষেপও মনে করিয়ে দিলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের প্রথম শিরোপাজয়ী নেতা।
“ভারত দেশের মাঠের বিশ্বকাপে ৯টি ভিন্ন শহরে খেলেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে ৮টি (আদতে ৫টি) ভিন্ন শহরে খেলে। ভারত দুবাইয়ে খেলার কোনো ব্যাপার এখানে নেই।”
“আমার মনে আছে, ২০০৩ বিশ্বকাপে অধিনায়ক ছিলাম আমি, তখন জিম্বাবুয়েতে সফরে যায়নি ইংল্যান্ড। তারা জিম্বাবুয়েকে পয়েন্ট দিয়ে দিয়েছে, কারণ সেখানে গিয়ে খেলবে না। কাজেই সব দেশেরই নিজস্ব ধরন আছে সবকিছুর এবং আমার মনে হয়, পাকিস্তান সফরে না যাওয়ায় ভারতীয় দল ও সরকারের কোনো ভুল এখানে নেই।”
পাকিস্তানের এই আসর আয়োজনের পেছনে নিজের ভূমিকারও কথাও তুলে ধরলেন ৫২ বছর বয়সী সাবেক ক্রিকেটার।
“আমার মনে আছে, আমি যখন বিসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলাম ২০২০ সালে, তখন আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক করেছিলাম পাকিস্তানকে। ২০৩১ পর্যন্ত সব বৈশ্বিক আসরের ভেন্যু ঠিক করার গ্রুপের অংশ ছিলাম আমি। ভারতে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২৯ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও ২০৩১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে। এটা তো ভারত নিজে করেনি। তাদের পাকিস্তানে যাওয়ার উপায় নেই।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩৮ সেঞ্চুরিতে সাড়ে ১৮ হাজার রান করা সাবেক ব্যাটসম্যানের মতো, পাকিস্তানে যেতে না পারায় বরং ভারতীয় ক্রিকেটাররাই বঞ্চিত হয়েছে।
“আমি বলতে পারি, ভিরাট কোহলি, রোহিত শার্মা, কেএল রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ারের মতো ব্যাটসম্যানদের বরং খারাপ লাগছে লাহোর ও করাচির মতো উইকেটে খেলতে না পেরে, অন্য দলগুলি যেখানে ৩৫০ রান তুলছে। ইংল্যান্ড সাড়ে তিনশ করেছে, অস্ট্রেলিয়া তাড়া করে জিতেছে। নিউ জিল্যান্ড ৩৬০ করেছে। দুবাইয়ে সেখানে ২৪০-২৫০ রান হচ্ছে।”
“কোহলি, রোহিত, শ্রেয়াস, শুবমান গিলরা ভাবছে, ‘দুবাইয়ে অমন উইকেট কেন পেলাম না আমরা! পেলে তো তিন-চারটি সেঞ্চুরি হয়ে যেত। পাকিস্তানের যেতে না পেরে বরং ভারতই সুযোগ হারাচ্ছে নিষ্প্রাণ উইকেটে খেলার।”